‘একটা সার্কেলে প্রায় সবাই দুর্নীতিগ্রস্ত’ বলার পরে বক্তব্য বদলালেন মাহফুজ আলম

মাহফুজ আলম
উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। ফাইল ছবি

অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম তার এক ফেসবুক পোস্টে 'একটা সার্কেলে প্রায় সবাই দুর্নীতিগ্রস্ত' বলে মন্তব্য করার কিছুক্ষণ পর নিজের বক্তব্য থেকে সেই অংশটুকু পরিবর্তন করেছেন।

আজ মঙ্গলবার ভোরে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া একটি পোস্ট সংশোধন করে তিনি এই পরিবর্তন আনেন।

আজ ভোররাত ২টা ৫১ মিনিটে দেওয়া প্রথম পোস্টে মাহফুজ আলম তদবির চেষ্টার কথা উল্লেখ করে দুর্নীতির প্রস্তাব পাওয়ার একটি ঘটনা তুলে ধরেন। তিনি লেখেন, 'তদবিরের কথা উঠলো যখন, একটা ঘটনা বলি। আমাদের এক বন্ধু একজন ব্যক্তিকে আমার ভাইয়ার সঙ্গে দেখা করায়। বিটিভির একটা টেন্ডারের কাজ করে দিলে তারা পার্সেন্টেজ দিবে এবং জুলাই নিয়ে কয়েকটা দেশে প্রোগ্রামের জন্য হেল্প করবে। আমি জানার পর এটা নিষেধ করে দেই। সদুদ্দেশ্যে হলেও রাষ্ট্রের আমানতের খেয়ানত করা যাবে না। পরবর্তীতে সে টেন্ডারের কাজও স্থগিত হয়।'

কথোপকথন রেকর্ড করে ফাঁসানোর চেষ্টার অভিযোগ করে তিনি আরও লেখেন, 'সে ব্যক্তি কনভার্সেশন রেকর্ড করে একজন সাংবাদিককে পাঠায়। সে সাংবাদিক যোগাযোগ করলে আমি বলে দিই, ভাই আমরা একাজ করতে দেইনি। আর, ঐ লোক ফাঁসানোর উদ্দেশ্যেই জুলাইয়ের প্রোগ্রামের কথা বলে একাজ করেছে। উনি আমার কথা বিশ্বাস করে আর রেকর্ডটি পাবলিক করেননি।'

এরপরই নিজের পোস্টে তিনি দুর্নীতির বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়ে লেখেন, 'আজকাল অনেকের লেজকাটা যাচ্ছে বলে, আমার বিরুদ্ধে লেগেছেন। নূতন একটি দলের কয়েকজন মহারথী এতে জড়িত। সবই প্রকাশ পাবে। একটা সার্কেলে প্রায় সবাই দুর্নীতিগ্রস্ত কিন্তু একজন কোন টাকা ধরছেন না, এটা কার সহ্য হবে!'

পোস্টের শেষে 'পুনশ্চ' দিয়ে তিনি যোগ করেন, 'আমার নিকৃষ্ট শত্রুরাও গত ১২ মাসে আমার বিরুদ্ধে সব অভিযোগ করলেও দুর্নীতি বা আর্থিক অসঙ্গতির অভিযোগ করেনি। একটি নূতন দলের মহারথীদের অনেক অসুবিধা হচ্ছে তাতে। রাষ্ট্রের দায়িত্ব পবিত্র আমানত। হাজার কোটি টাকার চাইতেও ইজ্জত ও রাষ্ট্রের আমানত আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।'

তবে এর প্রায় দেড় ঘণ্টা পর ভোর ৪টা ২৮ মিনিটে তিনি পোস্টটি সংশোধন করেন। সংশোধিত সংস্করণে তিনি দুর্নীতির বিষয়ে করা তার বক্তব্য পরিবর্তন এবং 'নূতন দলের মহারথী'র জায়গায় 'বিভিন্ন দলের মহারথীদের' কথা উল্লেখ করেন।

মাহফুজ আলমের পোস্ট ও সংশোধিত পোস্ট। ছবি: মাহফুজ আলমের ফেসবুক পোস্টের স্ক্রিনশট

এর আগে গত ১৭ জুলাই রাজধানীর গুলশানে সাবেক নারী সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের পরিবারের কাছে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা হয় গুলশান থানায়।

এ ঘটনায় গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্বে থাকা শিক্ষার্থীদের চাঁদাবাজি নিয়ে আলোচনা সরব হয়ে ওঠে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এমনকি জুলাই অভ্যুত্থানকে দুঃখজনকভাবে 'মানি মেকিং মেশিনে' পরিণত করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক মুখপাত্র উমামা ফাতেমাও।

এসব ঘটনার পর আজ ফেসবুক পোস্টে তদবির ও দুর্নীতি নিয়ে লিখলেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম।

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh-US tariff talks underway in Washington

Based on progress made so far, Bangladesh hopes for a positive outcome

8h ago