রাফাহ সীমান্ত দিয়ে কারা গাজা থেকে বেরোতে পারবেন

রাফাহ সীমান্তে জমায়েত হয়েছেন বিদেশী পাসপোর্টধারীরা। ছবি: রয়টার্স
রাফাহ সীমান্তে জমায়েত হয়েছেন বিদেশী পাসপোর্টধারীরা। ছবি: রয়টার্স

গাজা থেকে হাজারো মানুষ রাফাহ সীমান্তে এসে জড়ো হয়েছেন। ইসরায়েলের স্থলহামলার হুমকি এবং ফিলিস্তিনিদের গাজা ছাড়ার নির্দেশের পর হাজারো ফিলিস্তিনি সীমান্তের দিকে ছুটছেন।

তবে জাতিসংঘ জানিয়েছে, এখনও এই সীমান্তপথ খোলার কূটনীতিক তৎপরতা সফল হয়নি।

গাজা থেকে বের হওয়ার সব পথ অবরুদ্ধ করে রেখেছে ইসরায়েল ও মিশর। প্রায় ১০ দিন ধরে গাজায় বোমাবর্ষণ করছে ইসরায়েলি বাহিনী। 

এ পরিস্থিতিতে গাজায় আটকে পড়া বিদেশি নাগরিক ও দ্বৈত পাসপোর্টধারীদের বের করে আনা পশ্চিমা বিশ্বের প্রাধান্যের তালিকায় রয়েছে। এছাড়াও, সীমান্তের অপর প্রান্তে, অর্থাৎ, মিশরে বেশ কিছু ট্রাক ও লরি আটকে আছে, যেগুলোতে গাজার বাসিন্দাদের জন্য মানবিক সহায়তা ও ত্রাণ সামগ্রী রয়েছে। সীমান্ত খোলার সিদ্ধান্ত এলে এই বাহনগুলোও গাজার দিকে রওনা হবে।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ও যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলি জানান, তারা ইসরায়েল, মিশর ও এ অঞ্চলের 'অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক শক্তির' সঙ্গে রাফাহ সীমান্ত খুলে দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছেন।

গতকাল সোমবার ব্লিঙ্কেন ইসরায়েলে পৌঁছান, যা এক সপ্তাহের মাঝে দেশটিতে তার দ্বিতীয় সফর।

গত সপ্তাহে গাজায় পানি, খাবার ও জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করেছে ইসরায়েল। যার ফলে সেখানে বসবাসরত মানুষ মানবিক সংকটে পড়েছেন।

রাফাহ সীমান্তের মিশর অংশ। ছবি: রয়টার্স
রাফাহ সীমান্তের মিশর অংশ। ছবি: রয়টার্স

মিশরের সিনাই উপদ্বীপের সঙ্গে দক্ষিণ গাজার সংযোগকারী সীমান্ত এলাকার নাম রাফাহ, যা রাফাহ ক্রসিং নামে পরিচিত।

সোমবার খবর পাওয়া যায়, উভয় পক্ষ সাময়িক অস্ত্র বিরতিতে সম্মত হয়েছে এবং রাফাহ সীমান্ত খুলে দেওয়া হবে। যার ফলে হাজারো মানুষ সেখানে এসে জমায়েত হতে শুরু করে।

তবে ইসরায়েল ও হামাস উভয়ই এ ধরনের কোনো চুক্তিতে সম্মতি দেওয়ার কথা অস্বীকার করে।

গাজার দক্ষিণে মিশরের সাথে রাফাহ সীমান্তের অবস্থান। বিবিসির এক সাংবাদিক নিশ্চিত করেন, রাফাহ সীমান্তের কাছেই ইসরায়েল বোমাবর্ষণ করেছে। যার ফলে ফিলিস্তিনি অংশে একটি দালান ও সড়ক ক্ষতির শিকার হয়।

গাজায় হামলা শুরুর পর অন্তত তিন বার রাফাহ সীমান্তে বোমাবর্ষণ করেছে ইসরায়েল।

অন্যান্য সীমান্তপথে ইসরায়েলের অব্যাহত হামলার কারণে গাজা থেকে বিদেশিদের বের হয়ে আসার একমাত্র সম্ভাব্য পথ হিসেবে বিবেচনায় রয়েছে রাফাহ সীমান্ত।

রাফাহ সীমান্তের মিশর অংশে বেশ কয়েক ডজন জ্বালানি ও ত্রাণসামগ্রী বহনকারী লরি অপেক্ষা করছে বলে জানা গেছে। গাজায় মানবিক পরিস্থিতির অবনতির প্রেক্ষাপটে এই লরিগুলো অনুমতির অপেক্ষায় রয়েছে।

ইসরায়েল জানিয়েছে, জিম্মিদের মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত হামাসের বিরুদ্ধে হামলা অব্যাহত থাকবে। ইসরায়েলিরা জানিয়েছে, জিম্মির সংখ্যা ১৯৯ হতে পারে। এর আগে জানানো হয়েছিল, সংখ্যাটি ১৫৫।

রাফাহ সীমান্তের মিশর অংশ। ছবি: রয়টার্স
রাফাহ সীমান্তের মিশর অংশ। ছবি: রয়টার্স

গাজায় হামলা শুরুর পর প্রায় দুই হাজার ৭৫০ মানুষ নিহত হয়েছেন।

মিশরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সামেহ শৌকরি সোমবার সকালে জানান, 'গাজার ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের কষ্ট দূর করা খুবই জরুরি।'

তিনি আরও জানান, ইসরায়েলের সঙ্গে আলোচনায় কোনো ফল আসেনি।

তিনি আরও জানান, কায়রোর মূল লক্ষ্য হচ্ছে গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছানো।

যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যসহ বেশি কয়েকটি দেশ তাদের নাগরিকদের রাফাহ সীমান্তে যেতে বলেছে।

মিশর বিদেশি পাসপোর্টধারীদের সীমান্ত পার হতে এবং গাজায় ত্রাণসামগ্রী বহনকারী ট্রাক ও লরি যেতে দেওয়ার উদ্দেশ্যে রাফাহ সীমান্ত খুলে দিতে আগ্রহী। তবে দেশটি আশঙ্কা প্রকাশ করেছে, সীমান্ত খুলে দিলে গাজা থেকে  অসংখ্য ফিলিস্তিনি মিশরে ঢুকে পড়তে পারে।

Comments

The Daily Star  | English

Healthcare reform begins, service yet to improve

The health administration initiated a series of reforms to improve medical care but struggled to implement them, say health experts

9h ago