অযোগ্য উপদেষ্টা দিয়ে স্বাস্থ্যখাতকে অব্যবস্থাপনার ক্ল্যাসিক উদাহরণ বানানো হয়েছে: হাসনাত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, 'অযোগ্য উপদেষ্টা বসিয়ে স্বাস্থ্যখাতকে অব্যবস্থাপনার ক্ল্যাসিক উদাহরণ বানানো হয়েছে।'
এনসিপির 'দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা' কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর মুক্তমঞ্চে এক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
স্বাস্থ্যখাতের দুরবস্থার উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'আপনি রাস্তায় বের হলে বাসে চাপা পড়ে মরবেন, হাসপাতালে গেলে চিকিৎসার অভাবে মরবেন, বিমান বা লঞ্চ দুর্ঘটনায় মারা যাবেন—বাংলাদেশে স্বাভাবিক মৃত্যুর কোনো নিশ্চয়তা নেই। আমরা এই রাষ্ট্রের কাছে একটি স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা চাই।'
হাসনাত আরও বলেন, 'অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমরা একটি পুনর্গঠিত রাষ্ট্রব্যবস্থা চেয়েছিলাম। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, আমাদের সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ছিলেন ইংরেজিতে অনার্স আর বর্তমান উপদেষ্টা বাংলায় অনার্স। অথচ দক্ষ ও যোগ্য লোকদের দিয়ে স্বাস্থ্যব্যবস্থা পরিচালনা করা উচিত ছিল। একজন অযোগ্য উপদেষ্টার মাধ্যমে স্বাস্থ্যখাতকে অব্যবস্থাপনার ক্লাসিক উদাহরণ বানিয়ে ফেলা হয়েছে। বাংলাদেশে কি কোনো ডাক্তার নেই।'
শিক্ষা, নির্বাচন ও রাষ্ট্রব্যবস্থা নিয়ে তিনি বলেন, 'আমরা ভালো শিক্ষা, নির্বাচন এবং একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র চেয়েছিলাম। আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে ইতিহাস গড়তে পারব। জালিম শাসনের ঊর্ধ্বে উঠে ইনসাফের ভিত্তিতে সমঅধিকারের একটি বাংলাদেশ গড়ে তুলব।'
হাসনাত বলেন, 'ফ্যাসিবাদবিরোধী প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলকে আমি আহ্বান জানাব—বাংলাদেশ ও রাজনীতির স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলা করতে হবে। একইসঙ্গে আমরা যে গণতান্ত্রিক উত্তরণের সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছি, তা দ্রুত বাস্তবায়নের মাধ্যমে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দিকে যেতে হবে। এর আগে দৃশ্যমান বিচার ও কাঠামোগত সংস্কার নিশ্চিত করতে হবে।'
সমাবেশে এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, 'সংস্কার, বিচার ও নতুন সংবিধানের দাবিতে এনসিপি এগিয়ে যাবে। ইতোমধ্যে কিছু রাজনৈতিক দল নিজেদের দলীয় অবস্থান থেকে সরে এসে সংস্কারের পক্ষে অবস্থান নিচ্ছে। আগামী ৫ আগস্টের মধ্যে আমরা জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র আদায়ের লক্ষ্যে কাজ করছি।'
তিনি আরও বলেন, 'ব্রাহ্মণবাড়িয়া সবসময় ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে। শুধু জুলাই গণঅভ্যুত্থান নয়, ২০২১ সালের মোদিবিরোধী আন্দোলনেও এখানকার মানুষ রক্ত ও জীবন দিয়েছে। আমরা ঢাকাকেন্দ্রিক বৈষম্যমূলক উন্নয়ন চাই না, দেশের প্রতিটি জেলায় সমানভাবে উন্নয়ন হতে হবে।'
দলটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, 'জীবন ও রক্ত দিয়ে যে পরিবর্তনের আশা করা হয়েছিল, সেটিকে থামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হলে আবারও রাজপথে নামা হবে। সংস্কারের মাধ্যমে দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোকে পুনর্গঠন করতে হবে। কারণ গত অর্ধশতকে এগুলো দলীয়করণ করা হয়েছে।'
Comments