‘আমরা ৫ শতাংশ বাড়াই, ইংল্যান্ড বিদ্যুতের দাম ১৫০ ভাগ বাড়িয়েছে’
বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা তো ৬০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত কোনো দামই ধরি না। কাজেই আমার যারা সাধারণ মানুষ তাদের কোনো সমস্যা হবে না।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) লাইন-১ এর নির্মাণকাজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
এর আগে সকাল ১১টা ৫ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, 'জনগণের জন্যই আমাদের কাজ। আমরা জনগণের সেবক। প্রধানমন্ত্রীত্ব না, সব থেকে বড় কথা আমি জাতির জনকের কন্যা। এ দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করাটাই আমার কাজ। সেটাই আমি করে যাচ্ছি।'
তিনি বলেন, 'আমরা আরও অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারতাম যদি করোনা অতিমারি না দেখা দিত। করোনায় অর্থনীতিকে যখন কিছুটা তুলে আনার চেষ্টা করে যাচ্ছি তখন এলো রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা-পাল্টা নিষেধাজ্ঞা। যার ফলে বিশ্বাবাজারে মূল্যস্ফীতি। প্রতিটি জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। যে গম ২০০ ডলারে কেনা যেত, আজকে তা ৬০০ ডলার দিয়ে কিনতে হচ্ছে। যেখানে মাত্র ৮০০ ডলারে জাহাজ পাওয়া যেত, সেই জাহাজ এখন ৩ হাজার ৮০০ ডলার দিয়ে ভাড়া আনতে হচ্ছে। জ্বালানি-ভোজ্য তেল, চিনি, গম সব কিছুই আমাদের কিনতে হয় অতিরিক্ত দাম দিয়ে। সে ক্ষেত্রে প্রত্যেককে কৃচ্ছতা সাধন করতে হবে, সাশ্রয়ী হতে হবে।'
'আমরা বিদ্যুৎ উৎপাদন করি। যেখানে ১২ টাকা লাগে সেখানে মাত্র সর্বনিম্ন ৩ এবং সর্বোচ্চ ৪ টাকা আমরা নেই; বিরাট ভর্তুকি দিতে হয়। উৎপাদন খরচ দিতে হবে। কৃষি উৎপাদন, খাদ্য উৎপাদনের জন্য যত ভর্তুকি লাগে সেটা আমরা দেবো। কিন্তু বিদ্যুতে ভর্তুকি দিয়ে তো...যারা বড়লোক, বিত্তশালী তারা সবচেয়ে বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহার করে। আমরা তো ৬০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত কোনো দামই ধরি না। কাজেই আমার যারা সাধারণ মানুষ তাদের কোনো সমস্যা হবে না। বরং সবাই যদি বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হন, যত কম ব্যবহার করতে পারে তত আপনার বিল কম আসবে। পানি, বিদ্যুৎ, জ্বালানি তেল ব্যবহারে সবাইকে সাশ্রয়ী হতে হবে। কারণ এই যুদ্ধের যে দামামা বেজেছে সেটা কবে শেষ হবে জানা যায় না। সারা বিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দা,' সতর্ক করেন তিনি।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, 'আমরা ৫ শতাংশ বাড়াই, ইংল্যান্ডে ১৫০ ভাগ বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করেছে। শীতের সময় ওখানকার মানুষের হিটার জ্বালিয়ে থাকতে হবে। পুরো পরিবার নিয়ে একটা ঘরের মধ্যে কোনো রকমে হিটার জ্বালিয়ে তারা থাকে। আমাদের এখনো সেই দুরাবস্থা আসেনি। যা আছে, আমরা যদি হিসাব করে না চলি তাহলে বিপদ আসার সম্ভবনা। সে জন্য সবাইকে হিসাব করে চলার অনুরোধ জানাচ্ছি। আমরা আছি, আপনাদের যেন কোনো সমস্যা না হয়—দেখবো। কিন্তু সঙ্গে আপনাদের সবার সহযোগিতা দরকার।'
'আমরা সব কিছু ম্যানেজ করে যাচ্ছি। পাশাপাশি আপনাদের সহযোগিতা লাগবে। সেই আহ্বান আমি জানাচ্ছি,' বলেন তিনি।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, 'আজকে বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়কে যাত্রা শুরু করেছে। উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। ইনশাল্লাহ ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশে। ২১০০ সালের ডেল্টা প্ল্যান করে দিয়েছি। যাতে করে এই ব-দ্বীপটা জলবায়ুর অভিঘাত থেকে রক্ষা পায়। এ দেশের মানুষ যেন উন্নত জীবন নিয়ে বাঁচতে পারে। আমরা বাংলাদেশকে নিয়ে এগিয়ে যাব। বাংলাদেশের এই অপ্রতিরোধ্য অগ্রগতি আর কেউ থামাতে পারবে না। এটাই হলো বাস্তবতা।'
Comments