নাইজারে ক্যুর প্রতি সেনাবাহিনীর আনুষ্ঠানিক সমর্থন, দেশজুড়ে অচলাবস্থা

দেশটির জাতীয় সংসদের সামনে অসংখ্য মানুষ জমায়েত হয়। তাদের কেউ কেউ ফ্রান্স-বিরোধী শ্লোগান দেয় ও রাশিয়ার পতাকা উঁচিয়ে ধরে। ছবি: রয়টার্স
দেশটির জাতীয় সংসদের সামনে অসংখ্য মানুষ জমায়েত হয়। তাদের কেউ কেউ ফ্রান্স-বিরোধী শ্লোগান দেয় ও রাশিয়ার পতাকা উঁচিয়ে ধরে। ছবি: রয়টার্স

নাইজারের প্রেসিডেন্ট মোহামেদ বাজুমকে এখনো বিদ্রোহী সেনা কর্মকর্তারা আটকে রেখেছেন। রক্ষীবাহিনী তাকে ক্ষমতা থেকে উৎখাতের ঘোষণা দেওয়ার পর এই ঘটনায় সেনাবাহিনী আনুষ্ঠানিক সমর্থন জানিয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।

নাইজারের সাবেক ঔপনিবেশিক শাসক ফ্রান্স ও পশ্চিম আফ্রিকার আঞ্চলিক সংগঠন ইকোওয়াস বাজুমকে শিগগির মুক্তি দেওয়া ও সংবিধান অনুযায়ী দেশটিতে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছে। রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভও জানান, দেশটিতে স্থিতিশীলতা ফেরানো জরুরি।

মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস জানান, 'গণতান্ত্রিক মানদণ্ডের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধতা' বজায় রাখতে নাইজার সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা অব্যাহত রাখা প্রয়োজন।

এছাড়াও জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের মুখপাত্র জানান, দেশটি জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলের মাধ্যমে নাইজারের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার উদ্যোগ নেওয়ার পক্ষে।

২০২০ সালের পর এটি পশ্চিম ও কেন্দ্রীয় আফ্রিকার সপ্তম ক্যুর ঘটনা। এ অঞ্চলের জঙ্গি তৎপরতা ঠেকানো ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার উদ্যোগে এটাকে বড় আঘাত হিসেবে বিবেচনা করছেন বিশ্লেষকরা। নাইজার পশ্চিমের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মিত্র।

এখনো নতুন কোনো নেতার নাম ঘোষণা করা হয়নি।

প্রেসিডেন্টের রক্ষীবাহিনীর মাধ্যমে এই ক্যুর সূত্রপাত ঘটে। সশস্ত্রবাহিনীর কিছু সুনির্দিষ্ট সদস্যকে নিয়ে এই বাহিনী গঠিত হয়। জেনারেল ওমর চিয়ানির নেতৃত্বাধীন এই বাহিনীর মূল দায়িত্ব প্রেসিডেন্ট ও তার সঙ্গীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

তবে বুধবার টেলিভিশনে বাজুমকে উৎখাত করার ঘোষণা দেওয়া সেনাদের মধ্যে ছিলেন না জেনারেল ওমর।

নাইজারের ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মোহামেদ বাজুম। ফাইল ছবি: রয়টার্স
নাইজারের ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মোহামেদ বাজুম। ফাইল ছবি: রয়টার্স

বৃহস্পতিবার ক্যুর সমর্থকরা রাজধানী নিয়ামেতে ক্ষমতাসীন দলের সদর দপ্তরে লুটপাট চালায় ও অগ্নিসংযোগ করে। সেনাবাহিনী, রক্ষীবাহিনীর ক্যুর প্রতি সমর্থন জানানোর পর এই ঘটনা ঘটে।

এর আগে, দেশটির জাতীয় সংসদের সামনে অসংখ্য মানুষ জমায়েত হয়। তাদের কেউ কেউ ফ্রান্স-বিরোধী শ্লোগান দেয় ও রাশিয়ার পতাকা উঁচিয়ে ধরে। এ ঘটনার মাধ্যমে সাবেক ঔপনিবেশিক প্রভু ফ্রান্স ও সাহেল অঞ্চলে তাদের প্রভাবের বিরুদ্ধে মানুষের বিক্ষোভ প্রকাশ পেয়েছে। নাইজার ফ্রান্সের কাছ থেকে ১৯৬০ সালে স্বাধীনতা অর্জন করে।

রাষ্ট্রায়ত্ত টিভিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতি প্রচার করা হয়। এতে মন্ত্রণালয় লুটপাট ও ভাংচুরের নিন্দা করে ও পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সব ধরনের সমাবেশ ও বিক্ষোভের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।

চিফ অব স্টাফের সাক্ষরিত বিবৃতিতে রক্ষীবাহিনীর অভ্যুত্থানের প্রতি আনুষ্ঠানিক সমর্থন জানায় সেনাবাহিনী।

সেনাবাহিনী জানায়, তাদের প্রাধান্য হচ্ছে দেশকে অস্থিতিশীল হওয়া থেকে রক্ষা করা এবং প্রেসিডেন্ট ও তার পরিবারকে সুরক্ষিত রাখা।

বুধবার রক্ষীবাহিনীর সদস্যরা প্রেসিডেন্টকে তার প্রাসাদের ভেতর আটক করে।

রক্ষীবাহিনীর মুখপাত্র কর্নেল আমাদৌ আবদ্রামানে বৃহস্পতিবার জানান, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সব ধরনের রাজনৈতিক দলের কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করা হল।

বাজুম বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করে জানান, 'কষ্টার্জিত' গণতন্ত্রকে সুরক্ষিত রাখার জন্য তিনি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

Comments

The Daily Star  | English

Child rape cases rise nearly 75% in 7 months

Child rape cases in Bangladesh have surged by nearly 75 percent in the first seven months of 2025 compared to the same period last year, according to data from Ain o Salish Kendra (ASK).

4h ago