শিক্ষার্থীদের হয়রানি বন্ধের দাবি নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের

‘শিক্ষার্থীরা যেহেতু যৌক্তিক দাবিতে আন্দোলন করছে, তাদের পাশে থাকা আমাদের নৈতিক কর্তব্য।’
মানববন্ধন করেছেন নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ধশতাধিক শিক্ষক। ছবি: সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের হত্যার বিচার এবং শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার-হয়রানি বন্ধ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ধশতাধিক শিক্ষক।

আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টায় ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বাইরে মানববন্ধন করেন তারা।

গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা নিজ উদ্যোগে চলমান আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে এই কর্মসূচি আয়োজন করেছেন। কর্মসূচিতে নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটি অনুষদের সব বিভাগের প্রায় ৫০ জন শিক্ষক অংশ নেন। তাদের হাতে 'নিরস্ত্র ছাত্র হত্যার বিচার চাই', 'দমন ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা', 'নিরস্ত্র ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার ও হয়রানি বন্ধ করতে হবে', 'শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা, মানসিক স্বাস্থ্য ও শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে' ও 'শিক্ষার্থীদের পাশে শিক্ষক' লেখা প্ল্যাকার্ড ছিল।

নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল ও কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক নোভা আহমেদ বলেন, 'আমরা আজ আমাদের ছাত্রছাত্রীদের জন্য দাঁড়িয়েছি। তারা আহত হচ্ছে, গ্রেপ্তার হচ্ছে। আমরা জানাতে চাই যে আমরা তাদের পাশে আছি। আমরাও তাদের অভিভাবক। আমাদের ওপর শিক্ষার্থীরা ভরসা করে। তাদের প্রয়োজনের সময় পাশে থাকা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। কারফিউ চলুক বা না চলুক, ছাত্রদের পথে ঘাটে ধরা হচ্ছে, জিজ্ঞাসাবাদ ও হয়রানি করা হচ্ছে। এরকম ভয়ভীতি দেখানো চলতে থাকলে দীর্ঘমেয়াদে তাদের মানসিক স্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়তে পারে। আমরা এসবের অবসান চাই।'

স্থাপত্য বিভাগের অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম বলেছেন, 'একজন শিক্ষার্থীর প্রতি শিক্ষকের দায়িত্ব শুধু ক্লাসরুমের মধ্যে সীমাবদ্ধ না, শুধুমাত্র তাকে চাকরির বাজারের জন্য প্রস্তুত করা না। বরং শিক্ষার্থীদের নৈতিক বিবেচনাবোধসম্পন্ন একজন মানুষ হিসেবে গড়ে তোলাও বটে। শিক্ষার্থীরা যেহেতু যৌক্তিক দাবিতে আন্দোলন করছে, তাদের পাশে থাকা আমাদের নৈতিক কর্তব্য।'

ইংরেজি বিভাগের জ্যৈষ্ঠ প্রভাষক মুশাররাত শর্মি হোসেন বলেন, 'আমরা একটি নিরাপদ শিক্ষাঙ্গনের নিশ্চয়তা চাই, যেখানে ছাত্রছাত্রীরা নির্বিঘ্নে অ্যাকাডেমিক কাজ করতে পারে। ক্যাম্পাসের সামনে থেকে প্রিজনভ্যানে করে যদি শিক্ষার্থীদের তুলে নিয়ে যাওয়া হয়, তাহলে কীভাবে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেরার সাহস পাবে?'

আইন বিভাগের জ্যৈষ্ঠ প্রভাষক সাকিব রহমান বলেছেন, 'আন্দোলন করা প্রত্যেক নাগরিকের একটি সাংবিধানিক অধিকার এবং এই অধিকার আদায়ে রাষ্ট্র বাধা দিতে পারে না।'

কর্মসূচিতে উপস্থিত শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের ওপর হয়রানি-নিপীড়ন বন্ধের দাবি জানান। শিক্ষার্থীদের যেকোনো প্রয়োজনে নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা তাদের পাশে আছেন ও থাকবেন বলেও জানান তারা।
 

Comments

The Daily Star  | English

Mob beating at DU: Six students confess involvement

Six students of Dhaka University, who were arrested in connection with killing of 35-year-old Tofazzal Hossain inside their hall on Wednesday, confessed to their involvement in the crime before a magistrate

6h ago