দেড় বছরে ১১ জনকে কামড়, বাইডেনের কুকুর সরানো হলো হোয়াইট হাউস থেকে

জো, জিল ও কমান্ডার বাইডেন। ছবি: এএফপি
জো, জিল ও কমান্ডার বাইডেন। ছবি: এএফপি

প্রায় প্রতিদিনই অনলাইন ও অফলাইন সংবাদ মাধ্যমের শিরোনাম হন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। মজার বিষয় হল, এ বাইডেনের পোষা কুকুর 'কমান্ডার' ও নিয়মিত খবরের কাগজের শিরোনাম হয়।

তবে ভালো কোনো কাজের জন্য নয়, যাকে তাকে কামড়ে দেবার অভ্যাসের কারণেই কমান্ডারকে নিয়ে এত আলাপ।

বাইডেনের কুকুর কমান্ডারকে নিয়ে সর্বশেষ খবর হচ্ছে, হোয়াইট হাউস থেকে তাকে সরানো হয়েছে। নির্বিচারে কামড়ে বেড়ানোর শাস্তি হিসেবেই হোয়াইট হাউস থেকে কমান্ডারের এই নির্বাসন, এতে কোনো সন্দেহ নেই।

হোয়াইট হাউজ থেকে সরানো হল কমান্ডারকে। ছবি: এএফপি
হোয়াইট হাউজ থেকে সরানো হল কমান্ডারকে। ছবি: এএফপি

সিএনএন ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেনের যোগাযোগ বিষয়ক পরিচালক এলিজাবেথ আলেক্সান্ডারের বরাত দিয়ে জানায়, কমান্ডার নিয়ে সৃষ্ট 'পরিস্থিতি' সামলানোর চেষ্টা চলছে।

এলিজাবেথ বলেন, 'প্রেসিডেন্ট ও ফার্স্ট লেডি, উভয়ই হোয়াইট হাউসের কর্মী ও তাদের সুরক্ষাবাহিনীর প্রতি অত্যন্ত যত্নশীল। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা বিভাগ ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট বাহিনীর সদস্যদের ধৈর্য ও সমর্থনের জন্য বাইডেন দম্পতি কৃতজ্ঞ এবং একইসঙ্গে তারা এ বিষয়টির সমাধানের জন্য কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। পরবর্তী উদ্যোগ গ্রহণের আগ পর্যন্ত কমান্ডার হোয়াইট হাউস প্রাঙ্গণে থাকছে না।'

কমান্ডারের এই প্রস্থান স্থায়ী না অস্থায়ী, এমন কী, কমান্ডারের বর্তমান অবস্থান সম্পর্কেও খুব একটা কিছু জানা যায়নি। হোয়াইট হাউস এলাকায় কমান্ডারকে শেষ দেখা গিয়েছিল গত ৩০ সেপ্টেম্বর। বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, সে তখন প্রেসিডেন্টের ব্যক্তিগত কোয়ার্টারের ট্রুম্যান ব্যালকনি অংশে ছিল।

কমান্ডারের সঙ্গে জো বাইডেন। ছবি: এএফপি
কমান্ডারের সঙ্গে জো বাইডেন। ছবি: এএফপি

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেনের অতি আদরের দুই বছর বয়সী এই জার্মান শেফার্ডটিকে নিয়ে বেশ বিপাকেই আছে আশেপাশের লোকজন। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত মোট ১১ বার বিভিন্ন জনকে কামড়ে দিয়েছে কমান্ডার। একবার তো এক সিক্রেট সার্ভিস এজেন্টকে হাসপাতালেও পাঠিয়েছে কমান্ডার।

হোয়াইট হাউসের মানুষজন মোটামুটি কমান্ডারের ভয়ে নাস্তানাবুদ, এতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে দুয়ে দুয়ে চার মেলাতে গেলে দেখা যাবে, বাইডেনে এটি প্রথম কুকুর নয়– যে মানুষকে কামড়ে বেড়াচ্ছে। হোয়াইট হাউসে আসার পর বাইডেনের প্রথম পোষা কুকুর চ্যাম্পের সঙ্গী মেজরও ছিল একটি জার্মান শেফার্ড। এবং মেজরেরও বেশ কয়েকবার কামড়ে দেবার দুর্নাম রয়েছে।

