জলাবদ্ধতার জন্য নগরবাসীকে দায়ী করলেন চট্টগ্রামের মেয়র

‘মানুষ পলিথিন ও প্লাস্টিক বর্জ্য নর্দমা ও খালে ফেলে, তাই সেগুলো ভরাট হয়ে যায়। খাল-নালা পলিথিন ও প্লাস্টিক বর্জ্যে ভরাট হওয়ায় বৃষ্টির পানি দ্রুত সরে যেতে পারে না এবং জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।’
সমন্বয় সভায় চসিক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, নগরবাসীর দায়িত্বজ্ঞানহীনভাবে পলিথিন ও প্লাস্টিক বর্জ্য নর্দমা ও খালে ফেলা, পাহাড় কাটা এবং খালের অবৈধ দখল বন্দর নগরীতে জলাবদ্ধতার অন্যতম কারণ।

আজ সোমবার বিকেলে বন্দর নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনের প্রকল্প নিয়ে এক সমন্বয় সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

চসিক মেয়র বলেন, 'মানুষ পলিথিন ও প্লাস্টিক বর্জ্য নর্দমা ও খালে ফেলে, তাই সেগুলো ভরাট হয়ে যায়। খাল-নালা পলিথিন ও প্লাস্টিক বর্জ্যে ভরাট হওয়ায় বৃষ্টির পানি দ্রুত সরে যেতে পারে না এবং জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।'

তিনি বলেন, 'কর্ণফুলী নদীর তলায় ৭ মিটার পলিথিনের স্তর তৈরি হয়েছে। তাই নদী বৃষ্টির পানি ধারণ করতে পারছে না। এমনকি বিদেশি যন্ত্রপাতি ব্যবহার করেও নদী খনন করা কঠিন হয়ে পড়েছে।'

মেয়র বলেন, 'চট্টগ্রামের বেশির ভাগ পাহাড় বালুর হওয়ায় মানুষ যখন পাহাড় কাটে, বৃষ্টির সময় পাহাড় থেকে বালু নেমে আসে এবং নর্দমায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।'

তিনি বলেন, 'এক সময় নগরীতে প্রচুর প্রাকৃতিক জলাশয় ছিল, কিন্তু সেগুলো মানুষ ভরাট করে ভবন নির্মাণ করেছে। তাহলে বৃষ্টির পানি কোথায় গিয়ে জমা হবে?'

এক সময় নগরীতে ৭২টি খাল ছিল, যা কমে ৫৭টি দাঁড়িয়েছে উল্লেখ করে মেয়র বলেন, 'এর অনেকগুলো আবার প্রভাবশালীরা অবৈধভাবে দখলে করে আছে।'

পরিবেশ অধিদপ্তর কঠোর ব্যবস্থা নিলে পাহাড় কাটার সুযোগ থাকত না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, 'চসিকের কর্মীরা নিয়মিত নর্দমা ও খাল পরিষ্কার করেন, কিন্তু পরিষ্কার করে আসার কিছুক্ষণ পর মানুষ আবার প্লাস্টিক ও পলিথিন বর্জ্য ফেলে এগুলোকে ভরাট করে ফেলে।'

এ সময় মেয়র খালগুলো অবৈধ দখলমুক্ত করার ওপর জোর দেন।

তিনি আরও বলেন, 'জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ থেকে জনগণকে মুক্তি দিতে সব খাল রক্ষণাবেক্ষণের আওতায় আনতে হবে।'

মেয়র বলেন, '৫৭টি খালের মধ্যে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক) জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য একটি মেগা প্রকল্পের আওতায় ৩৬টি খালের কাজ করছে। চউক খাল থেকে মাটি খনন করেনি। তাই খালগুলো পানি ধারণ করতে না পারায় বৃষ্টির সময় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।'

'আজকের সমন্বয় সভায় চউক মেগা প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ১ বছরের মধ্যে স্লুইস গেট এবং পাম্প-হাউসের কাজ শেষ করার আশ্বাস দিয়েছেন এবং খালের ২ পাশে রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণের কাজ শেষ হওয়ার পরে তারা যে খালগুলো নিয়ে কাজ করছেন, সেখান থেকে মাটি খননের আশ্বাস দিয়েছেন,' যোগ করেন তিনি।

এই কাজগুলো শেষ হলে নগরবাসী জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পাবে বলে আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, 'এ মাসে বিগত ৩০ বছরের মধ্যে রেকর্ড বৃষ্টি হয়েছে, যা এ বছর শহরে তীব্র জলাবদ্ধতার আরেকটি কারণ।'

গত বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে চউক চেয়ারম্যান জহিরুল আলম অভিযোগ করেন, 'চসিকের সক্ষমতা না থাকায় সরকার জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য চউককে মেগা প্রকল্পের দায়িত্ব দিয়েছে।'

এই বক্তব্যের বিষয়ে চসিক মেয়র বলেন, 'এটা হয়তো স্লিপ অব টাং, কথার পিঠে কথা। তিনি কথা বলার সময় কথার পিঠে হয়তো এই কথা বলেছেন। তার কথাটি সহজভাবে নেওয়া উচিত।'

'প্রত্যেক সংস্থারই সক্ষমতা রয়েছে এবং সকলেই যোগ্য' উল্লেখ করে মেয়র বলেন, 'তিনি কথার ফাঁকে বলে ফেলেছেন। এটা নিয়ে টানা হ্যাচরা না করাই ভালো।'

Comments

The Daily Star  | English

Former lawmakers Asaduzzaman Noor, Mahbub Ali arrested

DB arrested Asaduzzaman Noor at 11:00pm from Nawratan colony on Bailey Road, while, Mahbub Ali was arrested from Segunbagicha area

8h ago