‘ট্রাক’ খাদে পড়ে যাবে বললে আমারই প্রচার হবে: মাহিয়া মাহি

‘আমার এলাকার মানুষ আসলে এ রকম করে বসে আছে ভোট দেওয়ার জন্য; তারা কখন ভোট দেবে এবং তারা সেবক আনবে।’
‘ট্রাক’ খাদে পড়ে যাবে বললে আমারই প্রচার হবে: মাহিয়া মাহি
চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি | ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে শত ভাগ আশাবাদী বলে জানিয়েছেন ঢাকাই সিনেমার চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি।

স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে রাজশাহী-১ আসনে প্রতীক বরাদ্দ পেয়ে আজ সোমবার সকালে রাজশাহীতে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তার নির্বাচনী মার্কা 'ট্রাক'।

মাহি বলেন, 'আমাদের যারা নানি-দাদিরা আছে তারা ট্রাকটা দেখলে চিনতে পারবেন। আমি জানি আজকের পর থেকে এই আসনে সবাই মোটামুটি যারা আমার বিরুদ্ধে আছে সবাই আমাকে পচানোর চেষ্টা করবেন যে, ট্রাক খাদে পড়ে যাবে; চাকা পাংচার হয়ে যাবে—এ রকম যখন আমাকে পচানোর চেষ্টা করা হবে, তখন তারা আসলে আমার প্রচারণা বেশি বেশি করবে। মানুষের মাথায় ঢুকিয়ে দেবে যে, ট্রাকটা আমার প্রতীক। আমার কাছে মনে হচ্ছে, ট্রাকটা আমার কাছে বেস্ট।'

জয়ের ব্যাপারে শত ভাগ আশাবাদী জানিয়ে মাহি বলেন, 'আমার এলাকার মানুষ আসলে এ রকম করে বসে আছে ভোট দেওয়ার জন্য; তারা কখন ভোট দেবে এবং তারা সেবক আনবে।

'এখানে পরিবর্তন তারা চায়। তারা চায় না তাদের ধামকি দেওয়া হোক। তারা চায় বঙ্গবন্ধুর মতো একজন বন্ধুসুলভ নেতা। সে সুযোগ পাবে তার পাশে ভাত খাওয়ার মতো, তাকে ধরার সুযোগ পাবে, কোনো বিপদ হলে তার কাছে যাওয়ার সুযোগ পাবে,' যোগ করেন তিনি।

তিনি বলেন, 'আমাদের এখন যারা নেতারা আছেন, ইনারা তো অনেক বড়লোক আছেন, অনেকে অনেক প্রভাবশালী। তাদের ড্রইং রুম পর্যন্ত যাওয়ার সুযোগ আসলে আমার গ্রামবাসী পায় না। আমি তাদের কাছাকাছি থাকব—তারা এটা জানে। তার জন্য তারা আমাকে ভোট দেবে ইনশাল্লাহ এবং আমি জয়ী হবো।'

আপনি বললেন এখানে অনেকে প্রভাবশালী, তাহলে আপনি কীভাবে জয়ী হবেন জানতে চাইলে গণমাধ্যমকর্মীদের মাহি বলেন, 'জনগণের চেয়ে প্রভাবশালী কেউ হতে পারে না।'

কী বলে ভোট চাইবেন, কী কী প্রতিশ্রুতি দেবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'সারা বাংলাদেশে যেমন গণতন্ত্র আছে, এই এলাকায় মানুষের কোনো স্বাধীনতা নেই। কথা বলার স্বাধীনতা নেই। তাদের এলাকায় যে একটা রাস্তা নেই, যে দাঁড়িয়ে বলবে আমার এলাকায় একটা রাস্তা করে দেন—সেটা বললে তাকে অপমানিত হতে হয়। মানুষের কাছে ধমক খেতে হয়। আমার মনে হয় যে, তারা এ রকমটা চায় না।'

নির্বাচনী মাঠ কেমন দেখছেন জানতে চাইলে মাহি বলেন, 'পরিবেশ আজকে থেকে বোঝা যাবে। আজকে থেকে প্রচারণা শুরু হবে। আমরা যখন প্রচারণা চালাব তখন দেখব কত রকমের বাধা আসে। তখন আসলে বুঝতে পারব।'

বাধা কেন আসবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'বাধা তো আসবেই! কেউ কি চাইবে যে, আসন ছেড়ে দেই বা অন্য কেউ চলে আসুক। এটা তো কেউ আসলে চাইবে না। বাধা তো দেবেই।'

আপনি কোনো বাড়তি সুবিধা পাবেন কি না প্রশ্ন করা হলে মাহি বলেন, 'আপনি যদি একটা অজ পাড়াগ্রামে যান, সেখানে তো মানুষ আপনারাকে চিনবে না কিন্তু আমি যদি যাই, সেখানে আমাকে তারা চিনবে। কারণ এখন ডিজিটাল যুগ। প্রত্যেকের ঘরে মোবাইল আছে, ইন্টারনেট আছে। সেই ইন্টারনেটে তারা আমার একটা হলেও গান দেখেছে। তারা আমাকে চেনে। আমি যখন তাদের কাছে যাব সেই মা-বোনদের কাছে, তারা আমাকে না জড়িয়ে ধরে। এইটাই আমার অ্যাডভানটেজ।'

আপনি নির্বাচিত হলে কৃষকদের জন্য কী করবেন—গণমাধ্যমকর্মীরা জানতে চাইলে মাহি বলেন, 'এই যে ডিপের (ডিপ টিউবওয়েল) একটা ব্যবস্থা, এটা স্বজনপ্রীতি আমি করব না। যাদের যেখানে দরকার সে অনুযায়ী আমি ব্যবস্থা করব। কৃষকরা যাতে সর্বোচ্চ সুবিধা নিয়ে কৃষিকাজ চালাতে পারে সেটার ব্যবস্থা করব।

'নারীরা যাতে ঘরে বসে বসে ইন্টারনেটের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হতে পারে। তরুণরা যাতে শুধুমাত্র চাকরির পেছনে না ছোটে, জজ-ব্যারিস্টার শুধু না হতে চায়; তারা যাতে উদ্যোক্তা হয় সেটা নিয়ে কাজ করব,' বলেন তিনি।

রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনকে অনুসরণ করে রাজশাহী-১ আসন সাজাতে চান বলেও এ সময় জানান মাহি।

একজন গণমাধ্যমকর্মী প্রশ্ন করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের কী ধরনের অনুপ্রেরণা দিয়েছেন; জবাবে মাহি বলেন, 'উনি প্রেরণা দিয়েছেন যে, এখানে শত ভাগ সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। এটার কোনো দ্বিমত নেই। এখানে কোনো নাশকতা হলে, যদি দলীয় কেউ নাশকতা করে সে ক্ষেত্রে তারা অ্যাকশন নেবেন।'

এ রকম কোনো আশঙ্কা আছে কি না জানতে চাইলে মাহি বলেন, 'একদমই নেই। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, যে যার মতো নির্বাচন করবে।'

Comments