‘নাশকতার’ মামলায় বীর মুক্তিযোদ্ধার কোমরে রশি-হাতকড়া

হাতকড়া ও কোমরে রশি বেঁধে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু ছালেক রিকাবদারকে (সাদা জামা পরিহিত) আদালতে নিয়ে যায় পুলিশ। ছবি: সংগৃহীত

নাশকতায় জড়িত থাকার অভিযোগে নরসিংদীর শিবপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু ছালেক রিকাবদারকে হাতকড়া ও কোমরে রশি বেঁধে আদালতে নেওয়ায় নিন্দা জানিয়েছেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ।

আবু ছালেক রিকাবদারকে গত শুক্রবার রাতে তার বাড়ির সামনে থেকে গ্রেপ্তার করে শিবপুর থানা পুলিশ। শনিবার বিকেলে তাকে নরসিংদীর আদালতে পাঠানো হয়। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠান।

শিবপুর থানা থেকে অন্যান্য আসামির সঙ্গে আবু ছালেক রিকাবদারের হাতে হাতকড়া ও কোমরে রশি বেঁধে আদালতে নেওয়া হয়। আদালত প্রাঙ্গণে তোলা আবু ছালেক রিকাবদারের বেশ কয়েকটি ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। তার পাশে শিবপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রাসেলকে দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়।

এ ব্যাপারে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আব্দুল মোতালিব খান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। কোমরে রশি বেঁধে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করা হয়েছে।'

শিবপুর এলাকার যুদ্ধাকালীন কমান্ডার প্রফেসর আব্দুল মান্নান খান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আবু ছালেক রিকাবদার একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তাকে রাজনৈতিক মামলায় গ্রেপ্তার করে হাতকড়া ও কোমরে রশি বেঁধে ন্যক্কারজনক কাজ করা হয়েছে; মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করা হয়েছে। আমি এই ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।'

উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহসীন ডেইলি স্টারকে নাজির বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক। বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু ছালেক রিকাবদার ভিন্ন দল করতে পারেন। তাকে গ্রেপ্তারের কথা উপজেলা আওয়ামী লীগ জানে না। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার কোমরে রশি বাঁধা পুরো জাতির কোমরে রশি বাঁধার সামিল।'

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শিবপুর মডেল থানার ওসি ফিরোজ তালুকদার ডেইলি স্টারকে বলেন, রাজনৈতিক মামলায় আবু ছালেক রিকাবদারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে কোমরে রশি বাঁধার বিষয়টি আমার জানা নেই। এ ঘটনায় কেউ জড়িত থাকলে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নাশকতায় জড়িত থাকার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে দুটি মামলা আছে।

এসআই রাসেল আহমেদ বলেন, 'আমি আসামি ধরার কাজে ঘটনাস্থলে ছিলাম। আমি তার কোমরে রশি বাঁধিনি। হীন উদ্দেশ্যে আমাকে জড়িয়ে ফেসবুক ছবি ছড়ানো হচ্ছে।'

রশি কে বেঁধেছেন জানতে চাইলে বলেন, 'ওসি স্যার ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আছেন। তাদের অনুমতি ছাড়া আমার বক্তব্যে দেওয়ার সুযোগ নেই।'

উপজেলা বিএনপি ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, শনিবার সারা দেশে বিএনপির ইউনিয়ন পর্যায়ে পদযাত্রা কর্মসূচি ছিল। এর আগের রাতে আবু ছালেক রিকাবদারকে তার বাড়ির সামনে থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

নরসিংদী জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মঞ্জুর এলাহী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কাকে কীভাবে সম্মান দিতে হয় দলীয় বিবেচনায় নিয়োগ পাওয়া পুলিশ সদস্যরা জানে না। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা খুবই অমানবিক। তিনি কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত নন।'

Comments

The Daily Star  | English

Threat of fresh Rohingya influx looms as clashes erupt in Myanmar

Residents, gripped by panic, reported that this was the most intense gunfire they had heard in months.

9h ago