সিলেটে একই দিনে বিএনপি ও আ.লীগের সমাবেশ ঘিরে উত্তেজনা
কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ১০ দফা দাবি বাস্তবায়নে আগামীকাল শনিবার সিলেটে সমাবেশ করবে বিএনপি। একইদিনে সিলেটে শান্তি সমাবেশ করার উদ্যোগ নিয়েছে আওয়ামী লীগ। ২ দলের এই পাল্টাপাল্টি সমাবেশ ঘিরে সিলেটে রাজনৈতিক উত্তেজনা বিরাজ করছে।
বিএনপি নেতাদের দাবি, তাদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশকে বাধাগ্রস্ত করতে আওয়ামী লীগ একই দিনে সমাবেশের ডাক দিয়েছে। তবে তাদের এ দাবি সঠিক নয় বলে মন্তব্য করেছেন সিলেট আওয়ামী লীগের নেতারা।
পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী বিএনপির সিলেট বিভাগীয় সম্মেলনের ভেন্যু নগরীর বন্দরবাজারের রেজিস্ট্রার মাঠ নির্ধারণ করা হয়েছে। দুপুর ২টায় অনুষ্ঠেয় এ সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান।
সমাবেশকে সামনে রেখে বিএনপির প্রচারণার মধ্যেই গত বুধবার একই মাঠে বিএনপি-জামায়াতের নৈরাজ্য ও অগ্নিসন্ত্রাসের প্রতিবাদে শান্তি সমাবেশ করার ঘোষণা দেয় সিলেট আওয়ামী লীগ।
বিষয়টি নিয়ে সমালোচনার পর বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগ শান্তি সমাবেশের ভেন্যু পরিবর্তন করে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ নির্ধারণ করে। আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ শুরু হবে বিকেল ৩টায়।
স্থান পরিবর্তন হলেও প্রায় একই সময় ২ দলের পাল্টাপাল্টি সমাবেশকে ঘিরে নগরীতে সংঘাত তৈরি হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমাদের কেন্দ্রঘোষিত সমাবেশ পূর্বনির্ধারিত থাকার পরও আওয়ামী লীগের সমাবেশের আহবান শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক সহাবস্থানকে সংঘাতপূর্ণ করার উদ্দেশ্যে হতে পারে।'
তিনি বলেন, 'বিএনপি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছে। সমাবেশের দিন আওয়ামী লীগ কোনো অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করলেও সাধারণ মানুষ ও বিএনপির নেতাকর্মীরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি চালিয়ে যাবে।'
এদিকে বিএনপি সংঘাতপূর্ণ রাজনীতিতে বিশ্বাস করে বলে আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ আয়োজনের মধ্যে অশান্তি দেখছে বলে মন্তব্য করেছেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন।
তিনি বলেন, 'বিএনপি-জামায়াত দেশের উন্নয়নের বিরুদ্ধে যে নৈরাজ্যপূর্ণ পরিস্থিতি সৃষ্টি করে অগ্নিসন্ত্রাস করেছে, তার প্রতিবাদে আওয়ামী লীগ উন্নয়নের স্বপক্ষে শান্তি সমাবেশ আয়োজন করছে। আমরা সংঘাতপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাইলে সমাবেশের স্থান রেজিস্ট্রার মাঠ থেকে সরিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নিয়ে আসতাম না।'
তবে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ ২ দলের নেতারাই দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, ২টি সমাবেশস্থল নগরীর দেড় কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে আর ২ দলের কর্মী-সমর্থকদের মিছিল পরস্পরের সমাবেশস্থলের সামনে দিয়ে যাবে। এর ফলে সংঘাতের আশঙ্কা রয়েছে।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার সুদীপ দাস বলেন, '২ দলের সমাবেশ চলাকালে যে কোনো সংঘাতময় পরিস্থিতি মোকাবিলা এবং নগরবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুলিশ প্রস্তুত। নগরীর প্রবেশপথ এবং প্রতিটি মোড়ে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা থাকবে। এ ছাড়া জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় আর্মার্ড পারসনেল ক্যারিয়ার (এপিসি) প্রস্তত থাকবে।'
Comments