দেশ লুটপাটকারীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে: সিপিবি

‘নির্বাচন আজ নির্বাসনে চলে গেছে। লুটেরা দুর্বৃত্তরা আজ ক্ষমতাশ্রয়ী রাজনীতির চালকের আসনে বসে আছে।’
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক ও বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেছেন, 'একদিকে সরকার মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির গল্প শোনাচ্ছে। অন্যদিকে সাধারণ মানুষের প্রকৃত আয় কমে গেছে। নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে জনজীবন অতিষ্ঠ। দেশ থেকে অবাধে টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে। দিন দিন খেলাপি ঋণ বেড়েই চলেছে।'

ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, রেশন ব্যবস্থা চালুসহ নানা দাবিতে সিপিবির দেশব্যাপী বিক্ষোভ সপ্তাহের প্রথম দিন আজ শুক্রবার বিকেল ৫টায় রাজধানীর পুরানা পল্টন মোড়ে অনুষ্ঠিত সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।

রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, 'গত ১০ বছরে ১ লাখ কোটি টাকারও বেশি খেলাপি ঋণ হয়েছে। সাবেক সেনা প্রধান, পুলিশ প্রধান, সম্প্রতি ভারতে নিহত বাংলাদেশের এমপির দুর্বৃত্তায়ন ও লুটপাটের খবরের মধ্য দিয়ে বর্তমানের লুটপাটের সামান্য চেহারা ফুটে উঠেছে। এসব তথ্যই বলে দেয় দেশটা লুটপাটের ও লুটপাটকারীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে।'

'এ অবস্থা থেকে দেশ ও দেশের মানুষকে বাঁচাতে চলমান কর্তৃত্ববাদী এক ব্যক্তির শাসনের অবসান ঘটাতে হবে। পুরো ব্যবস্থা বদল করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের পর স্বাধীন দেশে পালাক্রমে যারা ক্ষমতায় ছিল এবং আছে তারা এই কাজে ব্যর্থ হয়েছে। তাই একমাত্র নীতিনিষ্ঠ বাম গণতান্ত্রিক শক্তি পারে এই ব্যবস্থা বদলে সংগ্রাম অগ্রসর করতে', যোগ করেন তিনি।

সমাবেশে রুহিন হোসেন প্রিন্স আরও বলেন, 'নির্বাচন আজ নির্বাসনে চলে গেছে। লুটেরা দুর্বৃত্তরা আজ ক্ষমতাশ্রয়ী রাজনীতির চালকের আসনে বসে আছে। তারা নিজেদের স্বার্থ রক্ষার জন্য সারাদেশে লোভ আর ভয়ের রাজত্ব কায়েম করেছে। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে যার যার দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।'

তিনি বলেন, 'মূল্যবৃদ্ধিতে অতিষ্ঠ মেহনতি ও মধ্যবিত্তরা কাজের সময় বাদ দিয়ে, সম্মান হারিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে মাঝেমধ্যে ট্রাকের সাপ্লাই দেওয়া কম দামের পণ্য কেনে। এ অবস্থা পরিবর্তন করে সাধারণ মানুষের খাদ্যপণ্য নিশ্চিত করতে সর্বজনীন রেশন ব্যবস্থা ও ন্যায্য মূল্যের দোকান চালু করতে হবে। পর্যায়ক্রমে এসব জায়গায় প্রোটিন সমৃদ্ধপণ্যসহ নিত্য প্রয়োজনীয় আরও পণ্য যুক্ত করতে হবে।'

তিনি আসন্ন বাজেটে এসব খাতে পর্যাপ্ত বরাদ্দ নিশ্চিত করে মুক্তিযুদ্ধের অর্থনৈতিক ধারায় গণমানুষের বাজেট প্রণয়নের দাবি জানান।

সমাবেশে সিপিবির প্রেসিডিয়াম সদস্য শাহীন রহমানের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন প্রেসিডিয়াম সদস্য পরেশ কর, সম্পাদক অ্যাড. আনোয়ার হোসেন রেজা ও শ্রমিক নেতা আব্দুল কুদ্দুস। সমাবেশ পরিচালনা করেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শ্রমিকনেতা কাজী রুহুল আমিন। উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির কোষাধ্যক্ষ ডা. ফজলুর রহমান, সদস্য কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন, অ্যাড. মন্টু ঘোষ, জলি তালুকদার, মানবেন্দ্র দেব, সাদেকুর রহমান শামীম, জাহিদ হোসেন।

সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পার্টি কার্যালয়ে এসে শেষ হয়।

Comments