নরসিংদীতে ‘ছাত্রদল’-বিএনপির সংঘর্ষ: গুলিবিদ্ধ সেই যুবকের মৃত্যু

নরসিংদীর পলাশ উপজেলায় বিএনপি ও ছাত্রদলের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে যুবক ঈসমাইল হোসেন (২৬) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
আজ শনিবার দুপুর ২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
ঈসমাইলের বাবা আব্দুর রহিম ভূঁইয়া দ্য ডেইলি স্টারকে তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
ঈসমাইলের বাড়ি ঘোড়াশাল পৌর এলাকার খানেপুর গ্রামে।
রহিম বলেন, 'আমরা এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার চাই এবং হত্যায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানাই।'
পলাশ থানা 'ছাত্রদলের সদস্যসচিব' মোস্তাফিজুর রহমান পাপন বলেন, 'ঈসমাইল আমাদের সংগঠনের একজন নিবেদিত কর্মী ছিলেন। গত ১৫ জুন পলাশ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় জেলা বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল কবির জুয়েলের শোডাউনকে কেন্দ্র করে তার লোকজন শান্তিপূর্ণ মিছিলে হামলা ও গুলি চালায়। এতে ঈসমাইল গুলিবিদ্ধ হন এবং আজ তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন।'
'আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং ঈসমাইল হত্যায় জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি,' বলেন তিনি।
গত ১৫ জুন গুলিবিদ্ধ হলে ঈসমাইলকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ঘটনার পরদিন ঘোড়াশাল পৌর ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সিয়াম মিয়া বাদী হয়ে পলাশ থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় জেলা বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল কবির জুয়েলকে প্রধান আসামি করা হয়।
এছাড়া, আরও আটজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ৪০-৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। অন্যদিকে জুয়েলের পক্ষ থেকেও পাল্টা মামলা দায়ের করা হয়।
গত বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে জুয়েলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
সংঘর্ষের ব্যাপারে গতকাল জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ছিদ্দিকুর রহমান নাহিদ বলেছিলেন, 'জেলা থেকে পলাশ উপজেলা ছাত্রদল কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়নি। যাদের ছাত্রদল বলা হচ্ছে, এরা স্বঘোষিত সভাপতি-সেক্রেটারি।'
তিনি বলেন, 'গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, থানা ছাত্রদলের অনুমোদন ও তদারকি জেলা ছাত্রদলের হাতে ন্যস্ত। কিন্তু পলাশের বাস্তবতা ভিন্ন। ছাত্রদলের নাম ব্যবহার করে যারা বিএনপি নেতার ওপর হামলা চালিয়েছে, সেটা অপরাধ ও ঘৃণ্য কাজ। জেলা ছাত্রদল তাদের অপরাধের দায় নেবে না।'
'ঈসমাইল নামে যাকে ছাত্রদল কর্মী বলা হয়েছে, সে আসলে ছাত্রলীগের কর্মী। আমরা তাকে কোনো কর্মসূচিতে অংশ গ্রহণ করতে দেখিনি। সামগ্রিক বিষয় আমরা কেন্দ্রীয় ছাত্রদলকে অবহিত করব,' যোগ করেন তিনি।
পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনির হোসেন বলেন, 'আমরা শুনেছি আহত ঈসমাইল হোসেন মারা গেছেন। তবে এখনো হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি। তাদের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হলে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।'
Comments