‘ক্ষমতা টেকাতে বিদেশি শক্তির হস্তক্ষেপ ও অন্যায় আবদার মেনে নিচ্ছে সরকার’

‘৭ জানুয়ারি যে নির্বাচন হলো তা প্রহসনের নতুন মাত্রা দেখাল। এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নীতিহীন রাজনীতির চেহারা জনসম্মুখে আরেকবার ফুটে উঠল।’
ছবি: সংগৃহীত

বাম জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেছেন, `যে ব্যবস্থায় এক শতাংশ মানুষ ভোট দিলে ওই ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের বৈধ বলা হয়, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন না হলেও তাকে বৈধ বলা হয়, নির্বাচন টাকাওয়ালা ও ক্ষমতাধরদের হাতে বন্দি থাকে সেই ব্যবস্থার পরিবর্তন ছাড়া ভালো নির্বাচন এবং যোগ্যতম নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি আশা করা যায় না। তাই পুরো নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার ছাড়া নির্বাচনে জনমতের প্রতিফলন ঘটবে না।'

তিনি বলেন, '৭ জানুয়ারি যে নির্বাচন হলো তা প্রহসনের নতুন মাত্রা দেখাল। এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নীতিহীন রাজনীতির চেহারা জনসম্মুখে আরেকবার ফুটে উঠল। এ অবস্থা থেকে রাজনীতি বাঁচাতে নীতিনিষ্ঠ বাম গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক শক্তির বিকল্প শক্তি সমাবেশ গড়ে তোলা ছাড়া মানুষের মুক্তি আসবে না। এজন্য নীতিহীন রাজনীতির বিপরীতে নীতিনিষ্ঠ রাজনীতির পতাকাতলে সচেতন দেশবাসীকে সমবেত হতে হবে।'

বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ বলেন, 'রাজনৈতিক সংকটের পাশাপাশি দেশে অর্থনৈতিক সংকট তীব্র হচ্ছে। নিত্যপণ্যের দাম লাফিয়ে বাড়ছে। বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির মূল্যবৃদ্ধির নানা প্রক্রিয়া চলছে।'

সমাবেশে অন্যান্য নেতারা বলেন, 'অধিকাংশ মানুষের হাতে টাকা নেই। কম খেয়ে বেঁচে আছে। ঠিকমতো শিক্ষা, চিকিৎসা করতে পারছে না। কিন্তু অন্যদিকে একাংশ টাকার পাহাড় গড়ছে। টাকা পাচার হচ্ছে, খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েই চলছে। প্রতিটি মানুষের কাঁধে বিদেশি ঋণের বোঝাও বেড়ে চলছে।'

বাজার সিন্ডিকেট ভাঙাসহ রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে নিত্যপণ্যের বাফার স্টক গড়ে তোলা এবং সারাদেশে রেশনিং ব্যবস্থা চালুর দাবি জানান তারা।

সীমান্তে বিজিবি সদস্য নিহতের তীব্র নিন্দা জানিয়ে নেতারা বলেন, 'সরকারের নতজানু নীতির কারণে এ ধরনের সীমান্ত হত্যা ঘটেই চলেছে। নিজেদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে বিদেশি শক্তির হস্তক্ষেপ ও অন্যায় আবদার মেনে নিয়ে সরকার দেশ পরিচালনা করছে, যা স্বাধীন সার্বভৌম দেশের প্রতি হুমকি।'

বাম গণতান্ত্রিক জোটের আহবানে দেশব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশের কর্মসূচিতে আজ শনিবার বিকেল ৪টায় ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে রুহিন হোসেন প্রিন্সের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদমণ্ডলীর সদস্য নজরুল ইসলাম, বাসদ মার্কসবাদীর সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী। সমাবেশ পরিচালনা করেন সিপিবির সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ।

সমাবেশে আগামীকাল ২৮ জানুয়ারি থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সারাদেশে মতবিনিময়সহ সভা-সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। সভায় বলা হয়, সরকার জনগণের দাবি উপেক্ষা করে মূল্যবৃদ্ধি, লুটপাট অব্যাহত রাখলে আগামীতে ঘেরাওসহ নানা কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল ঢাকার বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

Comments

The Daily Star  | English

Ban on plastic bags a boon for eco-friendly sacks

Availability of raw materials now a challenge

6h ago