‘যারা ধর্ম পালন করে তাদের জঙ্গি বানিয়ে সরকার ফায়দা হাসিল করে’

পশ্চিমা বিশ্ব ও ভারতকে দেখাতেই সরকার দেশে ‘জঙ্গি নাটক’ করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
জাতীয় পার্টির একাংশের প্রতিষ্ঠাতা কাজী জাফর আহমেদের অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত

পশ্চিমা বিশ্ব ও ভারতকে দেখাতেই সরকার দেশে 'জঙ্গি নাটক' করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় তিনি এ অভিযোগ করেন। রাজধানীর কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে জাতীয় পার্টির একাংশের প্রতিষ্ঠাতা কাজী জাফর আহমেদের অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, 'কিছুদিন আগে... গহীন জঙ্গলের কথা বলে একটা পাড়া থেকে নিরীহ মানুষদের জঙ্গি বলে তুলে নিয়ে এলো। এর প্রয়োজন আছে তাদের (সরকার)। কারণ তারা দেখাতে চায় যে, বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ আছে, জঙ্গি আছে… এদের দমন করার জন্য শুধু তাদেরকেই দরকার। এটাই হচ্ছে তাদের মূল উদ্দেশ্য এবং তারা সেটাই দেখাতে চায় পশ্চিমা বিশ্বকে, ভারতকে।'

তিনি বলেন, 'আমরা তো জানি যে, জঙ্গি বলতে তারা… জঙ্গি আওয়ামী লীগ, জঙ্গি এই সরকার। তারা আজ মানুষের ওপর সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ চাপিয়ে দিয়ে সাধারণ মানুষকে হত্যা করছে, ধ্বংস করছে, তাদের সব অধিকারগুলো কেড়ে নিচ্ছে। হ্যাঁ, এ দেশের মানুষ ধর্মপ্রাণ… এটা পাপ নয়, অপরাধ নয়। সেজন্য যেকোনো মানুষ যারা ধর্ম পালন করে তাদের জঙ্গি বানিয়ে সে (সরকার) ফায়দা হাসিল করে।'

ছাত্রদল নেতাদের বাসা থেকে তুলে নিয়ে ৪৮ ঘণ্টা পর অস্ত্র মামলায় যুক্ত করে দেওয়ার ঘটনা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'পত্রিকায় দেখেছেন... ৩টা অস্ত্র। সেই অস্ত্রগুলো দেখে মনে হবে যে, ২০-২৫ বছর আগে মাটিতে লুকানো ছিল, সেই অস্ত্র তুলে নিয়ে এসেছে... এটা মিথ্যা প্রচারণা, মানুষকে বোকা বানানোর চেষ্টা। ওরা দেশের সব মানুষকে বোকা মনে করে। এখন সবাই বুঝে… এভাবে প্রতারণা করে সে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়।'

তিনি বলেন, 'যিনি জোর করে প্রধানমন্ত্রী হয়ে বসে আছেন, গতকাল বক্তব্যে তিনি প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের পরিবারকে বলেছেন খুনি। আমি এর তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ জানাচ্ছি।'

মির্জা ফখরুল বলেন, 'আমরা এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাব না। এই প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ বিলুপ্ত করে দিয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা দিয়ে নতুন নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন করতে হবে।'

তিনি বলেন, 'কাজী জাফর চলে গেছেন, মোস্তফা জামাল হায়দার অসুস্থ। এখানে যারা বয়স্ক মানুষ আছে, তাদের সময় প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। আমরা শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়াই করছি… সেই লড়াইটা ব্যক্তিগত কোনো স্বার্থে নয়, সেই লড়াই মানুষের জন্য, তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য।'

জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দারের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম মহাসচিব এ এস এম শামীমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম, জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, বিএনপির জহির উদ্দিন স্বপন, জাতীয় পার্টির মহাসচিব আহসান হাবিব লিংকন, ভাইস চেয়ারম্যান কাজী নাহিদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য নওয়াব আলী আব্বাস খান ও কাজী জাফর আহমেদের বড় মেয়ে কাজী জয়া প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

Comments