বিএনপি নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে: প্রধানমন্ত্রী

শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বিএনপিকে সন্ত্রাসী ও বোমা হামলাকারীদের দল হিসেবে আখ্যায়িত করে দেশবাসীকে সতর্ক করে বলেছেন, 'দলটি আগামী নির্বাচন যেন সুষ্ঠুভাবে হতে না পারে সেজন্য ষড়যন্ত্র করছে।'

তিনি বলেন, 'জাতির পিতার হত্যাকারী, সন্ত্রাসী, জঙ্গিবাদ সৃষ্টিকারী, বোমা হামলাকারী, গ্রেনেড হামলাকারী বিএনপি। তারা জানে যে তারা নির্বাচন করে কোনো দিন ক্ষমতায় যেতে পারবে না, জনগণের ভোটও পাবে না। তাই নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা এবং ভোট যেন না হয় সেজন্য যতরকমের চক্রান্ত করা যায় সেই চক্রান্তে তারা লিপ্ত।'

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত 'স্মরণ সভা'য় সভাপতিত্বকালে দেওয়া ভাষণে এ কথা বলেন।

বিএনপি সেই '৭৫ সাল থেকে এই চক্রান্ত করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা চক্রান্ত করেছে আর দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে খেলছে। এ দেশের মানুষ নৌকায় ভোট দিয়েছে স্বাধীনতা পেয়েছে। আজকে তারা পেট ভরে খেতে পারছে, বিদ্যুৎ পাচ্ছে, রাস্তাঘাট পেয়েছে, কর্মসংস্থান পাচ্ছে, মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হয়েছে—জাতির পিতা যা চেয়েছিলেন।

'৭৫ এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ নির্মমভাবে হত্যার প্রসঙ্গ টেনে সেদিন তিনি তার পরিবারকে হারালেও বাঙালি জাতি তার সব সম্ভাবনাকে হারিয়ে ফেলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'বাবা-মা-ভাই সব হারিয়েছিলাম। কিন্তু একটাই প্রতিজ্ঞা নিয়ে এসেছিলাম, লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই স্বাধীনতাকে ব্যর্থ হতে দেবো না।'

'৭৫ এর শোক-ব্যথাকে বুকে ধারণ করে দিনরাত কাজ করে গেলেও একের পর আঘাত, প্রাণসংহারের প্রচেষ্টা তাকে মোকাবিলা করতে হয়েছে উল্লেখ করে জাতির পিতার কন্যা বলেন, 'আমারও সময় সীমিত। কত ভয়ানক মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছি। আমার নেতাকর্মীরা জীবন দিয়ে আমাকে ফিরিয়ে এনেছে। বারবার মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছি। আমার দলের নেতাকর্মীরা জীবন দিয়ে আমাকে রক্ষা করেছে।'

তিনি বলেন, আমার বাবা রক্ত দিয়ে গেছেন এ দেশের মানুষের জন্য। রক্ত দিয়ে গেছেন আমার মা, আমার ভাইয়েরা। প্রতি নিয়ত হৃদয়ে রক্তক্ষরণ নিয়ে আমাদের দিনরাতের প্রচেষ্টা এ দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা শুরু করেছিলেন ভূমিহীন মানুষের জন্য ঘর করে দেওয়া। তিনি সম্পূর্ণ করে যেতে পারেননি। তাই মুজিববর্ষে আমাদের একটাই লক্ষ্য ছিল, দেশে একটি মানুষও আর ভূমিহীন-গৃহহীন থাকবে না।

তার সরকার বিনে পয়সায় ২ কাঠা জমিসহ ঘর নির্মাণ করে দিচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আজকে প্রায় ৮ লাখ ২৯ হাজার ৬৬০টি পরিবারকে বিনে পয়সায় জমিসহ ঘর দিয়ে তাদের জীবন-জীবিকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আর মাত্র সাড়ে ১১ হাজার বাকি আছে। তাদেরও ঘর তৈরি হবে। এটা হয়ে গেলে দেশের আর একটি মানুষও ভূমিহীন-গৃহহীন থাকবে না। প্রত্যেকেরই একটা ঘর বা ঠিকানা হবে।

এভাবে আওয়ামী লীগ সরকার দেশের মানুষের যে কাজ করছে সেটাই 'অনেকের অন্তর্জ্বালা', বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, লুটে খেতে পারছে না, ক্ষমতা নেই, জনগণকে শোষণ করতে পারছে না। জনগণের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে পারছে না, তাই নির্বাচনে কারচুপির ধূয়া তুলছে। বিএনপির মুখে নির্বাচনে কারচুপির কথা আসে কোত্থেকে। ভোট চুরির অপরাধে খালেদা জিয়া দুই-দুইবার ক্ষমতাচ্যুত হয়েছে। তারপরেও তাদের মুখে আবার গণতন্ত্রের কথা।

তিনি বলেন, আসল কথা, ওরাতো নির্বাচন চায় না। কারণ, তারা কাকে নিয়ে নির্বাচন করবে। তাদের ২ নেতার একজন এতিমের অর্থ আত্মসাতের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত, আরেকজনের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং, ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলা এবং ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ও পলাতক এবং আর কোনো দিন রাজনীতি করবে না বলে মুচলেকা দিয়ে দেশ থেকে চলে গেছে।

Comments

The Daily Star  | English

JP central office vandalised, set ablaze

A group of unidentified people set fire to the central office of Jatiyo Party in Dhaka's Kakrail area this evening

1h ago