একটা নারী জাগরণ ঘটে গেছে বাংলাদেশে: প্রধানমন্ত্রী

আমার মা-ভাইয়েরা জীবন দিয়ে গেছে, প্রয়োজনে আমিও বুকের রক্ত ঢেলে দেবো: প্রধানমন্ত্রী
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা | ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া

বাংলাদেশে নারী জাগরণ ঘটে গেছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মেয়েদের যেখানে দিই, সেখানেই তারা সাফল্যের সঙ্গে কাজ করে।

নারী ভোটারদের দৃষ্টিভঙ্গিও পাল্টে গেছে বলে এ সময় জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ কাজের মধ্য দিয়ে মানুষের মন জয় করেছে।

আজ বুধবার সকালে গণভবনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'মেয়েদের যেখানে দিই, সেখানেই তারা সাফল্যের সঙ্গে কাজ করে। এ জন্য অনেকে একটু হিংসা হিংসাও করে, তা ঠিক। তবে আমাদের মেয়েদের ভেতরে যে আত্মবিশ্বাস এবং শিক্ষায়-দীক্ষায় মেয়েরা যে আরও উন্নত হবে, সেটাই বড় কথা।'

তিনি বলেন, 'আজকে আমাদের প্রাইমারিতে ৯৮ ভাগ শিক্ষার্থী মেয়ে। এখন কিন্তু কোনো মেয়ে ঘরে বসে থাকে না। একটা সময় ছিল, বাবা-মা পড়াতে চাইতো না বেশি; বেশি পড়িয়ে কী হবে, বিয়ে হয়ে যাবে, শ্বশুর বাড়ি চলে যাবে, আমাদের কী লাভ!'

নারী ক্ষমতায়নে আওয়ামী লীগের নেওয়া নানা উদ্যোগ তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, 'আমরা মাত্র ৪৮টি সিটের জন্য যখন দেখলাম, এক হাজার ৫৫৩ জন; এটার মানে কী? একটা নারী জাগরণ ঘটে গেছে বাংলাদেশে। আমি জানি, যারা দরখাস্ত করেছেন, অনেকে জানেন যে হয়তো পাবেন না। তারপরও যেটাকে বলে একটু ইট বিছিয়ে রাখা—মানে আমরা আছি। নিজের অস্তিত্ব জানান দেওয়া। হ্যাঁ, আমরা যোগ্য, আমরা পারি। আমি এটা বিশ্বাস করি, সবাই যোগ্য। কেউ অযোগ্য নয়। তবে কঠিন একটা কাজ আমাদের ওপর পড়ল।

'আমি এইটুকু অনুরোধ করব, এখনো যদি কেউ পড়ে থাকে পেছনে তাকে টেনে আনার দায়িত্ব কিন্তু এই রাজনৈতিক নেতৃত্বের। আমাদের এই বোনেরাই পারবে। কাউকে আমরা পেছনে ফেলে চলবো না। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যাব,' বলেন তিনি।

নারী নেত্রীদের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, 'আন্তরিকতা, দরদ না থাকলে; শুধু আমি নিজে কী পেলাম, পেলাম সেই চিন্তা করলে কিন্তু কখনো নিজেও উঠতে পারবে না বা কাউকে টেনে তুলতেও পারবে না। সেই কথাটা কিন্তু সবাইকে মনে রাখতে হবে।'

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, 'আমাদের নারীদের কিন্তু অনেক দায়িত্ব রয়েছে। আমি জানি, আমরা এত জনের মধ্যে দিতে পারব মাত্র ৪৮ জন। কিন্তু যে যেখানে আছে, তাদের নেতৃত্বে দেওয়ার যে আকাঙ্ক্ষা, নমিনেশন না পেলেও যেন হারিয়ে না যায়। এটা কিন্তু ধরে রাখতে হবে। ধরে রেখে নিজের স্থান নিজেকে করে নিতে হবে। একটা কথা মনে রাখতে হবে, কেউ কিন্তু জায়গা করে দেয় না, জায়গাটা করে নিতে হয়। জায়গাটা করে নিতে হবে।'

তিনি বলেন, 'আমাদের ৩০০ সিটের নির্বাচন কিন্তু উন্মুক্ত। সেখানে মেয়ে ক্যান্ডিডেট পাওয়া কিন্তু খুব কষ্টকর। অনেকেই চান, আমরা দেখেছি সবাই পারেন না। সেই ক্ষেত্রে আমরা চাই, ভবিষ্যতে যেন আরও বেশি মেয়েদের সরাসরি ভোটে আমরা প্রার্থী করতে পারি।'

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, 'এবারের নির্বাচনে সব থেকে একটা লক্ষণীয় বিষয় হলো—আমাদের মেয়েরা অনেক বেশি ভোট দিয়েছে। লাইনে এসে দাঁড়িয়ে তারা ভোট দিয়েছে। এক সময় কিন্তু এই অবস্থাটা ছিল না। এমনো কথা শুনতে হয়েছে যে, আওয়ামী লীগরে কী ভোট দেবে! আওয়ামী লীগ ভোট পাওয়ার না। আবার কেউ কেউ ছিল, জিজ্ঞেস করছি, কাকে ভোট দেবেন? কেন! একটা নাম বলেই বলছে। আমি বললাম, কেন দেবেন? সৌন্দর্য আছে, ফরীর লাহান দেখায়। আমি কালাকুলা মানুষ, আর ফরীর লাহানও দেখাই না, সাজুগুজুও করি না, কাজেই সৌন্দর্যও নাই—ভোট পাব কী!

'এখন কিন্তু তা না। এখন পরিবর্তন হয়ে বলছে, হাসিনাকে ভোট দেবো। হাসিনাকেই ভোট দেবো। এই যে পরিবর্তনটা, এটা কেন আসছে? এটা তো আমার কাজের মধ্য দিয়ে মানুষের মন জয় করে। আপনাদেরকেও নেতৃত্ব দিতে হলে, কে কী বানিয়ে দেবে, সেই আশায় বসে থাকলে হবে না,' নারী নেত্রীদের উদ্দেশে বলেন আওয়ামী লীগ প্রধান।

Comments

The Daily Star  | English

Iran's top security body to decide on Hormuz closure

JD Vance says US at war with Iran's nuclear programme, not Iran

13h ago