‘আ. লীগ প্লাস’ দেশের মানুষকে ক্রীতদাসে পরিণত করেছে: জি এম কাদের

টাঙ্গাইল জেলা জাতীয় পার্টির ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন জাপা চেয়ারপারসন জি এম কাদের। ছবি: স্টার

জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারপারসন জি এম কাদের বলেছেন, এখন বলা হয়- মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের আর মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের। আওয়ামী লীগ কতগুলো কারণে দেশকে ভাগ করেছে। দেশকে তারা একতাবদ্ধ থাকতে দেয়নি। একটি ক্লাস সৃষ্টি করেছে, একটি গ্রুপ- আওয়ামী লীগ প্লাস। এই গ্রুপ সারাদেশের মালিকানা নিয়ে ফেলেছে এবং দেশকে লুটপাট করে সাধারণ মানুষকে তারা একটি ক্রীতদাস শ্রেণিতে পরিণত করেছে।

আজ সোমবার টাঙ্গাইল জেলা জাতীয় পার্টির ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

জাপা চেয়ারপারসন বলেন, 'বাংলাদেশের কোনো মানুষ মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে কোনোদিন ছিল না, এখনো নেই এবং মুক্তিযুদ্ধে এখন পর্যন্ত আমরা কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারিনি। এখন পর্যন্ত আমরা মুক্তিযুদ্ধে জয়লাভ করতে পারিনি। আমরা স্বাধীনতা যুদ্ধে জয়লাভ করেছিলাম। সেখানে একটি কথা এসেছে- স্বাধীনতার পক্ষের আর স্বাধীনতার বিপক্ষের, আওয়ামী লীগ আর আওয়ামী লীগ নয়। এগুলো হলো- বিভিন্নভাবে মানুষের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করে নিজেদের জন্য একটি সুবিধাবাদী গোষ্ঠী তৈরি করে বাকি লোকদের লাথি দিয়ে রাস্তায় ফেলে তাদের আবর্জনার মতো ব্যবহার করা।' 
   
জি এম কাদের বলেন, 'স্বাধীনতার বিপক্ষে লোক ছিল, এটা ঠিক আছে। দেশ স্বাধীন হয়েছে আজ বায়ান্ন বছর। যারা বিপক্ষে ছিল তাদের অনেক নেতাদের ফাঁসি হয়ে গেছে। তৎকালীন গুটিকয়েক মানুষ, তাদের অনেকেই মারা গেছেন। এখন স্বাধীনতার বিপক্ষের লোক কোথায়? এখন যারা আছেন তাদের বেশীরভাগেরই তো স্বাধীনতার পর জন্ম হয়েছে।'
  
তিনি বলেন, 'গণতন্ত্র মানে কী? গণতন্ত্রের মানে জনগণের তন্ত্র। জনগণ যেখানে রাজার ভূমিকা পালন করে। জনগণের সরকার জনগণ নির্বাচিত করবে এবং সেই সরকার কাজ করবে জনগণের কল্যাণে। এটাই হলো- গণতন্ত্র। বর্তমানে কী এটা চালু আছে? এখন বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ ভাগ করে, সব স্তরে ভাগ করেছে, যেমন- আওয়ামী লীগ, নন-আওয়ামী লীগ, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে, মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে, স্বাধীনতার পক্ষে, স্বাধীনতার বিপক্ষে। এরকম ভাগ করে নিজেদের লোকদের নিয়ে একটি গোষ্ঠী তৈরি করেছে যার নাম- আওয়ামী লীগ প্লাস। আওয়ামী লীগের বাইরে যারা আছে তারা হলো- প্লাস। যারা প্রশাসনে আছেন, ডিসি, এসপি, ইউএনও, এদের মধ্যে যারা নিজেদের লোক, যারা আওয়ামী লীগ করেন এবং যারা আওয়ামী লীগের হয়ে কাজ করেন, যারা আওয়ামী লীগের শ্লোগান দেন, সেরকম একটি গ্রুপ তারা তৈরি করে ফেলেছে। পুলিশ প্রশাসনে করেছে, প্রতিরক্ষা বাহিনীতে করেছে। রাষ্ট্রের স্তম্ভ পার্লামেন্টকে তারা কুক্ষিগত করেছে। এমনকি বিচারালয়, বিচার বিভাগ যেটি নিয়ে আমরা সবসময় গর্ব করতাম।'

'আমি কিছুদিন আগেও বলেছি, এখানে হুমকি দেওয়া হয়েছে যে, যদি আওয়ামী লীগ প্লাসের ভেতর আসতে না চাও, যদি তার বাইরে থাকো, তাহলে তাকে আমরা বিদায় করে দিতে পারি। সবচেয়ে ভদ্র, শিক্ষিত আওয়ামী লীগের একজন অত্যন্ত প্রভাবশালী নেতা এই কথা প্রকাশ্যে বলেছেন, আমরা নামিয়ে দিয়েছিলাম আমাদের ইচ্ছায়, জনগণের ইচ্ছায় নয়। কোনো নিয়ম-কানুনের জন্য নয়, শুধু আওয়ামী লীগ প্লাসের নিয়ন্ত্রণে আসেননি, আমাদের কথা মতো কোনো রায় দেননি, এটাই তো তিনি মিন করেছেন', বলেন তিনি।
 
জি এম কাদের আরও বলেন, 'বর্তমান সরকার হলো আওয়ামী লীগ প্লাস। তারা নির্বাচিত হয় আওয়ামী লীগ প্লাসের দ্বারা এবং তারা কাজ করে আওয়ামী লীগ প্লাসের জন্য, জনগণের জন্য নয়। এটাকে কি আমরা গণতন্ত্র বলব। এটাকে বলব- আওয়ামী লীগ প্লাসতন্ত্র।'

সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, আবুল কাশেম, সালাম চাকলাদার এবং মোজাম্মেল হোসেন প্রমুখ। 
 

Comments

The Daily Star  | English

Eid meat: Stories of sacrifice, sharing and struggle

While the well-off fulfilled their religious duty by sacrificing cows and goats, crowds of people -- less fortunate and often overlooked -- stood patiently outside gates, waiting for a small share of meat they could take home to their families

10h ago