ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি

ছবি: সংগৃহীত

প্রধান উপদেষ্টার কাছ থেকে নির্বাচনের সুস্পষ্ট তারিখ না পাওয়ায় 'হতাশ' বিএনপি ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের দাবিতে রাজপথে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

দলটির একাধিক শীর্ষ নেতা জানিয়েছেন, প্রতিটি শহর ও জেলায় সমাবেশসহ অন্যান্য কর্মসূচি আয়োজনের পরিকল্পনা করছেন তারা।

বিএনপি নেতাদের ধারণা, সংস্কারের অজুহাতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ আরও দীর্ঘায়িত করার জন্য নির্বাচন প্রক্রিয়া বিলম্বিত করার চেষ্টা চলছে।

তবে আন্দোলনে নামার আগে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করার পরিকল্পনাও করেছে দলটির শীর্ষ নেতারা।

তারা আশা করছেন, ওই বৈঠক থেকে তারা নির্বাচনের সময়সূচি জানতে পারবেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা তার (প্রধান উপদেষ্টা) সঙ্গে নির্বাচনের তারিখ নিয়ে আলোচনা করে আমাদের শরিক দল ও সমমনা অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে পরামর্শ করব। তারপর আমরা জনগণের কাছে আমাদের বার্তা পৌঁছে দেবো।'

গত ২৫ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে এক টেলিভিশন ভাষণে ড. ইউনূস উল্লেখ করেন, এ বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

তিনি বলেন, ঐকমত্য কমিশন সংস্কার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত সংগ্রহ করছে।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গতকাল শনিবার বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সম্ভাব্য বৈঠক ও দলীয় কর্মসূচি নিয়ে পরবর্তী স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আলোচনা হবে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রসঙ্গে বিএনপির এক জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, 'তারা আরও বেশি সময় ক্ষমতায় থাকতেই সংস্কারকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করছে।'

ড. ইউনূসের টেলিভিশন ভাষণের চার দিন পর মির্জা ফখরুল বলেন, 'নির্বাচনের রোডম্যাপ না থাকা তাদের রাজনৈতিক অদক্ষতার পরিচায়ক। দুঃখজনক হলেও এটাই সত্য।'

তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক সংকট সমাধান সম্ভব কেবলমাত্র নির্বাচনের স্পষ্ট রোডম্যাপের মাধ্যমেই। কারণ, তখনই কেবল রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে পারবে।

নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী অনেক বিএনপি নেতা ঈদের ছুটিতে নিজেদের নির্বাচনী এলাকায় প্রচার চালিয়েছেন।

দলীয় হাইকমান্ড জানিয়েছেন, সম্ভাব্য প্রার্থীদের নতুন কর্মসূচি ঘোষণার আগে প্রচারণা চালিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

দলটির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য বলেন, 'নির্বাচন আয়োজনের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ওপর শক্তিশালী চাপ সৃষ্টি করতে হবে। আমরা নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করতে সম্প্রতি বিভিন্ন জেলায় সমাবেশ করেছি। আমরা আবার রাজপথে নামব এবং ধীরে ধীরে আন্দোলন জোরদার করব।'

বিএনপি সমমনা দলগুলোর সঙ্গে সমন্বিত আন্দোলনের জন্যও আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।

দলীয় নেতারা বলছেন, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের পর তারা বিস্তারিত কৌশল নির্ধারণ করবে।

এক জ্যেষ্ঠ নেতা জানিয়েছেন, এই সপ্তাহের মধ্যেই অথবা আগামী সপ্তাহে তারা এই বৈঠক করতে পারেন।

বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছে, তারা যেন কেবলমাত্র প্রয়োজনীয় সংস্কারটুকু সম্পন্ন করে নির্বাচন দেয় এবং বড় পরিসরের সংস্কার নির্বাচিত সরকারের জন্য রেখে যায়।

যদিও জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ কয়েকটি দল চাইছে, বর্তমান প্রশাসনই সব সংস্কার সম্পন্ন করে যাক।

Comments

The Daily Star  | English

22 sectors still pay wages below poverty line

At least 22 sectors in Bangladesh continue to pay their workers much less than what is needed to meet basic human needs.

6h ago