মৌলভীবাজারে ঢাকামুখী গাড়ি ছাড়ছে কম যাত্রী নিয়ে

ঢাকায় বিএনপির সমাবেশের আগে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় জনমনে আশঙ্কা তৈরি হওয়ায় ঢাকামুখী বাসে যাত্রীসংকট বলে জানিয়েছেন মৌলভীবাজারের পরিবহন সংশ্লিষ্টরা।
মৌলভীবাজারে ঢাকামুখী গাড়ি ছাড়ছে কম যাত্রী নিয়ে
শুক্রবার বিকেলে শ্রীমঙ্গল সড়কের বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে দেখা গেছে, বেশকিছু বাস দাঁড়িয়ে আছে। তবে হাতে গোনা কয়েকজন যাত্রী আর পরিবহন সংশ্লিষ্ট কয়েকজন বিচ্ছিন্নভাবে বাসস্ট্যান্ডে ঘোরাঘুরি করছেন। ছবি: মিন্টু দেশোয়ারা/স্টার

ঢাকায় বিএনপির সমাবেশের আগে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় জনমনে আশঙ্কা তৈরি হওয়ায় ঢাকামুখী বাসে যাত্রীসংকট বলে জানিয়েছেন মৌলভীবাজারের পরিবহন সংশ্লিষ্টরা।

আজ শুক্রবার বিকেলে সরেজমিনে শ্রীমঙ্গল সড়কে বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে দেখা গেছে, বেশকিছু বাস দাঁড়িয়ে আছে। তবে হাতে গোনা কয়েকজন যাত্রী আর পরিবহন সংশ্লিষ্ট কয়েকজন বিচ্ছিন্নভাবে বাসস্ট্যান্ডে ঘোরাঘুরি করছেন।

আসনসংখ্যার চেয়ে অনেক কম যাত্রী নিয়ে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে দেরি করে ছেড়ে যাচ্ছে ঢাকামুখি বাস।

অন্যদিকে আগে থেকে কেটে রাখা টিকেটও ফেরত দিতে এসেছেন অনেকে। মৌলভীবাজার থেকে ঢাকা যাওয়ার উদ্দেশে টিকেট কেটেছিলেন সাদ্দাম মিয়া। আজ রাতে ঢাকায় ‍যাওয়ার কথা থাকলেও আগে কেটে রাখা টিকেট বিকেলে ফেরত দিয়ে গেছেন তিনি।

জানতে চাইলে বলেন, আমাকে বাড়ির কেউ যেতে দিচ্ছেন না। তারা সবাই ঢাকার ঘটনাগুলো নিয়ে খুবই আতঙ্কিত। তাই টিকেট ফেরত দিতে এসেছি।'

আরেকযাত্রী বিমান ধর বলেন, 'ঢাকায় বিএনপির গণসমাবেশের দিন পরিস্থিতি কেমন হবে এ নিয়ে সবাই আতঙ্কিত। এ কারণে এখন অনেকে ঢাকা যেতে চাচ্ছেন না।'

কাউন্টারে বাস ছাড়ার অপেক্ষায় ছিলেন ঢাকাগামী যাত্রী হুমায়ূন কবীর। তিনি বলেন, 'ঢাকার বিষয়টি আমি জানি। কিন্তু কী করবো! রোগী আছে, তাই যেতেই হবে। না হলে এই বিপদে কে আর যায়!'

ঢাকা বাসস্ট্যান্ডের পরিবহন সংস্থাগুলোর সূত্রে জানা গেছে, গত দুই দিনে ঢাকাগামী যাত্রীসংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। গতকাল সাপ্তাহিক ছুটির আগের দিন হলেও বাসে তেমন যাত্রী ছিল না।

অন্য সময় প্রায় সব বাসেই বৃহস্পতিবার অন্তত ৫-৭টি টিকিটের আগাম বুকিং থাকে। তবে গত ২ দিনে কোনো বুকিং নেই। গতকাল রাতে ১ জন যাত্রী নিয়ে বাস ছেড়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। তবে ঢাকার বাইরের অন্য জেলার বাস চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। ওই বাসগুলোতে অন্যদিনের মতোই যাত্রী হচ্ছে বলে জানান গেছে। যাত্রীরা দরদাম করে ভৈরব, ময়মনসিংহসহ বিভিন্ন জেলার বাসে উঠছেন।

হানিফ পরিবহনের কাউন্টারের দায়িত্বে থাকা মো. রাসেল বলেন, 'ঢাকায় গাড়ি যাত্রী হলে যাচ্ছে। গতকাল থেকে আজকে যাত্রী কম। আজ প্রত্যেকটি গাড়ি ছেড়েছে কম যাত্রী নিয়ে।'

শাহ পরান পরিবহনের কর্মী মো. টুটুল বলেন, 'প্রতিদিন ৪-৫টা অ্যাডভান্স (অগ্রিম টিকিটের বুকিং) থাকে। আজকে একটাও অ্যাডভান্স নাই। গতকাল থেকেই যাত্রী নাই। যাত্রীর জন্য বসে আছি। আজ কটা গাড়ি যাবে, এখনো জানি না।'

শ্যামলী পরিবহনের কাউন্টারের ব্যবস্থাপক সুহেল আহমদ বলেন, 'মানুষের ভেতর আতঙ্ক। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অনেক যাত্রী কমে গেছে। অতি জরুরি ছাড়া কেউ যাচ্ছে না। ২-৩ দিন ধরেই এই অবস্থা শুরু হয়েছে।'

শনিবার ঢাকায় বিএনপির সমাবেশ ঘিরে ঢাকার সবগুলো প্রবেশপথে চেকপোস্ট বসিয়েছে পুলিশ। দুরপাল্লার বাসগুলোতে তল্লাশি চলছে। এছাড়া  মুন্সিগঞ্জ, গাজীপুর ও মানিকগঞ্জেও পুলিশের চেকপোস্ট ও তল্লাশি চলছে।

Comments