‘বিদেশি বন্ধুরা বুঝতে পেরেছে বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করছে’
বিএনপি বাধা দিয়ে নির্বাচন পণ্ড করতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
আজ সোমবার দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, 'আমরা মোটেই চিন্তিত বা উদ্বিগ্ন নই। ইতোমধ্যে সারা বাংলাদেশে যে জাগরণের ঢেউ নির্বাচনকে সামনে রেখে, ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা মানুষের মাঝে। তাতে ভোটার উপস্থিতি নিয়ে আমরা চিন্তিত নই।
'আমরা জানি, তারা যত বাধাই সৃষ্টি করুক, মানুষ নির্বাচনমুখী। মানুষ ভোট দিতে চায়। মানুষের ভোটাধিকার প্রয়োগে যারা বাধা দেবে, জনগণই তাদের বাধা দেবে। ভোটাররাই তাদের প্রতিহত করবে,' বলেন তিনি।
বিএনপির সমালোচনা করে কাদের বলেন, 'আজকে তারা চোরাগোপ্তা পথ বেছে নিয়েছে। অগ্নি সন্ত্রাস চালাচ্ছে। বাসের নিরীহ হেলপারকে আগুনে পুড়িয়ে মারছে। যেখানে-সেখানে আগুন দিচ্ছে। বাস পোড়াচ্ছে, ট্রেনে আগুন দিচ্ছে, নাট-বোল্ট খুলে ফেলছে—এসব অন্ধকারের অনেক অপকর্ম তারা করে যাচ্ছে।'
নির্বাচন শেষ পর্যন্ত সম্পন্ন হবে এবং বিএনপি এ কথা ভালো করেই জানে, তারা বাধা দিয়ে নির্বাচন পণ্ড করতে পারবে না মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'যে খারাপ মতলব নিয়ে তারা এ নির্বাচনের বিরোধিতা করে, তাদের সে উদ্দেশ্য সার্থক হবে না। এটা এর মধ্যে প্রমাণ হয়ে গেছে। আমাদের বিদেশি বন্ধুরা বুঝতে পেরেছেন যে, বাংলাদেশে একটা শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে এখন পর্যন্ত দেশে কোথাও সংঘাত-সংঘর্ষ-সহিংসতা; নির্বাচনের প্রার্থীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কোনো ঘটনা ঘটে নাই।
'যেটুকু হচ্ছে, সেটুকু নাশকতা এবং সেটা বিএনপি ও তার দোসররাই করে যাচ্ছে। নাশকতা পরাজিত হবে, জনগণের শক্তি বিজয়ী হবে। যুগে যুগে, দেশে দেশে, এটাই সত্য বলে প্রমাণিত হয়েছে। বাংলাদেশেও এর ব্যতিক্রম হবে না,' যোগ করেন তিনি।
আগামী ১০ ডিসেম্বর বিএনপি সমাবেশ করবে। একই দিনে আপনারাও সমাবেশ করতে যাচ্ছেন। এই সমাবেশকে ঘিরে কিন্তু আবারও সমালোচনা হচ্ছে, মানুষের মধ্যে আলোচনা হচ্ছে—গণমাধ্যমকর্মীরা দৃষ্টি আকর্ষণ করলে কাদের বলেন, 'কয়েক মাসব্যাপী এই শহরে বিএনপি সমাবেশ করেছে, আমরাও করেছি। আপনারা পাল্টাপাল্টি বলে নিউজ করেছেন কিন্তু পাল্টাপাল্টি, মারামারি কোথাও হয়নি।
'এখানে এক দলের সঙ্গে অন্য দলের কোনো সংঘাত হয়নি। তারা এই ঢাকা শহরে পদযাত্রা করেছে। পাশে আমাদের সমাবেশ। এখানে তো কোনো বিশৃঙ্খলা হয়নি! আর ১০ তারিখ হলো বিশ্ব মানবাধিকার দিবস। আমরা তো নির্বাচন কমিশনের কাছে অনুমতি চেয়েছি; আমরা সমাবেশ করতে চাই। এখানে পাল্টাপাল্টির কী হলো,' প্রশ্ন রাখেন কাদের।
তিনি আরও বলেন, 'মানবাধিকার দিবস পালন করব এটা আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার এবং এখানে কোনো পাল্টাপাল্টির বিষয় নেই।'
এক প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, 'একটা বিষয় পরিষ্কার, বিএনপি সিদ্ধান্ত নিয়েই এই নির্বাচন বয়কট করেছে। এখন আমরা কি করতে পারি?
'নির্বাচনে তো তারা স্বেচ্ছায় আসছে না। সেখানে আমরা জোর করে তাদের নির্বাচনে আনব? আমরা বাংলাদেশের সংবিধান মেনে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। নির্বাচন কমিশন এই নির্বাচন পরিচালনা করছে। কাজেই, আমাদের চলার পথে আমরা গণতন্ত্র বা পৃথিবীর গ্রহণযোগ্য নির্বাচন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে আমরা কোনো নতুন কিছু করছি কি না?'
তিনি বলেন, 'আমরা শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাই। নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করেছে। মনোনয়নপত্র জমা হয়েছে। আমরা ইলেকশন ক্যাম্পেইন করছি। এখানে আমাদের ক্ষতি কেন হবে? আমরা তো এখানে জোর করে এ নির্বাচনে যাচ্ছি না। আমরা তো সংবিধান মেনে নির্বাচনে যাচ্ছি।'
Comments