উত্তর কোরিয়ায় পুতিন-কিম বৈঠকের সম্ভাবনা, নজর রাখছে যুক্তরাষ্ট্র-দক্ষিণ কোরিয়া
এ মাসেই উত্তর কোরিয়া সফরে যেতে পারেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এ বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ওয়াশিংটন।
আজ শুক্রবার এই তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।
দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র হুশিয়ারি দিয়েছে, এ ধরনের বৈঠক জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলের সিদ্ধান্তের লঙ্ঘন।
বিশ্লেষকদের মতে, পুতিন ও উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের এই বৈঠকে দুই দেশের সামরিক সম্পর্ক আরও গভীর হতে পারে।
দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট কিম হং-কিউন জরুরি ফোনকলে মার্কিন উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী কার্ট ক্যাম্পবেলের সঙ্গে কথা বলেছেন।
হং-কিউন মার্কিন কূটনীতিক কার্টকে বলেন, 'পুতিনের এই সফরের মাধ্যমে মস্কো ও পিয়ংইয়ংয়ের মধ্যে সামরিক সহযোগিতার মাত্রা বাড়তে দেওয়া চলবে না।'
মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, 'পরিস্থিতির ওপর কড়া নজর রাখা হবে এবং দুই দেশ পারস্পরিক সমঝোতার মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে উত্তর কোরিয়ার উসকানিমূলক আচরণ ও এ অঞ্চলের অস্থিরতা বাড়াতে পারে এমন যেকোনো উদ্যোগের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে।'
পুতিনের সফর এ অঞ্চলে কোনো ধরনের অস্থিতিশীলতা বা সমস্যা সৃষ্টি করলে দক্ষিণ কোরিয়াকে নিরবচ্ছিন্ন সমর্থন জানানোর অঙ্গীকার করেছেন কার্ট ক্যাম্পবেল।
রুশ পত্রিকা ভেদোমোসতি সোমবার জানায়, আগামী দুই-এক সপ্তাহের মধ্যে উত্তর কোরিয়া ও ভিয়েতনাম সফর করবেন পুতিন।
বৃহস্পতিবার পুতিনের সফরের বিস্তারিত তথ্য জানতে চাওয়া হলে মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ।
পেসকভ বলেন, 'প্রতিবেশীদের সঙ্গে ভাল সম্পর্কে গড়ে তোলার অধিকার আমাদের আছে এবং এতে কারও উদ্বেগের কারণ নেই।'
তিনি উল্লেখ করেন, 'উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। তাদের সঙ্গে আমরা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়ন করছি।'
'আমরা আগামীতে আরও উন্নয়ন করব। অনেক দূর পর্যন্ত এই সম্পর্কের উন্নয়ন হতে পারে', যোগ করেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্র এর আগে দাবি করেছিল, উত্তর কোরিয়ায় নির্মিত ক্ষেপণাস্ত্র ও কামানের গোলা ব্যবহার করে ইউক্রেনের ওপর হামলা চালিয়েছে রাশিয়া।
মস্কো ও পিয়ংইয়ং উভয়ই এই দাবি অস্বীকার করেছে।
তবে গত সেপ্টেম্বরে দুই নেতা পূর্ব রাশিয়ায় বৈঠক করে সামরিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়ানোর অঙ্গীকার করেন।
বুধবার কার্ট জানান, উত্তর কোরিয়া রাশিয়াকে কী দিয়েছে, সে সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে গ্রহণযোগ্য তথ্য রয়েছে এবং এতে 'যুদ্ধক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়েছে'।
তবে বিনিময়ে রাশিয়া উত্তর কোরিয়াকে কী দিয়েছে, তা অতটা স্পষ্ট নয় বলে জানান মার্কিন উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
'নগদ অর্থ? জ্বালানি? নাকি পরমাণু অস্ত্র ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রকল্পকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সক্ষমতা? আমরা তা জানি না। আমরা বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন এবং এ কারণে সতর্কতার সঙ্গে পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছি', যোগ করেন তিনি।
সাম্প্রতিক সময়ে কিম জং উন উত্তর কোরিয়ার অস্ত্রভাণ্ডারের আধুনিকায়নের উদ্যোগ হাতে নিয়েছেন। গত নভেম্বর থেকে বেশ কিছু আধুনিক অস্ত্র পরীক্ষা করেছে দেশটির সামরিক বাহিনী, যার মধ্যে রয়েছে মহাকাশে প্রথম গোয়েন্দা স্যাটেলাইট পাঠানো।
Comments