চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা ঠেকাতে পলিথিনবিরোধী অভিযানের ঘোষণা

আসন্ন বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা ঠেকাতে আগামী ১ জুলাই থেকে চট্টগ্রামে পলিথিন ব্যবহার সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করার কথা জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
চট্টগ্রামে সার্কিট হাউজে এক সভায় পলিথিন ব্যবহার বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন। ছবি: স্টার

আসন্ন বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা ঠেকাতে আগামী ১ জুলাই থেকে চট্টগ্রামে পলিথিন ব্যবহার সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করার কথা জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।

বুধবার চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে এক মতবিনিময় সভায় এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়। পলিথিন উৎপাদনের কাঁচামাল আমদানি নিষিদ্ধ করার ব্যাপারেও সভায় আলোচনা হয়।

চট্টগ্রাম চেম্বার, চট্টগ্রাম উইমেন চেম্বার, ক্যাব, বিভিন্ন ব্যবসায়িক সমিতির প্রতিনিধি, সরকারি সংস্থার কর্মকর্তা এবং এনজিও প্রতিনিধিরা সভায় উপস্থিত ছিলেন। সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রাকিব হাসান। পলিথিনের কারণে বর্ষা মৌসুমে চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতার কথা তুলে ধরে সভায় মোট ১১ দফা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর মধ্যে পলিথিনের কারখানা বন্ধে গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানো এবং মহানগরী এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনারও সিদ্ধান্ত হয়।

সিনিয়র সহকারী কমিশনার তৌহিদুল ইসলাম বলেন, 'পলিথিনের কারণে চট্টগ্রামে বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। নানা উদ্যোগ নেওয়া হলেও চট্টগ্রামে পলিথিন ব্যবহার কমানো যাচ্ছে না। পরিবেশ বাঁচাতে আমরা এবার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।'

পরিবেশের কথা চিন্তা করে ২০০২ সালে আইন করে পলিথিনের ব্যাগ উৎপাদন, ব্যবহার, বিপণন এবং পরিবহন নিষিদ্ধ করেছিল সরকার। এর পর ২০১০ সালে ধান, চাল, গম, ভুট্টা, সার, চিনিসহ ১৯ ধরনের পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহারের জন্য আইন করা হয়। কিন্তু আইনগুলোর পুরোপুরি বাস্তবায়ন না হওয়ায় পলিথিনের ব্যবহার বন্ধ হয়নি।

চট্টগ্রাম ওয়াসার কোনো পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় পলিথিনসহ নগরীর প্রায় ৭০ লাখ বাসিন্দার বর্জ্য ৩৬টি খালের মাধ্যমে সরাসরি কর্ণফুলী নদীতে পড়ে। চট্টগ্রাম ওয়াসার হিসাবে প্রতিদিন প্রায় ৩ লাখ লিটার গৃহস্থালি বর্জ্য, শিল্প কারখানার কয়েকশ টন কেমিক্যাল বর্জ্য নদীর পানির সঙ্গে মিশে যায়। মানুষের বর্জ্য, পলিথিন ও পলি মাটি মিলে কর্ণফুলী নদীতে প্রায় ৬ থেকে ১০ মিটার পলিথিনের স্তর পড়ার কথা জানিয়েছে পরিবেশবিদরা।

Comments