স্নায়ুযুদ্ধের কূটকৌশলে ফিরে যাচ্ছে ন্যাটো: রাশিয়া

ন্যাটো সম্মেলনে শীর্ষ নেতারা। বাম থেকে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী রিশি সুনাক, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্সকি। জেলেনস্কির পেছনে ন্যাটোর মহাসচিব ইয়েন্স স্টলটেনবার্গ। ছবিঃ রয়টার্স
ন্যাটো সম্মেলনে শীর্ষ নেতারা। বাম থেকে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী রিশি সুনাক, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্সকি। জেলেনস্কির পেছনে ন্যাটোর মহাসচিব ইয়েন্স স্টলটেনবার্গ। ছবিঃ রয়টার্স

রাশিয়া জানিয়েছে, সর্বশেষ ন্যাটো সম্মেলন এটাই প্রমাণ করেছে যে, এই পশ্চিমা সামরিক জোট 'স্নায়ুযুদ্ধের আমলের কূটকৌশলে' ফিরে যাচ্ছে। রাশিয়া আরো জানায়, মস্কো এ ধরনের যেকোনো ঝুঁকি 'যেকোনো উপায়ে' মোকাবিলা করতে প্রস্তুত।

আজ বৃহস্পতিবার কাতার ভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা গেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ন্যাটো সম্মেলনের শেষে মন্তব্য করেন, রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের 'ভূমি ও ক্ষমতা দখলের কাপুরুষোচিত লোভ' রয়েছে এবং তিনি ন্যাটোর, ইউক্রেনকে সহায়তা করার অঙ্গীকারকে ছোট করে দেখেছেন।

তিনি বলেন, 'যখন পুতিন ভুমি ও ক্ষমতা দখলের কাপুরুষোচিত লোভের বশবর্তি হয়ে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সহিংস যুদ্ধ শুরু করেন, তখন তিনি বাজি ধরেছিলেন, ন্যাটো বিভক্ত হয়ে পড়বে—কিন্তু তিনি ভুল ভেবেছিলেন।'

'ন্যাটো এখন আগের চেয়েও শক্তিশালী, আরও উজ্জিবীত এবং হ্যাঁ, ইতিহাসের অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি একতাবদ্ধ। এ বিষয়গুলো নিঃসন্দেহে আমাদের সবার জন্য একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।'

রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বুধবার দিনের শেষে এক বিবৃতিতে জানায়, ন্যাটো সম্মেলনের ফলাফলকে 'সতর্কতার সঙ্গে বিশ্লেষণ' করা হবে যাতে রুশ নিরাপত্তার বিরুদ্ধে সম্ভাব্য ঝুঁকিগুলো চিহ্নিত করা যায়।

রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিবৃতিতে জানায়, 'রাশিয়ার নিরাপত্তা ও স্বার্থের বিরুদ্ধে কোনো ঝুঁকি বা চ্যালেঞ্জ চিহ্নিত করা হলে আমরা সময়োপোযোগী ও যথোপযুক্ত প্রতিক্রিয়া দেখাবো এবং প্রয়োজনে, আমাদের কাছে থাকা সব ধরনের উপায় কাজে লাগিয়ে।'

মন্ত্রণালয় অভিযোগ করে, ন্যাটো ধারাবাহিকভাবে কোন পরিস্থিতিতে সামরিক শক্তি ব্যবহার করা যাবে, সে মানদন্ডে পরিবর্তন আনছে এবং একইসঙ্গে ইউক্রেনকে আরো শক্তিশালী ও অত্যাধুনিক অস্ত্র দিয়ে রাজনৈতিক ও সামরিক অস্থিরতা বাড়াছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ''ন্যাটো কিয়েভকে আরও আধুনিক ও দূরপাল্লার অস্ত্র দিয়ে এই সংঘাতকে দীর্ঘায়িত করতে চায়।'

রাশিয়া তাদের সামরিক সক্ষমতা ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার শক্তিমত্তা বাড়িয়ে প্রতিক্রিয়া জানাবে।

লিথুয়ানিয়ায় অনুষ্ঠিত ২ দিন ব্যাপী ন্যাটো সম্মেলনের শুরুতে জানা যায়, তুরস্ক সুইডেনের ন্যাটো জোটে যুক্ত হওয়ার বিষয়টির অনুমোদন দিয়েছে।

বুধবার সম্মেলন শেষ হওয়ার আগে যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্ররা ইউক্রেনের জন্য নতুন নিরাপত্তা সহযোগিতার আশ্বাস দেয়।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এই সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। তাকে দীর্ঘমেয়াদী নিরাপত্তা দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়, কিন্তু  জেলেনস্কির জোরদার তদবির সত্তেও কবে দেশটি ন্যাটোর সদস্য হতে পারবে, সে বিষয়ে সুনিদৃষ্ট কোনো তথ্য জানান হয়নি।

রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্ভেই লাভরভ বুধবার বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর সহযোগীরা রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি সামরিক সংঘাতের ঝুঁকি সৃষ্টি করছেন এবং এর পরিণামে আসতে পারে ভয়াবহ বিপর্যয়।'

লাভরভ ইউক্রেনকে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান দেওয়া প্রসঙ্গে জানান, এই উড়োজাহাজগুলো পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম।

তিনি বলেন, 'ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীতে এ ধরনের প্রযুক্তি যুক্ত হলে আমরা একে পশ্চিমের কাছ থেকে আসা সরাসরি পারমাণবিক ঝুঁকি হিসেবে বিবেচনা করবো।'

রুশ নিরাপত্তা কাউন্সলের সহকারী সচিব দিমিত্রি মেদভেদেভ মঙ্গলবার সতর্ক করেন, ন্যাটো ইউক্রেনকে সহায়তা করার মাধ্যমে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ ডেকে আনছে।

আগস্টে রোমানিয়ায় ইউক্রেনীয় বৈমানিকদের এফ-১৬ যুদ্ধবিমান পরিচালনার প্রশিক্ষণ শুরু হবে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

তবে এখনো ইউক্রেনকে কয়টি যুদ্ধবিমান দেওয়া হবে বা কবে দেওয়া হবে, সে বিষয়ে ন্যাটোর মিত্ররা একমত হননি।

 

Comments

The Daily Star  | English

Expatriates' remittance helps Bangladesh make turnaround: Yunus

It is the expatriates who help sustain the country, says the chief adviser

7h ago