'কৃষ্ণ সাগরে যেকোনো ইউক্রেনগামী জাহাজ সামরিক লক্ষ্যবস্তু'

বুধবার রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, তারা ইউক্রেনের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়া যেকোনো জাহাজকে কিয়েভের সামরিক উপকরণ পরিবহনকারী নৌযান হিসেবে বিবেচনা করবে এবং এসব জাহাজ ‘যেসব দেশের পতাকা বহন করবে, সে দেশগুলোকেও ইউক্রেনীয় সংঘাতে অংশগ্রহণকারী দেশ হিসেবে বিবেচনা করা হবে।’
কৃষ্ণ সাগরে শস্য পরিবহনকারী জাহাজ। ফাইল ছবি: রয়টার্স
কৃষ্ণ সাগরে শস্য পরিবহনকারী জাহাজ। ফাইল ছবি: রয়টার্স

রাশিয়া সতর্ক করেছে, কৃষ্ণ সাগরে ইউক্রেনীয় বন্দরগামী জাহাজগুলোকে সম্ভাব্য সামরিক লক্ষ্যবস্তু হিসেবে বিবেচনা করা হবে।

আজ বৃহস্পতিবার বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

সম্প্রতি কৃষ্ণসাগর শস্য রপ্তানি চুক্তি থেকে নিজেদের নাম প্রত্যাহার করে নেয় রাশিয়া। এরপর কিয়েভ জানায়, তারা শস্য রপ্তানির জন্য একটি অস্থায়ী প্রক্রিয়া চালু করেছে। 

বুধবার রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, তারা ইউক্রেনের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়া যেকোনো জাহাজকে কিয়েভের সামরিক উপকরণ পরিবহনকারী নৌযান হিসেবে বিবেচনা করবে এবং এসব জাহাজ 'যেসব দেশের পতাকা বহন করবে, সে দেশগুলোকেও ইউক্রেনীয় সংঘাতে অংশগ্রহণকারী দেশ হিসেবে বিবেচনা করা হবে।'

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টেলিগ্রামে দেওয়া এক বিবৃতিতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা বুধবার মস্কোর স্থানীয় সময় মধ্যরাত থেকে কৃষ্ণ সাগরে যাতায়াতকারী জাহাজের ক্ষেত্রে নতুন এই মনোভাবের বাস্তবায়ন করতে শুরু করবে।

তবে ইউক্রেনগামী জাহাজের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সেটি সুনির্দিষ্টভাবে জানায়নি মন্ত্রণালয়।

রাশিয়া আরও জানায়, কৃষ্ণ সাগরের দক্ষিণ-পূর্ব ও উত্তর-পশ্চিমে আন্তর্জাতিক সমুদ্রসীমার অংশটি এ মুহূর্তে নৌ-চলাচলের জন্য নিরাপদ নয়। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।

ইউক্রেন বুধবার জানায়, সাময়িক ভাবে প্রতিবেশী দেশ রোমানিয়ার মাধ্যমে শস্য রপ্তানির নতুন রুট তৈরি করছে তারা।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত বিবৃতিতে ইউক্রেনগামী আন্তর্জাতিক জাহাজগুলোর উদ্দেশ্যে বলা হয়, '২০ জুলাই মধ্যরাত থেকে কৃষ্ণ সাগরে কোনো নৌযান ইউক্রেনের বন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা হলে সেগুলোকে সামরিক উপকরণবাহী জাহাজ এবং ইউক্রেন সংঘাতে কিয়েভের পক্ষাবলম্বনকারী হিসেবে বিবেচনা করা হবে।'

বুধবার রাশিয়া ইউক্রেনের ওডেসা বন্দরে বড় আকারে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায়।

শস্য চুক্তির আওতায় বেশিরভাগ রপ্তানি এই বন্দরের মাধ্যমেই হোত।

ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী জানায়, হামলায় বন্দরের শস্য টার্মিনাল ও ভোজ্য তেল টার্মিনাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও, শস্য সংরক্ষণ ও জাহাজে ওঠানোর কাজে ব্যবহৃত অবকাঠামোও ক্ষতির শিকার হয়। ওডেসার শহরতলিতে কিছু গুদামের ক্ষতি হয়েছে।

ওডেসার মেয়র হেন্নাদি ত্রুখানভ ফেসবুকে জানান, 'এর আগে সর্বশেষ আমরা রুশ আগ্রাসনের শুরুর দিকে এরকম বড় আকারের আক্রমণ দেখেছিলাম।'

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানান, ওডেসার হামলায় প্রায় ৬০ হাজার টন শস্য ধ্বংস হয়েছে। তিনি দাবি করেন, শস্য রপ্তানি চুক্তি থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর রাশিয়া ইচ্ছে করেই ওডেসা বন্দরে হামলা চালাচ্ছে।

তিনি টেলিগ্রামে বলেন, 'রুশ সন্ত্রাসীরা পুরোপুরি ইচ্ছাকৃতভাবে শস্য চুক্তির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অবকাঠামোর ওপর হামলা চালাচ্ছে। প্রতিটি রুশ ক্ষেপণাস্ত্র শুধু ইউক্রেনকেই নয় বরং সারা পৃথিবীর স্বাভাবিক ও নিরাপদ জীবন কামনাকারী জনগোষ্ঠীকে আঘাত করছে।'

জেলেনস্কি পরবর্তীতে তার রাত্রিকালীন বক্তব্যে পশ্চিমা অংশীদারদের কাছে আরও উন্নত আকাশ হামলা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দেওয়ার আহ্বান জানান, যাতে এ ধরনের হামলা প্রতিহত করা যায়।

Comments

The Daily Star  | English

Horrors inside the Gaza genocide: Through a survivor’s eyes

This is an eye-witness account, the story of a Palestinian in Gaza, a human being, a 24-year-old medical student, his real human life of love and loss, and a human testimony of war crimes perpetrated by the Israeli government and the military in the deadliest campaign of bombings and mass killings in recent history.

1d ago