এখন তো সবাই নীরব, ইউরোপও কিছু বলে না আমেরিকাও কিছু বলে না: কাদের

ওবায়দুল কাদের। ছবি: সংগৃহীত

নির্বাচনকে যারা বাধাগ্রস্ত করবে তাদের বিষয়ে দেশে-বিদেশে অনেক কথা শোনা গেলেও এখন সবাই নীরব। এখন কেউ কিছু বলে না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, 'আমরা শুনেছিলাম আন্তর্জাতিকভাবে যে...নির্বাচন বাধাগ্রস্ত হয় এমন কোনো কর্মকাণ্ড হলে সেটা নির্বাচনবিরোধী কর্মকাণ্ড হিসেবেই বিবেচিত হওয়ার কথা। এখন তো সবাই নীরব। এখন কেউ কিছু বলে না—ইউরোপও কিছু বলে না, আমেরিকাও কিছু বলে না।'

আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে এ মন্তব্য করেন তিনি।

কাদের বলেন, 'বিভিন্ন জায়গায় ট্রেনে হামলা করছে। প্রতিনিয়ত গাড়িতে অগ্নি সংযোগ, বাসে অগ্নি সংযোগ—এসব ঘটনা ঘটছে। অবরোধ কার বিরুদ্ধে? তারপর তারা হরতাল ডাকছে, কার বিরুদ্ধে? এটা তো নির্বাচনের বিরুদ্ধে, নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য এসব কর্মকাণ্ড তারা করছে।'

তিনি বলেন, 'আজকে যারা মানবাধিকারের কথা বলে, বাংলাদেশে সুশাসনের কথা বলে, যারা অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বড় গলায় বলে, তারা আজকে একটা পক্ষের এসব অপকর্ম-মিথ্যাচার, গণতন্ত্রবিরোধী-সংবিধানবিরোধী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে তারা কেন নীরব? নির্বাচনটা প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়। যারা বাধা দিচ্ছে, তাদের ব্যাপারে তারা কেন নীরব? আমাদের দেশে যারা সুশীল সমাজ, যারা মানবাধিকারের কথা বলে, গণতন্ত্রের কথা বলে, তাদের কাছে আমার প্রশ্ন।'

বিএনপির সমাবেশের আগে বিভিন্ন সময় আমরা দেখেছি যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বিভিন্ন সময় আপনাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন এবং তাদের সমাবেশের ব্যাপারে খোঁজ-খবর নিয়েছেন। বিএনপি যে নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করছে; সেটা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে নোটিশ করা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'হরতাল-অবরোধ কি কোনোভাবে ঢেকে রাখা যায়? পুলিশ হত্যা কি ঢেকে রাখার মতো ঘটনা? প্রধান বিচারপতির বাড়িতে হামলা, গাড়িতে আজকে অগ্নি সংযোগ করছে, গাড়ি পুড়ছে, বাসে আগুন দিচ্ছে, এগুলো কি অন্ধকারে ঢেকে রাখা যাবে? এগুলো তো প্রকাশ্য হচ্ছে।'

তিনি বলেন, 'আজকের যে বিশ্ব, এখানকার খবর সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে যেতে কতক্ষণ লাগে! তথ্য-প্রবাহের বিস্ফোরিত অবস্থা সারা দুনিয়ায়। সব কিছু প্রকাশ্যে হচ্ছে এবং সবাই দেখতে পাচ্ছে।'

'এসব নিয়ে কোনো কথা আমরা শুনছি না। বাধা দেওয়ার ব্যাপারে দেশে-বিদেশে কত কথাই শোনা গেল। এখন প্রকাশ্যে বাধা তারা দিচ্ছে। প্রকাশ্যে তারা নির্বাচনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।'

ওবায়দুল কাদের বলেন, 'আমাদের দেশেও যারা সুশীল সমাজ, মানবাধিকারের প্রবক্তা, তারা প্রতিনিয়ত মানবাধিকার-গণতন্ত্র, সরকারের সমালোচনা করেন। তারপর গ্রেপ্তার হয়েছে—এখন পুলিশকে যে মেরেছে তাকে গ্রেপ্তার করবে না? প্রকাশ্য দিবালোকে হেলমেট খুলে তাকে কুপিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যাকারীদের বিচার কি হবে না? প্রধান বিচারপতির বাড়িতে যারা হামলা করছে তাদের বিচার হবে না? পুলিশ হাসপাতালে যারা হামলা করেছে তাদের বিচার হবে না? গাড়ি পোড়াচ্ছে প্রকাশ্যে; যারা ধরা পড়ছে তাদের কি বিচার হবে না? এটা আমার জিজ্ঞাসা।'

'একটি পক্ষ নিজেরাই নির্বাচনের বাইরে রয়েছে। কেউ তাদের বাইরে রাখেনি। আমরা গতকাল পর্যন্ত অনুরোধ করেছি। আমরা বারবার বলে যাচ্ছি। আমরা চাই না কেউ নির্বাচনের বাইরে থাকুক। আমরা প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন চাই।'

যেভাবে জ্বালাও-পোড়াও হচ্ছে, যারা এসব কর্মকাণ্ড করছে, পক্ষান্তরে নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে, এসব বিষয়ে বিদেশিরা কেন কথা বলছে না জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'তারাই তো আগে বলেছে যে, নির্বাচন বাধাগ্রস্ত হবে এমন কোনো কর্মকাণ্ডে বা নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করার মতো কাজ যারা করবে, বাধা দেবে-সন্ত্রাস করবে এসব ব্যাপারে তাদের পরিষ্কার বক্তব্য ছিল। এখন কেন তারা চুপচাপ।'

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'তারা যা বলেছে তা এখন প্রকাশ্যে হচ্ছে। এখন তারা চুপ কেন?'

জোটের সঙ্গে আসন সমন্বয় প্রসঙ্গে কাদের বলেন, 'সেটা তো পারষ্পরিক সমঝোতার বিষয়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, আপনি ইলেকটেবল কি না? আপনি শরিক সে জন্য আমি দেবো, আপনাকে জিততে হবে তো সেখানে। সে বিষয়টা নাম্বার ওয়ান। শরিক এ জন্য দিতে হবে, উনি নির্বাচনে জেতার অবস্থায় নেই, উনার সে রকম জনসমর্থন নেই তাহলে শরিক এ জন্য দিয়ে আমি হারব? সেটা তো হবে না। ইলেকশনে জিততে হবে।'

আপনারা স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ব্যাপারে নমনীয় হওয়ার পরে ৩৩ আসনে একদিনের মধ্যে ৫২ জনের বেশি স্বতন্ত্র প্রার্থী দাঁড়িয়ে গেছে। এত স্বতন্ত্র প্রার্থী মাঠে নামছে, তাদের বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'দলের লোক হলে দলের সিদ্ধান্ত মানতে হবে। আমরা ঢালাওভাবে কিছু করতে যাব না, আমাদেরও কৌশল আছে।'

Comments

The Daily Star  | English

$1b a year needed to hit 2030 green energy goal

Bangladesh needs to expand its renewable energy capacity by 21 percent annually to meet its latest green energy target by 2030, requiring nearly $1 billion in yearly investment, according to a study by the Institute for Energy Economics and Financial Analysis (IEEFA).

13h ago