নগর ব্যবস্থাপনায় ঢাকা-কলকাতা সিটি করপোরেশন
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতা এবং ঢাকা শহরের নানান সুবিধা-অসুবিধার পাশাপাশি দুই নগর ব্যবস্থাপনায় সফলতাসহ বিভিন্ন বিষয়কে একে অপরের জন্য কাজে লাগাতে চাইছে কলকাতা ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।
সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে ঐতিহ্যবাহী এই দুটি নগর প্রশাসনের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে যাচ্ছে। এই চুক্তির ফলে দুই নগরের মানুষ উপকৃত হবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
গতকাল (৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে কলকাতা করপোরেশনের মেয়রের কার্যালয়ে কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হামিকের সঙ্গে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকনের জরুরি বৈঠক হয়। পাশাপাশি মেয়রে সঙ্গে আগত ছয় সদস্যের প্রতিনিধি দল সেমিনার হলে প্রায় তিন ঘণ্টা কলকাতা নগরের বিভিন্ন বিষয়ে অডিও-ভিজুয়াল প্রেজেন্টেশন দেখেন এবং কলকাতা করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেন।
দুই মেয়রের সঙ্গে ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তারা। সে সময় কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, "বাংলাদেশ বন্ধুপ্রতিম প্রতিবেশী দেশ। সেই দেশের রাজধানী ঢাকা। সেই শহর একটি ঐতিহাসিক শহর। তাই সেই শহরের নগর ব্যবস্থাপনার যে কোনও সহযোগিতার জন্য আমরা প্রস্তুত। একইভাবে ঢাকার নগর ব্যবস্থাপনা থেকেও আমাদের বেশ কিছু বিষয়ে শেখার আছে। সেসবও আমরা তাদের কাছ থেকে জানবো।"
এ সময় ঢাকা দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, "কলকাতার শহরে একসময় ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটের দৃশ্য দেখেছি। কিন্তু, আজ সেই শহরে ট্রাফিক ব্যবস্থার এতো উন্নতি হয়েছে যে, আমাদের কাছে সেটি খুবই আশাব্যঞ্জক। এছাড়াও নগরায়নের যেভাবে উন্নয়ন দৃশ্যমান হয়েছে তার জন্য কলকাতা করপোরেশনকে ধন্যবাদ জানাতেই হয়।"
"কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ইতিমধ্যেই গিনেস বুক অফ রেকর্ডসে জায়গা করেছে। কিন্তু, আমাদের শহরে যানজট রয়েছে। সেই সব বিষয় নিয়ে কলকাতা-ঢাকা সিটি করপোরেশনের মধ্যে একটা চুক্তি হচ্ছে। সেই চুক্তির মাধ্যমেই মূলত আমরা দুই শহরের নগর ব্যবস্থাপনায় একে অপরের সাহায্যে হাত বাড়াবো," যোগ করেন খোকন।
এদিনের বৈঠকে কলকাতার বাংলাদেশ উপ-দূতাবাসের নিযুক্ত উপ-হাইকমিশনার তৌফিক হাসানও উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ১৮৯৬ সালে ১৮৮ বর্গ কিলোমিটার অঞ্চলে বাসবাসরত কলকাতা নগর ব্যবস্থাপনাকে সুষ্ঠু ও নাগরিকদের উন্নত পরিষেবা নিশ্চিত করতে গঠিত হয়েছিল 'করপোরেশন অফ ক্যালকাটা'।
এরপর ১৯২২ সালে 'কলকাতা পৌর সংস্থা' নামে একটি সংস্থায় রুপ নেয় নাগরিকদের সুবিধাদানকারী এই প্রতিষ্ঠানটি।
রোজ প্রায় দুই কোটির মানুষের পদচারণায় মুখরিত এই শহরে যেমন চলে বাস, টেক্সি ও রিক্সা। তেমন চলে মেট্রো এবং ট্রামও।
এতো মানুষের বসবাস, তাই প্রতিদিন হাজার হাজার টন বর্জ্য তৈরি হয়। তবে, সবকিছু কলকাতা পৌর সংস্থার এক ছাদের তল থেকেই সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালিত হচ্ছে।
Comments