রমজানে মজুতদারির বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

‘রমজান মাসে আমাদের কিছু কিছু মানুষ থাকে সব সময় মজুতদারি করে দাম বাড়িয়ে কিছু মুনাফা লুটতে চায়। সেদিকে বিশেষভাবে নজর আমাদের দিতে হবে।’
রমজানে মজুতদারির বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা | ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া

আসন্ন রমজান মাসে বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ অব্যাহত রাখতে মজুতদারির বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ রোববার সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে আয়োজিত জেলা প্রশাসক সম্মেলনে-২০২৪ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এই আহ্বান জানান।

এই প্রথম আইনের মাধ্যমে গঠিত নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচন কমিশন অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে নির্বাচন পরিচালনা করেছে এবং কমিশনের নির্দেশনা অনুসরণ করে জেলা প্রশাসকরা সফলভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, '১৯৭৫ সালের পর থেকে যতগুলো নির্বাচন আমি দেখেছি, প্রত্যক্ষভাবে এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে দেখেছি; কীভাবে জনগণের ভোটের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হয়েছে। এবারের নির্বাচন আমি মনে করি যে, সব থেকে সুষ্ঠু একটি নির্বাচন, অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।'

তিনি বলেন, 'প্রকৃতপক্ষে যারা নির্বাচনই চায়নি, যাদের লক্ষ্য ছিল এ দেশে যেন কোনো নির্বাচনই না হয়—অনির্বাচিত; অস্বাভাবিক পরিস্থিতি আবার সৃষ্টি হয়, পঁচাত্তর সালের ১৫ আগস্টের পর থেকে ২১ বছর এ দেশের মানুষ কষ্ট ভোগ করেছে, এরপর আবার ২০০১ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত, সেই পরিস্থিতি যেন আসে। তাদের কাছে হয়তো নির্বাচনটা পছন্দ নাও হতে পারে। কারণ তাদের মন মতো কাজ হয়নি। কিন্তু সাধারণ মানুষ, একদম গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত মহিলা এবং প্রথমবার যারা ভোটার; তরুণ ভোটাররা, তাদের আগ্রহ সব থেকে বেশি ছিল। তারা যে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পেরেছে, এটার সমস্ত কৃতিত্ব আপনাদেরই—আমি মনে করি, যারা নির্বাচনী কাজে সাহায্যে ছিলেন।'

এ সময় জেলা প্রশাসকদের ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, 'রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ, কোভিড-১৯ এর অতিমারি, যার প্রভাব সারা বিশ্বের অর্থনীতিতে পড়েছে। পৃথিবীতে এখন এমন এমন দেশ আছে যেখানে মূল্যস্ফীতি ৪০ ভাগও আছে। এ রকম বহু দেশ এখন বিরাজ মান। বাংলাদেশও এর থেকে দূরে না। যদিও বাংলাদেশর মূল্যস্ফীতি এখনো ১০ ভাগের নিচেই আছে। তারপরও এটা একটা সমস্যা রয়ে গেছে। সেদিকে আমাদের সব থেকে বেশি লক্ষ রাখতে হবে যে, আমাদের বাজার পরিস্থিতি কেমন, আর তাছাড়া সামনে রোজা আসবে।

'রমজান মাসে আমাদের কিছু কিছু মানুষ থাকে সব সময় মজুতদারি করে দাম বাড়িয়ে কিছু মুনাফা লুটতে চায়। সেদিকে বিশেষভাবে নজর আমাদের দিতে হবে। আশু করণীয় একটা কাজ আমাদের সামনে। কোথাও যেন ভোক্তাদের হয়রানি হতে না হয়। সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। আমাদের দেশীয় উৎপাদন বাড়াতে হবে। পর নির্ভরশীলতা আমাদের কমাতে হবে। এটা যে আমরা করতে পারি, সেটা আমরা অনেক ক্ষেত্রে প্রমাণ করেছি। সেদিকে নজর একান্তভাবে দরকার,' যোগ করেন শেখ হাসিনা।

তিনি আরও বলেন, 'সরবরাহের ক্ষেত্রেও নানা সমস্যার সৃষ্টি হয় অথবা একটা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করার চেষ্টা করা হয়। কেউ কেউ মজুতদারি করে পচিয়ে ফেলবে কিন্তু বাজারে দেবে না—এই জাতীয় অবস্থার সৃষ্টি করে। সেই দিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি এবং কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার।

'রমজান মাস সামনে রেখেই এই কথাগুলো আমি সবাইকে বললাম। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য যেন সাধারণ মানুষের কাছে যথাযথভাবে পৌঁছাতে পারে সেদিকে সবাইকে যথাযথভাবে নজর দিতে হবে,' যোগ করেন তিনি।

Comments