আগস্ট-অক্টোবরেই নির্বাচন হতে পারে, ডিসেম্বরে কেন যেতে হবে: আমীর খসরু

নির্বাচনের জন্য ডিসেম্বর পর্যন্ত কেন যেতে হবে বলে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
আজ রোববার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠান থেকে তিনি এই প্রশ্ন তুলেন।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ডিসেম্বর পর্যন্ত যেতে হবে কেন? আমি তো দেখছি ডিসেম্বর পর্যন্ত যাওয়ার কোনো কারণ নেই। নির্বাচনের জন্য তিন মাস সময় নিয়ে যাওয়া দরকার। আগস্ট, সেপ্টেম্বর বা অক্টোবরে নির্বাচন হতে পারে। ডিসেম্বরে কেন যেতে হবে? যত বিলম্বিত হচ্ছে, দেশের মানুষের শঙ্কা বাড়ছে এবং মানুষ সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে। তারা নির্বাচনের দিকে না গিয়ে তারা অন্যদিকে ধাবিত হচ্ছে।
'যেসব সংস্কার প্রস্তাবনাগুলোতে ঐকমত্য হয়েছে, সেগুলো আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে তারা বলতে পারে। একদিনের মধ্যেও বলতে পারে। এতদিন তো লাগে না। ঐকমত্য কোথায় হয়েছে, যেকোনো কাউকে বললে এটা দুই-চার-পাঁচ ঘণ্টার মধ্যে সব রেডি হয়ে যায়। ঐকমত্য যেখানে হয়েছে, এসব আপনি বলে দেন। তার ভিত্তিতে আপনি ইমিডিয়েটলি রোডম্যাপ ডিক্লেয়ার করেন।'
তিনি বলেন, সরকার 'করিডোর'র সিদ্ধান্ত নিয়ে দেশকে একটা বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছে এবং বিনিয়োগ সম্মেলন করছে, যা তাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না। এগুলো কি জন্য? তারা সময় নষ্ট করছে। এগুলো দেখিয়ে তারা কী বোঝাতে চাচ্ছে? চট্টগ্রাম পোর্ট হ্যান্ডওভার করছে। এই সমস্ত সিদ্ধান্তে তারা কি বোঝাতে চাচ্ছে? তাদেরকে ম্যান্ডেট কে দিয়েছে?'
নির্বাচনের লক্ষণ সরকারকে দেখাতে হবে উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, আমি তো ডিসেম্বর পর্যন্ত যাওয়ার কোনো প্রয়োজনীয়তাও মনে করছি না। ইমিডিয়েটলি যেখানে ঐকমত্য হয়েছে, এটা ডিক্লেয়ার করে আপনি নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেন। আগস্ট, সেপ্টেম্বর যেকোনো সময় হতে পারে। ডিসেম্বর পর্যন্ত যেতে হবে কী জন্য?
ইশরাক হোসেনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যদি কোর্ট অর্ডার হয়ে থাকে, তাহলে সেটা বাস্তবায়ন হতে অসুবিধাটা কোথায়? আইনের শাসনের কথা যদি আমি বলি, তাহলে এটা কি আইনের শাসন ব্যর্থ হচ্ছে না? কত লোক তো আমরা প্রতিনিয়ত দেখতে পাচ্ছি দায়িত্ব নিচ্ছে। তাদের সঙ্গে জনগণের কী সম্পর্ক আছে? এরা জনগণের দরদ কী বুঝবে? জনগণের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। প্রতিনিয়ত দায়িত্ব নিচ্ছে। সব ইম্পোর্টেড, আমদানি। তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের জনগণের কী সম্পর্ক আছে?
'বাংলাদেশের জনগণের রাজনীতি যারা করে, তারা দায়িত্ব পাবে না। অথচ দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন ধরনের লোককে প্রতিনিয়ত দায়িত্ব নেওয়া হচ্ছে। তারা কারা? হঠাৎ করে এসে বাংলাদেশের দায়িত্ব নিচ্ছে। তাদের আগামী বাংলাদেশের সব সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব কে দিয়েছে?'
কারো ব্যক্তিগত এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য সংস্কার দেখতে চাই না উল্লেখ করে আমীর খসরু বলেন, একটা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জনগণ যেভাবে চায় সেভাবে সংস্কার হবে...বাংলাদেশের মানুষ তার মালিকানা ফিরে চায়। তার নির্বাচিত সরকার চায়। নির্বাচনী কার্যক্রমের দিকে কেন এগোনো যাচ্ছে না? নির্বাচনী রোডম্যাপ দেওয়া হচ্ছে না কেন? তাদের (অন্তর্বর্তী সরকার) দায়িত্ব যেগুলো, সেগুলো এড়িয়ে অন্য কাজ কেন? এমন ভাব করছে যে, তারা নির্বাচিত সরকার, তারা দীর্ঘমেয়াদে দেশ পরিচালনা করবে।
খালেদা জিয়ার সুস্থতা প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, খালেদা জিয়া শারীরিক ও মানসিকভাবে শান্তিতে আছেন। দেশটা গণতন্ত্রের দিকে যাচ্ছে ভেবে স্বস্তিতে আছেন। পুরোপুরি স্বস্তি আমি বলতেও পারছি না। যতক্ষণটা নির্বাচন হয়ে একটা গণতান্ত্রিক অর্ডারে দেশ আসবে, ততক্ষণ উনার যে ইচ্ছা-অবদান-ত্যাগ, সেটা পরিপূর্ণতা পাবে না। স্বাভাবিকভাবে উনি সেটার জন্য অপেক্ষা করছেন।
Comments