এই ইলেকশনে গণতন্ত্র আরও পারফেক্ট হবে: কাদের

‘স্বতন্ত্র প্রার্থী নিয়ে আপস করার কোনো সুযোগ নেই।’
এই ইলেকশনে গণতন্ত্র আরও পারফেক্ট হবে: কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের | ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশের গণতন্ত্র ত্রুটিমুক্ত হবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের তিনি এ কথা বলেন।

বাসে ট্রাকে আগুন দিয়ে, ট্রেনে নাশকতা করে, আগুন-সন্ত্রাস করে বিএনপি দেশে কোন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চায় প্রশ্ন তুলে ওবায়দুল কাদের বলেন, 'এটা নির্বাচন বিরোধী ষড়যন্ত্র। দেশে ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, নাশকতার মাধ্যমে এই নির্বাচনকে বানচাল করতে আজকে তারা গভীর ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। কিছু মেকওভার প্ল্যানও আছে তাদের। তারা চায় গুপ্ত হত্যা, গুপ্ত হামলা। আজকে বাসে-ট্রেনে আগুন দিয়ে নাশকতা সৃষ্টি বিএনপি ও তার দোসররা করতে চায়।

'আমরা সতর্ক পাহারা আরও জোরদার করছি। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার দায়িত্ব আছে, তারা তাদের দায়িত্ব পালন করবে। পাশাপাশি এই নির্বাচন আমাদের সফল করতে হবে। এই নির্বাচন শান্তিপূর্ণ করতে হবে এবং ব্যাপক ভোটারের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। সেই লক্ষ্যে আমরা, আমাদের পার্টি, আমাদের সমমনা দলগুলো সবার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে যাচ্ছি। এই নির্বাচনকে যাতে অবাধ, সুষ্ঠু এবং বিশ্বাসযোগ্য করা যায়। নির্বাচন শান্তিপূর্ণ করতেই হবে,' যোগ করেন কাদের।

তিনি আরও বলেন, 'দেশের মানুষকে ভয়-ভীতির মধ্যে রাখতে আজকে বিএনপি ও তার দোসররা যে চক্রান্ত করছে, এর মধ্যে ভোটার উপস্থিতি আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচনকে সামনে রেখে সারা দেশে তারা যতই নাশকতা করুক, মানুষ কিন্তু নির্বাচনমুখী হয়ে দাঁড়িয়েছে। মানুষ ভোট দিতে উন্মুখ। একটা উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।'

কাদের বলেন, 'অনেকে ভেবেছিল যে, বড় একটা দল নেই, দুইটা দল নেই, নির্বাচনের পরিবেশ ম্লান হয়ে যাবে। ভোটার উপস্থিতি থাকবে না। ভোট উপলক্ষে সারা দেশে জাগরণের ঢেউ থাকবে না। এখন পর্যন্ত আমরা জানি, নির্বাচন কেন্দ্রিক উৎসবমুখর পরিবেশ দেশে অব্যাহত রয়েছে। ৭ জানুয়ারি বাংলাদেশে ব্যাপক ভোটারের উপস্থিতিতে একটা ভালো নির্বাচন হবে। আমরা ক্রমেই গণতন্ত্রকে ত্রুটিমুক্ত করার পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছি। এই ইলেকশনে গণতন্ত্র আরও পারফেক্ট হবে।

'আমাদের গণতন্ত্র বা পৃথিবীর কোনো দেশের গণতন্ত্র ত্রুটিমুক্ত এ কথা কেউ দাবি করতে পারবে না। পারফেক্ট কেউ না, তবে এই পরিপূর্ণতা অর্জন করতে, পারফেক্ট হতে আমাদের ত্রুটি-বিচ্যুতি যা আছে, এবার আমরা সেসব বিষয়গুলোকে দূর করে আমরা গণতন্ত্রের যাত্রা পথকে আরও মসৃণ করব,' বলেন তিনি।

কাদের বলেন, 'অনেকে অনেক কথা বলবেন আমাদের অ্যালায়েন্স নিয়ে, জোট নিয়ে। বিভিন্ন ধরনের শঙ্কা, বিভিন্ন ধরনের গুঞ্জন, গুজবও আছে। গুজব তো এখন আমাদের রাজনীতির অংশই হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা সতর্ক আছি, গুজব-গুঞ্জন, সন্ত্রাস-সহিংসতা আমাদেরকে বিভ্রান্ত করতে পারবে না। আমরা বিচলিত হবো না। আমরা জেনে-শুনেই এ চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করতে এ নির্বাচন করতে যাচ্ছি।

'আমাদের সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা আমরা রক্ষা করব। বাংলাদেশের নির্বাচন প্রলম্বিত হবে, বিঘ্নিত হবে—এটা আমরা হতে দেবো না। নির্বাচন যথা সময়ে অনুষ্ঠিত হবে,' বলেন তিনি।

নির্বাচনে জাতীয় পার্টির অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে কাদের বলেন, 'বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কারও নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ আমরা রাখিনি। আওয়ামী লীগের পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থীরা আছে, অন্যান্য দলও আছে। এবারের নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কারও নির্বাচিত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাচনী এলাকায় চার জন প্রতিদ্বন্দ্বী। আমি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, আমার এলাকায়ও চার জন প্রতিদ্বন্দ্বী।'

গতকালও আপনারা জাতীয় পার্টির সঙ্গে বৈঠক করেছেন, তাহলে কি শঙ্কা দূর করা গেল না—গণমাধ্যমকর্মীদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'জাতীয় পার্টি আমাদের বলে গেছে তারা নির্বাচন করতে চায়। অ্যালায়েন্সে থাকতে চায়। তারা তো বলেনি যে, তারা সরে যাবে। শঙ্কা-আশঙ্কা থাকতে পারে।

আমরাও এ ব্যাপারে নিশ্চিন্ত হতে চাই, ১৭ তারিখের মধ্যে। সে পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করি, অস্বস্তির কোনো কারণ নেই। এখানে একটা নতুন অভিজ্ঞতা আমাদের গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে এসেছে। নতুন অভিজ্ঞতা নেওয়ার, বাস্তবতার মুখোমুখি হওয়ার। কাজেই, গণতন্ত্রের এটা আরেকটা নতুন অভিজ্ঞতা। এ অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে হলে শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এ নিয়ে অহেতুক অস্থিরতার কোনো কারণ নেই।'

স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'স্বতন্ত্র প্রার্থী আমি স্পষ্ট বলেছি, যারা অ্যালায়েন্স হতে আলোচনা করছেন, তাদেরকেও আমরা জানিয়েছি—স্বতন্ত্র প্রার্থীদের আমরা উঠাতে পারব না। এখন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা এখন নির্বাচন কমিশনের আওতায়। এখানে যে আচরণবিধি, তাতে আমরা জোর-জবরদস্তি করে উঠাতে পারি না। এটা আচরণবিধির বিরুদ্ধে যায়। কাজেই এ ব্যাপারে আমরা পরিষ্কার করে দিয়েছি। এখানে কোনো আপস করার সুযোগ নেই।'

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

8h ago