রাজনীতি

‘এরশাদের স্ত্রী-সন্তানকেও মনোনয়ন দেয়নি, তাদের সঙ্গে জোট প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন দেখব’

‘যদি অ্যালায়েন্স করতে হয়, তাহলে আমাদের সঙ্গে আলাপ করতে হবে। আমরাও অ্যালায়েন্সের ভাগীদার হতে পারি।’
moshiur rahman ranga
গণভবনে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন মসিউর রহমান রাঙ্গা। ছবি: সংগৃহীত

জিএম কাদেরের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি (জাপা) থেকে দলটির প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ, ছেলে সাদসহ আরও নেতাদের নির্বাচনে মনোনয়ন না দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেখবেন বলে জানিয়েছেন দলটির সাবেক মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক শেষে টেলিফোনে দ্য ডেইলি স্টারকে তিনি এ কথা জানান।

বৈঠক বিষয়ে জানতে চাইলে সংসদের বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মসিউর রহমান বলেন, বৈঠকে রওশন এরশাদ বলেছেন, আমি দলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের পত্নী, বিরোধী দলীয় নেতা, আমাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। আমার ও এরশাদের ছেলেকে (সাদ) তারা মনোনয়ন দেয়নি। ওই জায়গায় তিনি (জিএম কাদের) নিজে দাঁড়িয়েছেন। চেয়ারম্যান যদি বৈষম্য করেন, সাদ কী দোষ করেছে যে তাকে মনোনয়ন দেওয়া হবে না। এরকম আরও অন্তত দেড়শ কর্মীকে মনোনয়ন দেওয়া হয় নাই। সুতরাং আপনি কার সঙ্গে অ্যালায়েন্স করবেন, আমার সঙ্গে করবেন না ওদের সঙ্গে।

'প্রধানমন্ত্রী তখন বলেছেন, ঠিক আছে, ব্যাপারটি নিয়ে আমরা ভাবব, আমরা দেখব। যেহেতু আপনি বলছেন দল ভেঙে গেছে, দল যদি ভেঙে থাকে, তাহলে তো ভেঙে গেছে', বলেন মসিউর রহমান রাঙ্গা।

গণভবনের বৈঠক শেষে রাঙ্গা সাংবাদিকদের বলেন, তিনি (রওশন) হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের পত্নী, তিনি দল পরিচালনা করেছেন, তিনি জেল খেটেছেন আড়াই বছর। সাদ আমার পাশে দাঁড়িয়ে আছে, সেও আড়াই বছর জেলে ছিল। ছোটবেলা থেকে জেলে ছিল। এমপি হওয়ার অধিকার তো এরশাদ সাহেবের সন্তানের রয়েছে। সে (জিএম কাদের) তো চাচা হিসেবে তাকে (সাদ) ভাতিজাই মনে করে। সুতরাং সেই আসনে তিনি নিজে দাঁড়িয়েছেন। এটা তো একটা নেতৃত্বসুলভ আচরণ হলো না। তিনি আত্মীয়র সঙ্গে সমস্যা করলেন। তার ভাবির সম্পর্কেও তিনি কুমন্তব্য করেন। তার মহাসচিব (মুজিবুল হক চুন্নু) তিনিও করেন। আমার সম্পর্কেও অনেক গিবত তারা করেন। করুক, রাজনীতি করতে গেলে আমাদের শুনতে হয় এগুলো।

'আমি মনে করি, তিনি (রওশন) আসছিলেন যে, আমাকে যখন মনোনয়ন দেওয়া হয়নি এবং দলের আরও এরকম নেতাকর্মী, অন্তত আড়াই থেকে ৩০০ নেতাকর্মীকে তারা (জিএম কাদের) বহিষ্কার করেছে এবং তাদের কাউকেই তারা মনোনয়ন দেয়নি। আমি সত্যি করে বলছি যে, আমার একমাত্র মেয়ে সেখানে গিয়েছিল, আমার ভাতিজি সেখানে গিয়েছিল, তাদেরকে অপমান করেছে। মনোনয়ন তো দেয়নি, বরং তাদেরকে অপমান করেছেন। সেখানে কো-চেয়ারম্যানরা সবাই বসা ছিল। তাদের সামনেই করেছে। তারা সাক্ষী আছে। আপনারা তাদের জিজ্ঞাসা করলে বলতে পারবে।'

মসিউর রহমান রাঙ্গা আরও বলেন, এখন কথা হলো হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের সন্তান সাদ যদি মনোনয়ন না পায়, বেগম রওশন এরশাদ হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের স্ত্রী, তিনি যদি মনোনয়ন না পান, আমি দুই দুইবার দলের মহাসচিব, আমি যদি মনোনয়ন না পাই, তাহলে কাদেরকে নিয়ে তারা নির্বাচন করছেন, আমরা এ ব্যাপারে সংকীর্ণ। সেই কারণে আমরা চাই ওই জাতীয় পার্টির সঙ্গে আমরা, আমাকে তো তারা সাসপেন্ড করেছে, আমি সাসপেন্ড আছি, আমরা চাই ওদের সঙ্গে আমরা থাকব না। আমাদের বিরোধী দলীয় নেতা বলেছেন, যেহেতু জাতীয় পার্টির সঙ্গে কোনো সম্পর্ক আমাদের রাখেনি তারা, সুতরাং তারা তাদের মতো নির্বাচন করবে। দেশব্যাপী তারা নির্বাচন করুক, উৎসবমুখর নির্বাচন হোক। কিন্তু যদি অ্যালায়েন্স করতে হয়, তাহলে আমাদের সঙ্গে আলাপ করতে হবে। আমরাও অ্যালায়েন্সের ভাগীদার হতে পারি।

সাক্ষাতে প্রধানমন্ত্রী কী বলেছেন, গণমাধ্যমকর্মীরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তিনি তার পরিষদ নিয়ে বসবেন। পরিষদ নিয়ে বসে আলোচনা করে তিনি সিদ্ধান্ত দেবেন।

Comments