‘আমার বাপটারে ক্যান মাইরা ফেলল, কী দোষ করছিল’

ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গের সামনে সায়েন্সল্যাবে নিহত শাহজাহানের মা ও স্ত্রী। ছবি: শাহীন মোল্লা/স্টার

সিটি কলেজের সামনে নিহত শাহজাহান (২৪) নিউমার্কেটে বলাকা সিনেমা হলের সামনের ফুটপাতে পাপড় বিক্রি করতেন। ওই এলাকায় হকার উচ্ছেদ করার পর গত এক মাস ধরে তিনি বেকার ছিলেন।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে সায়েন্সল্যাব এলাকায় ছাত্রলীগের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষের মধ্যে সিটি কলেজের রক্তাক্ত অবস্থায় পড়েছিলেন তিনি।

পরে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

রাতে হাসপাতালে তার মরদেহ শনাক্ত করেন মা আয়শা বেগম। ছেলের মরদেহ দেখার পর জরুরি বিভাগে মর্গের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।

চিৎকার করে বলতে থাকেন, 'আমার বাপটারে ক্যান মারল? কারা মারল? কী দোষ করছিল আমার পুলাটা। আইজ কারা একেবারে মাইরা ফেলল?'

আয়শা আক্তার বলেন, 'ছেলে বলল বাসায় আসতেছি।'

তাদের বাসা কামরাঙ্গীরচর। কাজ না থাকলেও প্রতিদিন বাসা থেকে বের হয়ে কাজ খুঁজতেন শাহজাহান।

মা বলেন, 'আমার ছেলে তো হকার, সে তো রাজনীতি করে না। তাকে কেন মারল। আমি এর বিচার চাই।' 

হাসপাতালে আরও আসেন নিহত শাহজাহানের স্ত্রী ফাতেহা স্ত্রী। তিনি ডেইলি স্টারকে জানান, শাহজাহান বেকার ছিল। কিন্তু প্রতিদিন বের হয়ে কাজ খুঁজতেন। রিকশা চালানোরও প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তিনি।

'আজ সকালেও ভাত না খেয়ে বাসা থেকে বের হয়ে গেছেন। ফোন করে বলছিল, কাজে আসছি আসতেছি,' বলেন তিনি।

পরিবারের সূত্র জানায়, শাহজাহানরা তিন ভাই ও এক বোন। বড় দুই ভাই ও বোন বিয়ের পর আলাদা থাকেন। 

দুই বছর আগে শাহজাহান বিয়ে করেন। চার মাস আগে তাদের এক সন্তান হলেও মারা যায় সে।

নিহত শাহজাহানের খালু মোসলেম জানান, সন্ধ্যায় পপুলার হাসপাতাল থেকে ফোন করে তাদের জানানো হয় শাহজাহান আহত হয়েছে। তাকে পপুলার হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে। পরে তারা ঢাকা মেডিকেলে গিয়ে শাহজাহানের মরদেহ দেখতে পান।

Comments

The Daily Star  | English

No one involved in mob violence will be spared: home adviser

He credits the media and digital platforms for enabling quicker responses

14m ago