খতনা নিয়ে মানুষ শঙ্কিত, দুর্নীতির কারণে চিকিৎসা ব্যবস্থা আস্থা হারাচ্ছে: হানিফ

খতনা নিয়ে মানুষ শঙ্কিত, দুর্নীতির কারণে চিকিৎসা ব্যবস্থা আস্থা হারাচ্ছে: হানিফ
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য মাহবুব উল আলম হানিফ | ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া

সুন্নতে খতনা করাতে গিয়ে দুই শিশুর মৃত্যুর প্রসঙ্গ টেনে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য মাহবুব উল আলম হানিফ বলেছেন, আমরা লক্ষ করছি, যেসব পরিবারে খতনার বিষয় আছে, তারা শঙ্কিত।

দুর্নীতি-স্বজনপ্রীতির কারণে চিকিৎসা ব্যবস্থার ওপর থেকে মানুষের আস্থা হারিয়ে যাওয়াটাই স্বাভাবিক বলেও এ সময় মন্তব্য করেন তিনি।

আজ রোববার জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

হানিফ বলেন, 'উন্নয়ন আমাদের যথেষ্ট হয়েছে। আমরা মনে করি, এই বাংলাদেশ যে অবস্থায় ছিল সেখান থেকে আজকে যেখানে এসেছে, এই উন্নয়ন বাংলাদেশের জনগণের জন্য যথেষ্ট। আমাদের এখন প্রয়োজন এই উন্নয়নকে ধরে রাখা। টেকসই উন্নয়ন বলতে আমরা যেটা বোঝাই। আমাদের এই উন্নয়নকে ধরে রাখাটাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।'

তিনি বলেন, 'এই উন্নয়নকে ধরে রাখার জন্য দেশের সামনে, সরকারের সামনে যেটা সবচেয়ে বড় সমস্যা, সেটা হলো আমাদের মানুষের মধ্যে সততা, নীতি-নৈতিকতা, মূল্যবোধের চরম অবক্ষয়ের দিকে জাতি চলে যাচ্ছে। এখান থেকে যদি বের হয়ে আসতে না পারি, তাহলে এই উন্নয়ন ধরে রাখা কিন্তু কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।'

খতনা করাতে গিয়ে দুটি শিশুর মৃত্যুর প্রসঙ্গ টেনে হানিফ বলেন, 'একই ঘটনায় আরেকটি শিশু মৃত্যুঝুঁকিতে ছিল। আমরা লক্ষ করছি, যেসব পরিবারে খতনার বিষয় আছে, তারা শঙ্কিত। চিকিৎসকদের কোন গাফিলতির কারণে এই দুটি শিশু প্রাণ হারাল, সেটা নিয়ে অনেকেই শঙ্কিত। এই অবস্থাটা কেন হয়েছে? জাতি অবাক হলেও আমি কিন্তু খুব একটা বিস্মিত হইনি।

'চিকিৎসা সেবা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সেবা প্রতিষ্ঠান হচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়। বাংলাদেশের একমাত্র মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়। সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ কর্ণধারকে নিয়ে যখন গণমাধ্যমে লেখালেখি হয়—তার অনৈতিকতা নিয়ে, স্বজনপ্রীতি নিয়ে, নিয়োগ বাণিজ্য নিয়ে লেখালেখি হয়, তখন কিন্তু চিকিৎসার ওপর আস্তে আস্তে মানুষের আস্থাটা কমে যায়। চিকিৎসা ব্যবস্থার ওপর থেকে মানুষের আস্থা হারিয়ে যাওয়াটাই স্বাভাবিক,' যোগ করেন তিনি।

হানিফ বলেন, 'পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ পদ উপাচার্য। সেই উপাচার্যদের বিষয়ে গণমাধ্যমে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের তথ্য চলে আসছে। কেউ স্বজনপ্রীতির সঙ্গে জড়িত, কেউ নানা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত। এমনকি, অনেক উপাচার্যের অডিও রেকর্ডও চলে আসছে গণমাধ্যমে; যারা নিয়োগের জন্য সরাসরি প্রার্থীর সঙ্গে যোগাযোগ করছেন আর্থিক সুবিধা নেওয়ার জন্য। এটা যদি একটা সর্বোচ্চ পদধারী ব্যক্তিদের কাছ থেকে হয়, তাহলে সেই জাতির ভবিষ্যৎ নিয়ে, তার নীতি-নৈতিকতা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করা ছাড়া কিছু থাকে না।'

গ্রিক দার্শনিক প্লেটো উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, 'আজকে আমাদের শিক্ষিত এবং সর্বোচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিদের যদি নীতি-নৈতিকতার যদি এই অবস্থা হয়, তাদের যদি এই মূল্যবোধ হয়, তাহলে রাষ্ট্র আস্তে আস্তে অবক্ষয়ের দিকে যাবে এটাই স্বাভাবিক।'

আওয়ামী লীগের এই সংসদ সদস্য আরও বলেন, 'বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা এ দেশের ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। এই উন্নয়ন-অগ্রগতি ধরে রাখার জন্য এখন আমাদের দরকার হচ্ছে, আমাদের এই সমাজ যে নীতি-নৈতিকতা, সততার যে অবক্ষয়ের মধ্যে যাচ্ছে সেটাকে আমরা কীভাবে আবার ফিরিয়ে আনতে পারি, আমরা মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা করতে পারি সেই লক্ষ্যে কাজ করা প্রয়োজন।'

Comments

The Daily Star  | English

Not satisfied at all, Fakhrul says after meeting Yunus

"The chief adviser said he wants to hold the election between December and June"

2h ago