ত্রাণের অপেক্ষায় থাকা ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি হামলায় নিহত ১০৪, আহত ৭৬০

ওই এলাকায় অ্যাম্বুলেন্স না পৌঁছানোর কারণে নিহত ও আহতদের ট্রাকে করে হাসপাতালের দিকে নেওয়া হয়েছে।
হামলায় আহতদের আল-শিফা হাসপাতালে নেওয়া হলেও, সবাইকে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। ছবি: এএফপি

ত্রাণের অপেক্ষায় থাকা গাজাবাসীর ওপর ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১০৪ জন নিহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবারের এ হামলায় অন্তত ৭৬০ জন আহত হয়েছে বলে গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে সিএনএন জানিয়েছে।

গাজা শহরের পশ্চিমে আল-নাবুসি গোলচত্বরে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আল-রশিদ সড়ক দিয়ে ময়দা বহনকারী ত্রাণবাহী ট্রাক আসার কথা ছিল। সেখানে অসংখ্য গাজাবাসী অপেক্ষা করছিলেন ত্রাণের ট্রাকের। হঠাৎ সেখানে গুলিবর্ষণ শুরু হয়।

ওই এলাকায় অ্যাম্বুলেন্স না পৌঁছানোর কারণে নিহত ও আহতদের ট্রাকে করে হাসপাতালের দিকে নেওয়া হয়েছে।

এক প্রত্যক্ষদর্শী আল-জাজিরাকে বলেন, 'আমরা ময়দা আনতে গিয়েছিলাম। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী আমাদের লক্ষ্য করে গুলি করেছে। অনেকে নিহত হয়ে মাটিতে পড়ে আছেন।'

ঘটনাস্থল থেকে আল জাজিরার প্রতিবেদক ইসমাইল আল-ঘৌল জানান, গুলি চালানোর পর ইসরায়েলি ট্যাংক নিহত ও আহতদের উপর দিয়ে চলে যায়।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল-কিদরার বরাত দিয়ে বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানায়, হামলায় আহতদের মধ্যে অনেককে আল-শিফা হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তাদের চিকিৎসা দিতে স্বাস্থ্যকর্মীরা হিমশিম খাচ্ছেন।

গাজা শহরের কামাল আদওয়ান হাসপাতালের প্রধান হুসাম আবু সাফিয়াহ বলেন, শহরের পশ্চিমে হামলার ঘটনায় ১০ জনের মরদেহ এ হাসপাতালে আনা হয়েছে।

গত ৭ অক্টোবরে থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় প্রায় ১৩ হাজার শিশুসহ মোট ৩০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ডে অতর্কিত হামলা চালায় হামাস। এতে এক হাজার ২০০ জন নিহত হন এবং হামাসের হাতে জিম্মি হন প্রায় ২৫৩ জন মানুষ। জিম্মিদের মধ্যে ১৩০ জন এখনো গাজায় আছেন এবং ৩১ জন নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

এ ঘটনার পর থেকে প্রায় হামাসকে নির্মূলের লক্ষ্যে গাজায় পাঁচ মাস ধরে সর্বাত্মক ও নিরবচ্ছিন্ন হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। এই হামলায় নিহত ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী নিহত শিশুর সংখ্যা প্রায় ১৩ হাজার ও নারীর সংখ্যা প্রায় আট হাজারের মতো। 

মিশর, কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থাকারীরা ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি নিয়ে কাজ করছেন। তাদের আশাবাদ, ১০ বা ১১ মার্চ, অর্থাৎ, রমজান মাস শুরুর আগে থেকেই এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে।

 

Comments