পরশুরাম উপজেলা আ. লীগের কার্যক্রম স্থগিত

পুলিশ-ছাত্রদল সংঘর্ষ
স্টার ডিজিটাল গ্রাফিক্স

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে পাল্টাপাল্টি মামলা ও সহিংসতার ঘটনায় ফেনীর পরশুরাম উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে জেলা আওয়ামী লীগের এক জরুরী সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিকেলে জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক এ কে শহীদুল্লাহ খোন্দকার স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, 'স্থগিত কমিটির সভাপতি এবং সম্পাদকসহ পরস্পর বিরোধী কোনো নেতাকর্মী কেউই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রিক মিডিয়ায় দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় এমন কোনো বক্তব্য প্রদান করতে পারবেন না। অন্যথায় দলীয় শৃঙ্খলা বিরোধী কার্যক্রমের অপরাধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

জানতে চাইলে জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট হাফেজ আহম্মদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কেউ যদি জেলা কমিটির এ আদেশ অমান্য করে কোনো ধরনের কার্যক্রম বা মতামত প্রকাশ করেন তাকে চরম শাস্তির আওতায় নেওয়া হবে।'

প্রসঙ্গত গত ৩১ জানুয়ারি পরশুরাম উপজেলার উত্তর গুথুমা গ্রামে এক ব্যক্তির মৃত্যুর পর জানাযা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার জন্য উপজেলা সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন মজুমদারের সঙ্গে উপজেলা সাধারণ সম্পাদক ও পরশুরাম পৌরসভার মেয়র নিজাম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী সাজেলের মাইক নিয়ে কাড়াকাড়ি ও কথা কাটাকাটি হয়।

সেদিন বিকেলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক তাদেরকে প্রাণ নাশের হুমকি ও নিরাপত্তাহীনতার কথা উল্লেখ করে পরশুরাম মডেল থানায় পরস্পরের বিরুদ্ধে পৃথক সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

২ ফেব্রুয়ারি বিকেলে মেয়র তার পৌর কার্যালয়ে এবং উপজেলা চেয়ারম্যান তার সরকারি কার্যলয়ে পৃথক সংবাদ সম্মেলন করে পরস্পরের প্রতি বিষোদগার করেন। মেয়র তার বক্তব্যে উপজেলা চেয়ারম্যানকে মানসিকভাবে অসুস্থ বলে উল্লেখ করেন এবং উপজেলা চেয়ারম্যান তার কোন কারণে মৃত্যু হলে মেয়র সাজেল দায়ী থাকবেন বলে অভিযোগ করেন।

সেদিন রাতে উপজেলা কার্যালয়ের সামনে ডেকে নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি অনাদি রঞ্জন সাহাকে (৬৫) লোহার রড দিয়ে এলোপাথাড়ি পিটিয়ে আহত করে দুর্বৃত্তরা। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় অনাদি রঞ্জন বাদী হয়ে ১৭ জনের নাম উল্লেখ ও ১৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে পরশুরাম থানায় মামলা করেন।

পুলিশ রাতেই অভিযান চালিয়ে ৮ জনকে গ্রেপ্তার করে। তারা সবাই মেয়রের অনুসারী।

এদিকে অনাদি রঞ্জনকে দেখতে যাওয়ার পথে মেয়রের ওপর হামলা অভিযোগে ৪ ফেব্রুয়ারি মেয়র নিজাম উদ্দিন চৌধুরী নিজে বাদী হয়ে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও চেয়ারম্যানের ভাতিজা ইয়াসিন শরিফ মজুমদারকে প্রধান আসামি করে ১৩ জনের নাম উল্লেখ ও ১৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে পাল্টা মামলা করেন। এ মামলায় ১ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এ মামলার ১২ আসামি সোমবার আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে আদালত উপজেলা যুবলীগ সভাপতি ইয়াছিন শরিফ মজুমদার ছাড়া বাকি ১১ জনের জামিন মঞ্জুর করেন আদালত। ইয়াছিন শরিফ মজুমদারকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হয়।

মেয়র ও উপজেলা চেয়ারম্যানের পক্ষ নিয়ে পরস্পর বিরোধী সমালোচনার মধ্যে গত ৫ ফেব্রুয়ারি জেলা কমিটির পক্ষ থেকে পরশুরাম উপজেলার এ বিরোধ নিয়ে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল।

Comments

The Daily Star  | English

Freedom fighter’s definition: Confusion, debate over ordinance

Liberation War adviser clarifies that Sheikh Mujib, Tajuddin, others in Mujibnagar govt are freedom fighters

13h ago