পরপর দুটো জার্মান শেফার্ডের এমন আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠা এবং মানুষজনের জন্য বিপদ ডেকে আনার এই ধারা কেন মিলে যাচ্ছে, এ নিয়ে কৌতূহল জন্ম নিতেই পারে। এক্ষেত্রে বিশেষ করে হোয়াইট হাউসের কোনো ভূমিকা আছে কী না, এ নিয়েও প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক।

জে ডব্লিউ ডগ ট্রেইনিং অ্যান্ড বিহেভিয়ার কনসাল্টিং নামের প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী ও প্রধান প্রশিক্ষক জুলিয়ানা ডেউইলেমস এ বিষয়ে তার বিশেষজ্ঞ মতামত দিয়েছেন। তিনি বলেন, 'যেসব কুকুরের আচরণ আক্রমণাত্মক, তাদের জন্য শান্তিপূর্ণ ও স্বাভাবিক পরিবেশ দরকার, যা সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়। আমার মনে হয় হোয়াইট হাউসের ক্ষেত্রে এর বিপরীত চিত্রটাই ঘটেছে। সেখানে পরিবেশ কখনোই স্থিতিশীল থাকে না। নতুন নতুন মানুষ প্রায়ই আসা-যাওয়া করে এবং বিশৃঙ্খলা লেগেই থাকে। তাই কমান্ডারের মতো মেজাজী কুকুরের জন্য এটি মানসিক চাপের কারণ হতে পারে।'

বারান্দা থেকে বাইডেনের দিকে উৎসুক নেত্রে তাকিয়ে তার প্রিয় পোষা কুকুর। ছবি: এএফপি
বারান্দা থেকে বাইডেনের দিকে উৎসুক নেত্রে তাকিয়ে তার প্রিয় পোষা কুকুর। ছবি: এএফপি

এক্ষেত্রে উল্লেখ্য যে, জার্মান শেফার্ড কুকুরও জুলিয়ানার বর্ণিত কুকুর শ্রেণির মধ্যেই পড়ে। জার্মান শেফার্ডের স্বভাবগত আচরণ দুটো কাজের জন্য সবচেয়ে বেশি উপযোগী। একটি হচ্ছে নেতৃত্ব ও অপরটি হচ্ছে সুরক্ষা বা পাহারা দেওয়া। এ ধরনের কুকুরদের বুদ্ধিমত্তা, শারীরিক দক্ষতা অন্যান্য অনেক প্রজাতির চেয়ে বেশি। জার্মান শেফার্ড জাতীয় কুকুরের জন্য পরিবেশ-পারিপার্শ্বিকতা অত্যন্ত জরুরি একটি প্রভাবক। যা কমান্ডারের আচরণেও প্রভাব ফেলার কথা। বাইডেন পরিবার এর আগেও হোয়াইট হাউসের অশান্ত পরিবেশকে তাদের পোষা প্রাণীদের মানসিক চাপের ও অদ্ভুত আচরণের কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

কমান্ডার আবারো হোয়াইট হাউসে ফিরে শান্তির জীবন কাটাবে নাকি দূরে দূরেই থাকবে, এখনো এ বিষয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে কমান্ডারের সঙ্গে তাৎক্ষণিক দূরত্বে হোয়াইট হাউজের কর্মী ও সুরক্ষাবাহিনী যে কামড়ের ভয় থেকে মুক্তি পেয়ে কিছুটা হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

সূত্র: সিএনএন, বিবিসি, রয়টার্স, এএফপি

 

Comments

The Daily Star  | English

Threat of fresh Rohingya influx looms as clashes erupt in Myanmar

Gunfire and explosions were heard late Friday night from villages across the border in Myanmar opposite Whykong union in Teknaf upazila of Cox’s Bazar. Residents, gripped by panic, reported that this was the most intense gunfire they had heard in months.

5h ago