‘বাহাত্তরের সংবিধান কাটাছেঁড়া করে অকার্যকর করেছে আ. লীগ’

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। স্টার ফাইল ছবি

আওয়ামী লীগ বাহাত্তরের সংবিধানকে বার বার কাটাছেঁড়া করে একটা অকার্যকর সংবিধানে পরিণত করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ শুক্রবার ‍দুপুরে সিলেট নগরীর রেজিস্ট্রারি মাঠে মহানগর বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, 'আমাদের যে সংবিধান ১৯৭২ সালে এই দেশের মানুষ রচনা করেছিল, যে সংবিধান সবাই মেনে নিয়েছিল, সেই সংবিধানকে তারা (আওয়ামী লীগ) বার বার কাটাছেঁড়া করে একটা অকার্যকর সংবিধানে পরিণত করেছে।'

তিনি বলেন, 'বাহাত্তরের সংবিধানে যে মৌলিক বিষয় ছিল, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা, একটা জনগণের প্রতিনিধিত্বমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থা, সেটাকে ১৯৭৫ সালে তারা ধ্বংস করে দিয়ে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা বাকশাল গঠন করেছিল।'

বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'যখনই তারা সুযোগ পেয়েছে ক্ষমতায় আসার, তখনই তারা সংবিধানকে ধ্বংস করেছে, সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় হাত দিয়েছে, সংবাদপত্র নিষিদ্ধ করেছে, কণ্ঠরোধ করেছে সংবাদপত্রের।'

তিনি বলেন, 'এই সরকারের অপকীর্তি বলে শেষ করা যাবে না। তাদের একটাও ভালো কাজ নেই। তারা এই দেশের সমাজকে দুই ভাগে পুরোপুরি বিভক্ত করে ফেলেছে এবং একটা দূষিত সমাজে পরিণত করেছে।'

মির্জা ফখরুল বলেন, 'আওয়ামী লীগকে দেশের মানুষ কেউ বিশ্বাস করে? আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হবে, তারা বিশ্বাস করে?'

'সরকার একটা ভয়ের রাজত্ব, ত্রাসের রাজত্ব তৈরি করেছে। যে সরকার আমাদের সমস্ত অর্জন কেড়ে নিয়েছে, তাদের যেকোনো উপায়ে পরাজিত করতে হবে। তাদের বিতাড়িত করতে হবে। দেশে পরিবর্তন নিয়ে আসতে হবে', বলেন তিনি।

আওয়ামী লীগ দেশের অর্থব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, 'অর্থনীতিকে তারা এমনভাবে ধ্বংস করেছে যে, এটাকে টেনে তোলা অত্যন্ত কঠিন। শুধু নিজেদের স্বার্থে, দুর্নীতির স্বার্থে আজ তারা দেশের অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দিয়েছে।'

মেগাপ্রকল্পে যা খরচ হওয়ার কথা, সরকার তার চেয়ে ৩ গুণ বেশি খরচ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'তারা নাকি অনেক উন্নয়ন করেছে। এই উন্নয়নটা কার জন্য? এই উন্নয়ন গুটিকতক মানুষের জন্য। যে পদ্মা সেতু বানাতে ১০ হাজার কোটি টাকার বাজেট ছিল, সেটা ৩০ হাজার কোটি টাকায় হয়েছে। অথচ হাসপাতালে রোগীরা ঠিকমতো বেড পায় না, ওষুধ পায় না, ডাক্তার পায় না।'

সম্প্রতি ডাচ-বাংলা ব্যাংকের টাকা ছিনতাইয়ের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কত খারাপ হয়েছে! প্রকাশ্যে দিনের বেলায় চড়-থাপ্পড় মেরে ১১ কোটি টাকা নিয়ে যায়! আইনশৃঙ্খলা এমন খারাপ হয়েছে, আজকে আমাদের মা-বোনদের নিরাপত্তার কোনো ব্যবস্থা নেই। তারা নিরাপদ বোধ করেন না এই দেশে। আজকে দেশের কোথাও কোনো আইনের শাসন নেই।'

ভারতীয় আদানি গ্রুপের কাছ থেকে বিদ্যুৎ কেনার চুক্তির সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'অন্য দেশের চেয়ে দ্বিগুণ দামে আমাদের কয়লা কিনতে হচ্ছে। চুক্তির ফলে বাংলাদেশে বিদ্যুতের দাম দাঁড়াবে প্রতি ইউনিটে প্রায় ১৬ টাকার মতো, যেটা এখন ৮ টাকার মতো। বিদ্যুতের দাম গত ২ মাসে ৩ বার বাড়ানো হয়েছে। যদি চুরি বন্ধ করা যেত, তাহলে এতবার দাম বাড়াতে হত না। কিন্তু তারা বিদ্যুৎ সেক্টরকে বেছে নিয়েছে তাদের টাকা আয় করার জন্য, চুরি করার জন্য।'

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh asks India to halt border push-ins, cites security concerns

The move follows reports that BSF pushed in around 300 people into Bangladesh between May 7 and May 9

1h ago