‘খালেদা জিয়া জনসভায় যাওয়া-না যাওয়া অবাস্তব ও অলিক চিন্তা’

‘খালেদা জিয়া জনসভায় যাওয়া-না যাওয়া অবাস্তব ও অলিক চিন্তা’
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন হাছান মাহমুদ। ছবি: স্টার

১০ ডিসেম্বর বিএনপির জনসভায় খালেদা জিয়ার যাওয়া না যাওয়ার আলোচনাকে অবাস্তব ও অলিক চিন্তা বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

আজ শুক্রবার দুপুরে চট্টগ্রামের এতিহ্যবাহী সরকারি হাজী মোহাম্মদ মহসিন কলেজের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

চট্টগ্রামের নেভি কনভেনশন হলে রিইউনিয়ন ফেস্টের আয়োজন করে মহসিন কলেজ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন। 

অনুষ্ঠানে হাছান মাহমুদ বলেন, 'বেগম খালেদা জিয়া দণ্ড ও সাজাপ্রাপ্ত আসামি, তিনি আদালত কর্তৃক কোনো জামিন পাননি। বঙ্গবন্ধু কন্যার বদান্যতায় তিনি কারাগারের বাইরে আছেন।' 

'খালেদা জিয়া নিজের জন্মের তারিখ বদলে দিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে যেদিন হত্যা করা হয় সেদিন তিনি জন্মদিনের কেক কাটেন। এরপরও প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার বদান্যতায় তিনি কারাগারের বাইরে ঘরের মধ্যে আছেন। এখন যদি এরকম চিন্তা ওরা করে থাকে তাহলে সরকার তাকে কারাগারে পাঠাতে বাধ্য হবে।'

এরপর ঢাকায় বিএনপির জনসভায় খালেদা জিয়া অংশগ্রহণ করবেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। 

বিএনপি সোহরাওয়ার্দী উদ্যান বাদ দিয়ে নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে চাচ্ছেন কেন এমন প্রশ্নে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, 'সোহরাওয়ার্দী উদ্যান কেন তাদের পছন্দ নয় এটি একটা বিরাট প্রশ্ন? দুটি কারণে তারা সেখানে যেতে চায় না, প্রথমত নয়া পল্টনের সামনে বড়জোড় ৫০ হাজার মানুষ ধরে। অর্থাৎ তাদের জনসভায় যে ৫০ হাজারের বেশি মানুষ হবে না এটি তারা নিশ্চিত হয়েছেন। এজন্য তারা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যেতে চাচ্ছেন না।'

তিনি বলেন, 'দ্বিতীয় কারণটি হচ্ছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধ শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন, কার্যত স্বাধীনতাই ঘোষণা দিয়েছিলেন এবং সেখানেই পাকিস্তানি সেনাবাহিনী আত্মসমর্পণ করেছিল। বিএনপি তো পাকিন্তানের দোসর, তাদের মহাসচিব বলেছেন পাকিস্তানই ভালো ছিল। সুতরাং যে ময়দানে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন, পাকিস্তানিরা আত্মসমর্পণ করেছিল সেই ময়দান তাদের পছন্দ নয়। এই দুটি কারণে তারা সেখানে যেতে চান না। কিন্তু বড় জনসভার জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যানই হচ্ছে উত্তম। এবং তারা সোহরাওয়ার্দী উদ্যান চেয়েছিল, তাদের চাওয়া অনুযায়ী সোহরাওয়ার্দী উদ্যান তাদেরকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।'

বিএনপি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, 'বিএনপিতো বিশৃঙ্খলাই করতে চায়। বিশৃঙ্খলা করতে চাওয়ার কারণেই তারা নয়াপল্টনের সামনে সমাবেশ করতে চায়। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার সুযোগ তাদের দেওয়া হবে না। জনগণই তাদের প্রতিহত করবে।'

চট্টগ্রামে প্রধানমন্ত্রীর জনসভার প্রস্তুতি বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, 'আগামী ৪ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভা উপলক্ষে পুরো চট্টগ্রামে সাজ সাজ রব পড়ে গেছে। জনগণের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দিপনা তৈরি হয়েছে। এটা স্মরণকালের বৃহত্তম এবং লাখ লাখ মানুষের সমাবেশ হবে ইন্শাআল্লাহ। কারণ ইতোমধ্যে সাধারণ মানুষের মাঝে যেভাবে উৎসাহ উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে, এতে আমরা নিশ্চিত যে এটি স্বরণকালের একটি বৃহত্তম জনসভা হবে।'

এরআগে সরকারি মহসিন কলেজ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েনের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, 'একটি কলেজ, ইউনিভার্সিটি ও বিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুধুমাত্র পাঠদানের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। সেখানে একজন ছাত্রের বহুমুখী প্রতিভার বিকাশ ঘটে। অনেক কিছু শেখার জায়গা হচ্ছে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় ও স্কুল।'

তিনি বলেন, 'আমার স্কুলই আমার জীবনের ভীত রচনা করে দিয়েছে। স্কুলের মহান শিক্ষকদের সান্নিধ্য যদি না পেতাম তাহলে আমি কখনো আজকের এই জায়গায় দাঁড়াতে পারতাম না। একইভাবে কলেজেরও কিছু শিক্ষকের কথা মনে পড়ে, বিশেষ করে সুমঙ্গল মুৎসুদ্দি স্যারের কথা। কারণ ওনার কাছে আমি প্রাইভেটও পড়তাম। আরও অনেক শিক্ষক ছিলেন, যাদের সান্নিধ্য আমাদের জীবন গড়ার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রেখেছে।'

সরকারি মহসিন কলেজের সাবেক ছাত্র ড. হাছান মাহমুদ স্মৃতি রোমন্থন করে বলেন, 'মহসিন কলেজ চট্টগ্রামের সেরা কলেজের মধ্যে একটি। ভবিষ্যতে অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন এমন কিছু কর্মসূচি রাখবেন যেগুলো সমাজের তৃতীয় নয়ন খুলে দেবে। সমাজ হিতৈষী কাজ করার ক্ষেত্রে সুযোগ তৈরি করবে। বিশেষ করে বর্তমান শিক্ষার্থীদের জীবন গড়ার ক্ষেত্রেও অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন ভূমিকা রাখবে। মহসিন কলেজের প্রচুর অ্যালামনাই সমাজে প্রতিষ্ঠিত এবং বিত্তবানও আছেন।'

চট্টগ্রাম সরকারি মহসিন কলেজ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলমের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন একুশে পদকপ্রাপ্ত দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক। অনুষ্ঠানে অ্যালামনাই সদস্যরা স্মৃতিরণ করে বক্তব্য রাখেন।

Comments

The Daily Star  | English

Stay alert against conspiracies: Fakhrul

BNP Secretary General Mirza Fakhrul Islam Alamgir today urged all to stay alert, warning that conspiracies are underway to once again plunge Bangladesh into new dangers

31m ago