২ আসন ছেড়ে দিয়ে জোট পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টায় আ. লীগ

আওয়ামী লীগের প্রার্থী

সম্প্রতি শূন্য হওয়া জাতীয় সংসদের আসনগুলোর মধ্যে ২টি জোট সদস্যদের জন্য ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। ২০২৪ সালে অনুষ্ঠেয় দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে জোটের শরীকদের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করার লক্ষ্যেই দলটির এমন উদ্যোগ।

অপরদিকে, প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টিকে সুবিধা দিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উপনির্বাচনে কোনো প্রার্থীকে নৌকা প্রতীক না দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে।

গত রোববার আওয়ামী লীগের সংসদীয় বোর্ড ঠাকুরগাঁও-৩ ও বগুড়া-৪ আসন যথাক্রমে ওয়ার্কার্স পার্টি ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলকে (জাসদ-ইনু) ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

২০০৮ সালের সর্বশেষ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ঠাকুরগাঁও-৩ আসন ওয়ার্কার্স পার্টির জন্য, বগুড়া-৪ আসন জাসদ-ইনুর জন্য এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসন জাতীয় পার্টির জন্য ছেড়ে দিলেও বিএনপি ওই আসনগুলোতে জিতেছিল।

সম্প্রতি বিএনপির সংসদ সদস্যদের পদত্যাগের পর শূন্য থাকা ৬টি আসনের মধ্যে ৩টিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আওয়ামী লীগ। এই ৬ আসনে নির্বাচন হবে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি।

গত ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার পরের দিন বিএনপির ৭ জন সংসদ সদস্য জাতীয় সংসদের স্পিকারের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন। এই ৭ সংসদ সদস্যের মধ্যে একজন সংরক্ষিত নারী আসনের। তাদের পদত্যাগের পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২, ঠাকুরগাঁও-৩, বগুড়া-৪, বগুড়া-৬, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসন শূন্য ঘোষণা করা হয়।

ওয়ার্কার্স পার্টি ও জাসদ-ইনু ওই ২ আসন ছেড়ে দিতে ক্ষমতাসীন দলকে চিঠি দেওয়ার পর আওয়ামী লীগ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের রাজনৈতিক শক্তিকে সঙ্গে নিয়ে তাদের জোট সম্প্রসারণের চেষ্টা করছে। এরই অংশ হিসেবে দলটি তাদের জোট ও নির্বাচনী অংশীদারদের সন্তুষ্ট করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

ক্ষমতাসীন দলটি এখন ১৪ দলীয় জোটের অংশীদারদের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে কাজ করছে এবং ইতোমধ্যে বেশ কয়েকবার শরীকদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। জাতীয় পার্টির সঙ্গেও দলটি নিবিড় সম্পর্ক বজায় রাখছে।

আওয়ামী লীগ ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে ১৪ দলীয় জোটের ব্যানারে অংশ নিয়েছিল। এই জোটকে আওয়ামী লীগের আদর্শিক জোট হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছিল। এ ছাড়া, এসব নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী অংশীদার ছিল জাতীয় পার্টি।

২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ পুনরায় ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে জোটের গুরুত্ব কমতে থাকে। বামপন্থী দলগুলোর নেতারা আওয়ামী লীগ নেতাদের বলেছেন, ক্ষমতাসীন দল তাদেরকে সরকারে জায়গা না দেওয়ায় এবং জোটকে তেমন গুরুত্ব না দেওয়ায় তারা হতাশ।

এমন পরিস্থিতিতে শরিকদের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করার চেষ্টা শুরু করেছে ক্ষমতাসীন দল।

আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা জাতীয় পার্টির ২ শীর্ষ নেতার সঙ্গেও বৈঠক করেছেন। ক্ষমতাসীন দলটির শীর্ষ নেতারা বামপন্থী অংশীদারদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছেন।

দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে আলাপকালে ওয়ার্কার্স পার্টির এক শীর্ষ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, 'আওয়ামী লীগ ১৪ দলীয় জোটের ব্যানারে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় এখন শরিকদের সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করছে। তাদের সর্বশেষ সিদ্ধান্তে তেমনই মনে হচ্ছে।'

১৪ দলীয় জোটের সমন্বয়কারী আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা আমির হোসেন আমু ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা একসঙ্গে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব।'

Comments

The Daily Star  | English
10-bed ICU

Life-saving care hampered in 25 govt hospitals

Intensive Care Units at 25 public hospitals across the country have remained non-functional or partially operational over the last few months largely due to a manpower crisis, depriving many critically ill patients of life-saving care.

9h ago