বিচার-সংস্কার ছাড়া যারা নির্বাচনের পরিকল্পনা করে তারাই নির্বাচন পেছানোর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত: নাহিদ ইসলাম

যশোর শহরে এনসিপির পদযাত্রায় বক্তব্য দেন নাহিদ ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, যারা বিচার ও সংস্কার ছাড়া নির্বাচনের পরিকল্পনা করছে তারাই নির্বাচন পেছানোর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।

'দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা'র অংশ হিসেবে আজ শুক্রবার বিকেলে যশোরে এক পথসভায় এ কথা বলেন তিনি।

জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, 'গণঅভ্যুত্থানে যশোরের সন্তানেরাও শহীদ হয়েছেন, আমরা স্মরণ করছি সেই সকল শহীদদের। ১৯৭১ সালে প্রথম শত্রুমুক্ত এলাকা হয়েছিল এই যশোর।'

'আমরা এসেছি যশোরের সন্ত্রাস-চাঁদাবাজ-দখলদারদের বিরুদ্ধে কথা বলতে। আগামীতে একটি বড় আন্দোলন তৈরি হচ্ছে দুর্নীতিবাজ ও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে। গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমরা সংস্কার এনেছি। কিন্তু এই সংস্কার প্রক্রিয়া পদে পদে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে দুর্নীতিবাজ, দখলদার ও চাঁদাবাজদের কারণে। তাদের বিরুদ্ধে এবার আমাদের মাঠে নামতে হবে,' বলেন তিনি।

হুঁশিয়ারি দিয়ে নাহিদ বলেন, 'যারা দুর্নীতিবাজ নানান দলে অনুপ্রবেশ করেছেন, তারা এখনই সাবধান হয়ে যান। গণঅভ্যুত্থানের পরে যে অন্তর্বর্তী সরকার এসেছে যে নতুন সময় এসেছে যে নতুন রাজনীতি এসেছে—আমরা চাই যশোরবাসীর দীর্ঘদিনের সমস্যা দীর্ঘদিনের ভোগান্তি দূর হবে এবং এই দূর করার দায়িত্ব নিতে হবে জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতৃবৃন্দকে।'

তিনি আরও বলেন, 'গণঅভ্যুত্থানে আপনারা দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের পক্ষে যেভাবে দাঁড়িয়েছিলেন, ঠিক একইভাবে আমাদের আবারও যশোরসহ পুরো বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের সমস্যার কথা বলতে হবে। আপনারা চাঁদাবাজকে, দুর্নীতিবাজকে ভয় পাবেন না।'

'একটি রাজনৈতিক দল তাদের লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি মানুষের কথা আমাদের বলে। তাদের এই কোটি কোটি মানুষ লক্ষ লক্ষ মানুষকে আমরা ফ্যাসিবাদের আমলে দেখেছি কার কত মানুষ ছিল। সেই মানুষেরা কত কত আন্দোলন গড়ে তুলেছিল,' বলেন তিনি।

নাহিদ বলেন, 'আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে বৈষম্যের বিরুদ্ধে একটি ইনসাফভিত্তিক রাজনীতি গড়ে তুলতে চাই। আমরা দায় ও দরদের একটি রাষ্ট্রনীতি গড়ে তুলতে চাই, যেখানে সমাজের সব নারী-পুরুষ-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার অধিকার নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।'

এনসিপি নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহর একটি বক্তব্যের উল্লেখ করে নাহিদ বলেন, 'নির্বাচনকে পিছিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত করা হচ্ছে। আমরা বলেছি বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন আমরা চাই। বিচার, সংস্কার ছাড়া নির্বাচন বাংলার জনগণ মেনে নেবে না। যারা বিচার-সংস্কার ছাড়া নির্বাচনের পরিকল্পনা করে, তারাই নির্বাচনকে পিছিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।'

'নির্বাচন ভোটাধিকারের পক্ষে সত্যিকার অর্থে লড়াই করে যাচ্ছে এই গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্ব জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতৃত্ব। আমরা স্বাধীনতা এনেছি, আমরা সংস্কার আনব, আমরা আমাদের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করব,' বলেন তিনি।

এনসিপি আহ্বায়ক আরও বলেন, 'বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান জনগণের প্রতিষ্ঠানকে সবসময় দলীয়করণ করা হয়েছে। যেই দল ক্ষমতায় এসেছে সেই দলই দলীয়করণ করেছে। আমরা আমাদের এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে দলীয়করণ করতে দেব না। আমরা চাই পুলিশ নিরপেক্ষভাবে কাজ করবে, কোনো দলের অনুসারী হবে না।'

তিনি বলেন, 'নির্বাচন কমিশন গত ১৬ বছর সবচেয়ে বেশি দলীয়করণ করা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ভেঙে পড়া প্রতিষ্ঠান এই নির্বাচন কমিশন, যারা তিনটি নির্বাচনকে নস্যাৎ করেছে। নির্বাচন কমিশনকে অবশ্যই শক্তিশালী হতে হবে।'

Comments

The Daily Star  | English
National election

Political parties must support the election drive

The election in February 2026 is among the most important challenges that we are going to face.

6h ago