প্রলোভন দেখিয়ে কিংস পার্টিতে ভ্রষ্ট নেতাদের ঢুকানো হচ্ছে: রিজভী

আওয়ামী লীগের কিংস পার্টি
রুহুল কবির রিজভী। ছবি: সংগৃহীত

রাষ্ট্রীয় সংস্থাকে কাজে লাগিয়ে কথিত কিংস পার্টি গঠন করে সরকার আগামী জাতীয় নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

রিজভী বলেন, 'রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা দিয়ে টার্গেট করে করে অর্থ এবং এমপি বানানোর প্রলোভনে কিংস পার্টি-ভুঁইফোড় পার্টিতে রাজনৈতিক নেতাদের ঢুকানো হচ্ছে। তবে কোন নীতিবান, আদর্শবাদী, দেশপ্রেমী রাজনীতিককে তারা নিতে পারছে না। কতিপয় ডিগবাজিমার্কা-ভ্রষ্টাচারী রাজনৈতিক ব্যক্তিকে নির্বাচনী রঙ্গমঞ্চের অভিনেতা বানাতে কব্জা করেছে।'

'টাকার বিনিময়ে খরিদ হওয়া এইসব রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের কেউ কেউ এখনই নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। কারণ তারা টাকা ও ক্ষমতার মুলোর লোভে পড়ে ডিগবাজি দেওয়ার পর এখন বুঝতে পারছেন তাদের ভাগ্যের শিকে ছিঁড়বে না। পাতানো খেলার সাজানো নির্বাচনে 'হার হাইনেস' যাকে যাকে চাইবেন… তারাই হবেন এমপি, তারাই হবেন ক্ষমতাশালী, অন্য কেউ না।'

আজ শনিবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন রিজভী। রোববার ভোর থেকে শুরু হতে যাওয়া দেশব্যাপী ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের আগে ভার্চুয়ালি এই সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যে বিএনপির নেতাকর্মীদের 'দুর্জয়' সাহস নিয়ে রাস্তায় নামার আহ্বান জানান রিজভী।

একতরফা তফসিল বাতিলসহ সরকার পদত্যাগের এক দফা দাবিতে বিএনপির ডাকা এটি হবে সপ্তম দফা অবরোধ কর্মসূচি।

রিজভী বলেন, 'শান্তিপূর্ণ এই অবরোধ কর্মসূচিতে গণতন্ত্রমনা মানুষ, সাধারণ জনগণ এবং দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা দুর্জয় সাহস নিয়ে রাজপথে এগিয়ে যাবে এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি আমি। এই আন্দোলনে আপনি আমি-আমরা একা নই। আমাদের সকলের অংশগ্রহণে এক দফার আন্দোলন আরও বিস্তৃত, বেগবান ও তেজোদীপ্ত হবে। মনে রাখবেন, দেশের গণতন্ত্রকামী মানুষ এবং বিশ্বের গণতান্ত্রিক শক্তিও আর বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদী শাসন দেখতে চায় না, এদের পতন হবেই।'

রিজভী বলেন, 'জাতীয় নির্বাচন জনগণ তাদের রাষ্ট্র পরিচালনার ভার পরবর্তী মেয়াদের জন্য কাদের হাতে অর্পণ করতে চায় তা সংখ্যাগরিষ্ঠের সিদ্ধান্তের আলোকে নির্ধারণ করে দেয়। সেই নির্বাচনকে এখন হাসি-তামাশা, বাণিজ্য ও প্রহসনে পরিণত করা হয়েছে। জনগণের কাছ থেকে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচনের ক্ষমতা ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। আর জনপ্রতিনিধিত্ব এখন শেখ হাসিনার দান-দক্ষিণা, খয়রাত, বিলি-বণ্টন, ভাগ-বাটোয়ারা, উপহার-করুণায় পরিণত হয়েছে।'

'২০১৪ বিনা ভোটে অটোপাসের নির্বাচন এবং ২০১৮ সালের নিশিরাতের ভোট ডাকাতির পর এবার এবার আরেকটা ভাঁওতাবাজি নির্বাচন হবে। প্রধানমন্ত্রীর বাসায় বা তার দপ্তরে যে সিলেকশন হবে সেটা শুধু নির্বাচন কমিশন পাঠ করবে। ভোটের নামে রাষ্ট্রের শত শত কোটি টাকার শ্রাদ্ধ করা হবে। নির্বাচনের পর রাতে পাঠ করা হবে গণভবনের তালিকা।'

রিজভী বলেন, 'নির্বাচন এলে জনপদগুলোতে আনন্দ-উসবের জোয়ার নামত। উৎসবের পরিবর্তে সারা দেশে ভয়ের পরিবেশ বিরাজ করছে। যারা আওয়ামী লীগ করে তারা ছাড়া গ্রেপ্তার আতংকে পালিয়ে বেড়াচ্ছে মানুষ। বহু গ্রাম পুরুষ শূন্য হয়ে পড়েছে। মনোনয়ন নিয়ে ইতিমধ্যে খুনোখুনি শুরু করেছে তারা। নির্বাচনকে সরকার উৎসবের বদলে ভয়, আতংক ও শোকে পরিণত করেছে।'

তিনি বলেন, 'শেখ হাসিনার নির্দেশে নেতাদের বাড়ি-বাড়ি হানা দিচ্ছে রাতের বাহিনী। এইভাবে জোড়াতালি দিয়ে নির্বাচনের পথে হাঁটছে মাফিয়াচক্র। তুমুল আন্দোলনে-জনজোয়ারে এই নির্বাচনী নাটক ভণ্ডুল হয়ে যাবে।'

Comments

The Daily Star  | English

No justifiable reason to delay nat'l polls beyond Dec: Salahuddin

We have been able to make it clear that there is not even a single mentionable reason to hold the election after December, says the BNP leader

2h ago