বিএনপি লগি-বৈঠার না, সভ্য মানুষের রাজনীতি করে: মঈন খান

তিনি বলেন, ‘নিয়মতান্ত্রিক শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা নিরস্ত্র জনসাধারণ রাজপথে থেকে, সরকারের বন্দুক-বুলেটকে মোকাবিলা করে, সরকারকে পরাজিত করে বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনব।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান। স্টার ফাইল ছবি

গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে বিএনপি রাজপথে থেকে আন্দোলন চালিয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে এক আলোচনাসভায় তিনি এ কথা বলেন। রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৮৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপির এই আলোচনাসভা হয়।

আবদুল মঈন খান বলেন, 'আমাদের এই সংগ্রাম গণতন্ত্র পুণরুদ্ধারের সংগ্রাম। যেহেতু গণতন্ত্র এমন সমাজ ব্যবস্থার কথা বলে যে সমাজ ব্যবস্থা একটি শান্তিপূর্ণ নিয়মতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা, সেই কারণে নীতিগতভাবে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামও অবশ্যই শান্তিপ্রিয় ও নিয়মতান্ত্রিক হতে হবে।'

তিনি বলেন, 'নিয়মতান্ত্রিক শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা নিরস্ত্র জনসাধারণ রাজপথে থেকে, সরকারের বন্দুক-বুলেটকে মোকাবিলা করে, সরকারকে পরাজিত করে বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনব। জনগণের সরকার আমরা এদেশে প্রতিষ্ঠা করব। জনগণই বিএনপির শক্তি। সেই শক্তি দিয়ে বর্তমান বাকশাল-২ সরকারের বন্দুক শক্তি, বুলেটের শক্তি, টিয়ার গ্যাসের শক্তি, জলকামানের শক্তি অথবা যত রকমের শক্তি আছে সেগুলোকে আমরা পরাভূত করব, এটাই আমাদের প্রতিজ্ঞা।'

তিনি আরও বলেন, 'খালেদা জিয়া আশির দশকে আন্দোলন আমাদেরকে শিক্ষা দিয়েছেন, জিয়াউর রহমানের আদর্শের কথা আগেই বলেছি এবং আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হাজার হাজার মাইল দূরে থেকেও আমাদের আন্দোলনের নেতৃত্ব এবং শিক্ষা দিচ্ছেন সেটা আমি আরও স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই। বিএনপি একটি উদারনৈতিক শান্তিপ্রিয় রাজনৈতিক দল। আমরা শান্তির রাজনীতিতে বিশ্বাসী এবং আমরা শান্তির আন্দোলনের বিশ্বাস করি।'

মঈন খান বলেন, 'বিএনপি লগি-বৈঠার রাজনীতি করে না। বিএনপির সভ্য মানুষের রাজনীতি করে। এখানেই আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপির তফাত। হতে পারে আমাদের আন্দোলনের পথ অনেক দীর্ঘ। আজকে দেশে গণতন্ত্র নেই। আমরা আজকে জিয়াউর রহমানের জন্মদিন শপথগ্রহণ করব, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, যারা গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে, সেই গণতন্ত্রকে আমরা এদেশে পুনরুজ্জীবিত করব।'

তিনি আরও বলেন, 'সরকার দাবি করতে পারে তারা একটা সাজানো প্রহসনের নির্বাচন করে ৩০০ সিটের পার্লামেন্টে ৬০০ সংসদ সদস্য সৃষ্টি করে, তাড়াহুড়া করে নতুন একটি ক্যাবিনেট সৃষ্টি করে আবার ক্ষমতায় এসেছে। তারা ক্ষমতা নিয়ে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী মানুষকে পরানত করে রাখবে। কিন্তু বাস্তবত কী সেটা আপনাদের বুঝতে হবে।'

'বাস্তবতা হলো বাংলাদেশের ১২ কোটি ভোটার, ১৮ কোটি মানুষ ৭ জানুয়ারি এই সরকারকে বর্জন করেছে। এটা শুধু আমাদের কথা নয়, সারা বিশ্বের গণতন্ত্রকামী দেশগুলোর কথা। আমেরিকা-যুক্তরাজ্যের বক্তব্য, কানাডার বক্তব্য, অস্ট্রেলিয়ার বক্তব্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বক্তব্য, জাতিসংঘের বক্তব্য দেখুন। পাশাপাশি বিশ্বের যে মানবাধিকার সংস্থাগুলো রয়েছে, বিশ্বের যে সুশীল সমাজ রয়েছে এবং বিশ্বের যে বেসরকারি সংস্থাগুলো রয়েছে তারা প্রত্যেকে ৭ জানুয়ারির নির্বাচনকে ভুয়া পাতানো নির্বাচন ঘোষণা দিয়েছে। শুধু তাই নয়, দেশি-বিদেশি নামিদামি গণমাধ্যমেও বাংলাদেশের নির্বাচনের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে', যোগ করেন তিনি।

এবারও আন্দোলনে বিজয় আসবে উল্লেখ করে স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, 'এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে অনেক দিন লড়াই হয়েছে। অনেকে বিশ্বাসই করতে চায়নি যে, এরশাদের পতন সম্ভব। কিন্তু দেখা গেল ঠিকই পতন হয়েছে। এবারও হবে।'

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমানের সভাপতিত্বে সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ ও বিএনপি সহ-প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম আলিমের সঞ্চালনায় আলোচনাসভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, আবদুল আউয়াল মিন্টু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য জয়নুল আবদিন ফারুক, মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কামরুল আহসান বক্তব্য দেন।

Comments