গণহত্যা ও নিপীড়নবিরোধী শিল্পীসমাজের সমাবেশে হাজারো জনতা

আজ সকাল থেকে ঝিরঝির বৃষ্টি উপেক্ষা করেই এই সমাবেশে যোগ দেন দৃশ্যশিল্পী, আলোকচিত্রশিল্পী, পারফরম্যান্সশিল্পী, সংগীতশিল্পী, কবি-লেখক-গবেষক-স্থপতি ও শিল্পসংগঠকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার হাজারো মানুষ।
আজ শুক্রবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে আবহানী মাঠ সংলগ্ন সড়কে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: শরীফ এম শফিক/স্টার

চলমান বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন দমানোর নামে সংঘটিত সব হত্যাকাণ্ডের নিরপেক্ষ তদন্ত ও বিচারের জন্য এই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে অবিলম্বে সরকারের পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে গণহত্যা ও নিপীড়নবিরোধী শিল্পীসমাজ।

আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আবহানী মাঠ সংলগ্ন সড়কে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সকাল থেকে ঝিরঝির বৃষ্টি উপেক্ষা করেই এই সমাবেশে যোগ দেন দৃশ্যশিল্পী, আলোকচিত্রশিল্পী, পারফরম্যান্সশিল্পী, সংগীতশিল্পী, কবি-লেখক-গবেষক-স্থপতি ও শিল্পসংগঠকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার হাজারো মানুষ।

এদিন সকাল ১১টা থেকে শুরু হওয়া এই সমাবেশ চলে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত। সমাবেশ শেষে প্রতিবাদী গান ও স্লোগান সহকারে একটি বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। শিল্পীরা অংশ নেন দেয়াল-লিখন ও গ্রাফিতি অঙ্কন কর্মসূচিতে।

আয়োজকরা এই সমাবেশের ব্যাপারে বলছেন, আমরা শিল্পী সমাজের পক্ষ থেকে চলমান রাষ্ট্রীয় অনাচার, অবিচার ও জুলুমের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো কর্তব্য মনে করি। আমরা আরও মনে করি যে, বিগত বহু বছর ধরে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক পরিসর অনুপস্থিত। আমরা রাজনৈতিক অধিকার হারিয়েছি, ভোটাধিকার বঞ্চিত হয়েছি, জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সবাক থাকার অধিকার হারিয়েছি।

ছবি: শরীফ এম শফিক/স্টার

আয়োজকরা আরও বলছেন, এখানে নিবর্তনমূলক আইনের মাধ্যমে মত প্রকাশের অধিকার রুদ্ধ করা হয়েছে। বহুদিন থেকেই অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার মানুষজন নানারকম সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন।

আজকে দেশের ক্রান্তিলগ্নে যখন ছাত্রদের কোটা সংস্কারের দাবি ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পরিণত হয়েছে এবং তা দমনের নামে নির্বিচার হত্যাকাণ্ড চলছে, তখন শিল্পীসমাজের হয়ে প্রতিবাদ জানানোর সময় হয়েছে বলে আমরা মনে করি।

চলমান আন্দোলনে সংঘটিত সব হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে অবিলম্বে সরকারের পদত্যাগসহ গণহত্যা ও নিপীড়নবিরোধী শিল্পীসমাজের অন্য দাবিগুলো হলো—আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনতার বিরুদ্ধে গণগ্রেপ্তার ও গণ মামলা বন্ধ করে অবিলম্বে আটককৃত ছাত্র-জনতাকে মুক্তি দেওয়া। কারফিউ তুলে নিয়ে জনমনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনা এবং সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকারদলীয় ‍গুন্ডাবাহিনী মুক্ত করা।

বিক্ষোভ মিছিল। ছবি: শরীফ এম শফিক/স্টার

আজকের সমাবেশে বক্তব্য দেন—নারীনেত্রী ফরিদা আখতার, লেখক-গবেষক রেহনুমা আহমেদ, নারী আন্দোলন কর্মী ও নারীপক্ষের প্রতিষ্ঠাতা শিরিন হক, নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী ও ব্রতীর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন মুরশিদ, কবি শাখাওয়াত টিপু, প্রমুখ।  

এর আগে আয়োজকদের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে এই সমাবেশ সফল করার আহ্বান জানান শিল্পী-লেখক মোস্তফা জামান, প্রখ্যাত আলোকচিত্রশিল্পী ইমতিয়াজ আলম বেগ, সংগীতশিল্পী অরূপ রাহী ও বিথী ঘোষ, কিউরেটর ও লেখক আমিরুল রাজীব, শিল্পী ও কবি শেহজাদ চৌধুরী, প্রমুখ।

 

Comments