পাল্টা আক্রমণ ঠেকাতে পারমাণবিক প্ল্যান্টের বাইরে ট্রেঞ্চ খুঁড়ছে রাশিয়া

বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে কাজ করেন এমন ২ ইউক্রেনীয় নাগরিক ও কারখানার কাছাকাছি অবস্থিত এনেরহোদার শহরের ২ বাসিন্দা রয়টার্সের কাছে এসব বর্ণনা দেন। পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাছে যুদ্ধ শুরু হলে তা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে বলে তারা মত দেন। 
ঝাপোরিঝঝিয়ার পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র। ফাইল ছবি: রয়টার্স
ঝাপোরিঝঝিয়ার পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র। ফাইল ছবি: রয়টার্স

ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত ঝাপোরিঝঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের ভেতরে ও আশেপাশের জায়গায় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করছে রাশিয়া।

আজ শুক্রবার বার্তা সংস্থা রয়টার্স ৪ প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে জানিয়েছে, ইউক্রেনের পক্ষ থেকে সম্ভাব্য আক্রমণ প্রতিহত করার কথা মাথায় রেখেই রুশ বাহিনী এ ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে। 

শহরের চারপাশে নতুন করে ট্রেঞ্চ খোঁড়া হয়েছে এবং আরও বেশি পরিমাণে ভূমি মাইন পোতা হয়েছে। কারখানার নজরদারি ক্যামেরাগুলো উত্তরে ইউক্রেন নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলের দিকে তাক করে রাখা হয়েছে বলে জানান তারা। 

শত্রুর ওপর গুলিবর্ষণের উদ্দেশ্যে কারখানার কিছু দালানের ছাদে অবস্থান নিয়েছে রুশ সেনারা। এছাড়াও, ড্রোন ঠেকাতে বেশ কয়েকটি স্থানে জাল স্থাপন করা হয়েছে।

বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে কাজ করেন এমন ২ ইউক্রেনীয় নাগরিক ও কারখানার কাছাকাছি অবস্থিত এনেরহোদার শহরের ২ বাসিন্দা রয়টার্সের কাছে এসব বর্ণনা দেন। পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাছে যুদ্ধ শুরু হলে তা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে বলে তারা মত দেন। 

ব্যক্তিগত নিরাপত্তার কারণে প্রত্যক্ষদর্শীরা তাদের নাম প্রকাশ করতে চাননি।

ইউক্রেনের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা, রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক জ্বালানি প্রতিষ্ঠান রোসাতমের সঙ্গে মন্তব্যের জন্য যোগাযোগ করা হলেও তারা উত্তর দেয়নি।

পরমাণু খাতের কয়েকজন বিশেষজ্ঞ আশঙ্কা প্রকাশ করেন, এই কারখানার কোনো ক্ষতি হলে তা আশেপাশের এলাকা ও বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর সমস্যা তৈরি করবে। এটি যুদ্ধ ও বৈশ্বিক পারমাণবিক খাতকেও প্রভাবিত করবে।

জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) জানিয়েছে, এ অঞ্চলে সামরিক বাহিনীর উপস্থিতি ও কার্যক্রম বাড়ছে, যার ফলে জরুরি উদ্যোগ প্রয়োজন। সংস্থাটি বেশ কয়েক মাস ধরে এ কারখানাকে ঘিরে সম্ভাব্য বড় আকারের দুর্ঘটনার বিপদ সম্পর্কে সচেতনতা তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে। 

৪ কূটনীতিক রয়টার্সকে জানিয়েছে, সংস্থাটি এই কারখানাকে সুরক্ষিত রাখার জন্য রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে একটি চুক্তির খসড়া নিয়ে কাজ করছে, যেটি এ মাসের শেষের দিকে জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলে উপস্থাপন করা হবে।

সম্প্রতি ইউক্রেন জানিয়েছে, তারা শিগগির রাশিয়ার অধিকৃত ভূখণ্ড দখলমুক্ত করার জন্য বড় আকারে পাল্টা আক্রমণ চালাবে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, তারা দক্ষিণাঞ্চলে আক্রমণ করবে, কারণ এ অঞ্চলটি কৌশলগত দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ—এটি ক্রিমিয়া ও কৃষ্ণ সাগরের মাঝে যোগসূত্র স্থাপন করে থাকে।

পশ্চিম রাশিয়া থেকে ক্রিমিয়া পর্যন্ত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করেছে রাশিয়া। ইউক্রেনের দখলে থাকা দক্ষিণাঞ্চলের এলাকাগুলো থেকে শুরু করে মেলিতোপোল পর্যন্ত বড় আকারে  ট্রেঞ্চ খুঁড়েছে রাশিয়া। এ থেকে বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন, এ অঞ্চলেও আক্রমণ আসতে পারে বলে ভাবছে রাশিয়া।

 

Comments

The Daily Star  | English

Rooppur Nuclear Power Plant: First unit to start production in Dec

One of the two units of the Rooppur Nuclear Power Plant will be commissioned this December if transmission lines are ready although the deadline for the project’s completion has been extended to 2027.

4h ago