কন্ডিশনের মেজাজ বুঝতে না পেরে সাদামাটা ব্যাটিং

Mohammad Mithun
ছবি: ব্ল্যাকক্যাপস টুইটার

দুই কিউই পেসার ট্রেন্ট বোল্ড আর ম্যাট হেনরি স্যুয়িং -বাউন্সে নাকাল করে শুরুতেই ব্যাকফুটে ঠেলে দেন বাংলাদেশকে। স্যুয়িংয়ের পসরার মাঝে শুরুতে পাল্টা দাপট দেখিয়েছিলেন সৌম্য সরকার। টানতে পারেননি বেশি, তবে মোহাম্মদ মিঠুন লড়াই চালিয়েছেন, তাকে সঙ্গত করেছেন মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। তবু তাতেও পূঁজিটা খুব সাদামাটা বাংলাদেশের।

বুধবার নেপিয়ারে প্রথম ওয়ানডেতে দুনমনো না করে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মাশরাফি মর্তুজা। জুতসই রান করে লড়াইয়ের আশায় ছিলেন তিনি। কিন্তু  ব্যাটসম্যানরা অধিনায়ককে দেখিয়েছেন ভিন্ন ছবি। ৪৯তম ওভারে বাংলাদেশ অলআউট হয়েছে ২৩২ রানে। ছোট মাঠে এই লক্ষ্য বেশ সহজ স্বাগতিকদের জন্যে।

চোটে পড়ে সাকিব আল হাসান না থাকায় বাংলাদেশের একাদশ কেমন হয়, তা নিয়ে কৌতূহল ছিল। এক বিশেষজ্ঞ স্পিনারসহ চারজন নিয়মিত বোলার রেখে একাদশ সাজায় বাংলাদেশ। মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনকে আর মাশরাফিকে ধরলে মোস্তাফিজুর রহমান ছাড়া ব্যাট চালাতে জানেন একাদশের দশজনই।

তবে লম্বা ব্যাটিং লাইনআপই তো সব সমাধান এনে দেয় না। পাকা ব্যাটসম্যানরাই কন্ডিশনের মেজাজ পড়তে না পেরে থই হারালে বাকিদের আর কি করার।

ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই প্রথম আঘাত পায় বাংলাদেশ। ট্রেন্ট বোল্টের আউটস্যুয়িং টের পেয়ে ব্যাট সরাতে গিয়েও শেষ মুহূর্তে পারেননি তামিম ইকবাল। ক্যাচ যায় উইকেটের পেছনে। লিটন দাস শুরু থেকেই ছিলেন নড়বড়ে। কখনো বোল্টের ইনস্যুয়িং , কখনো হেনরির আউট স্যুয়িংয়ে ধুঁকছিলেন। ওয়ানডাউনে নেমে সৌম্য সরকারের স্বচ্ছন্দ শুরুও আত্মবিশ্বাস দেয়নি তাকে। হেনরির ইনস্যুয়িং অফ স্টাম্পের বেল ফেলে দেয় তার।

মুশফিকুর রহিমকে এক পাশে রেখে এরপর সৌম্য দেখাচ্ছিলেন দাপট। দারুণ সব ড্রাইভে বল সীমানা পার করছিলেন, হেনরিকে পুল করে ছক্কায় পাঠালেন গ্যালারিতেও। তবে এই সুখসময় বেশিক্ষণ থাকেনি বাংলাদেশের।

৪২ রানে গিয়ে বোল্টের বলে প্লেইড অন হয়ে বোল্ড হন মুশফিক। পরের ওভারেই হেনরিকে উড়াতে গিয়ে আকাশে উঠিয়ে দেন সৌম্য। ৪২ রানেই নেই ৪ উইকেট। এরপর নয় ওভার মোহাম্মদ মিঠুনের সঙ্গে টিকে থাকার সংগ্রাম করলেন মাহমদউল্লাহ। অনেক বিপদের ত্রাতার দিকে দল আরও একবার তাকিয়েছিল। কিন্তু ২৯ রানের জুটির পর ১৩ রান করা মাহমুদউল্লাহ ফেরেন দৃষ্টিকটু বাজে শটে।

অনেক সমালোচনার মধ্যে নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে প্রত্যাবর্তন ছিল সাব্বির রহমানের। এই ফেরাকে ‘দ্বিতীয় জীবন’ বলছিলেন সাব্বির। কিন্তু দ্বিতীয় জীবনের নতুন শুরুটা ভালো হয়নি তারও। দুই চারে ১৩ রান করে মিচেল স্যান্টনারের ওয়াইড বলে ক্রিজ থেকে বেরিয়ে স্টাম্পিং হন তিনি।

এরপর মিঠুনের সঙ্গে মেহেদী হাসান মিরাজের ৩৭ রানের জুটি। তাতে কিছুটাই থই খুঁজে পাচ্ছিল বাংলাদেশ। মিরাজ ২৬ রান করে নিজেকে আত্মাহুতি দিলে ফের জমা হয় নিরাশার আঁধার।

সেই আধাঁর কাটে অষ্টম উইকেটে দারুণ জুটি গড়ে তুলেন মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন আর মিঠুন। দুজনেই দেখান দৃঢ় মনোবল। দায়িত্ব নিয়ে খেলা মিঠুনের সঙ্গে কিছুটা সময় নিয়ে থিতু হয়ে সাইফুদ্দিন মেলেন ডানা। এক সময় দু’শো পেরুনোর শঙ্কা জাগা বাংলাদেশ তাদের ব্যাটেই পায় স্বস্তি। পেরিয়ে যায় দু’শো। এরপর স্লগ ওভারে রান বাড়ানোর তাড়াতেই ফেরেন সাইফুদ্দিন।

অষ্টম উইকেটে দুজনের জুটিতে আসে ৮৪ রান। ৫৮ বলে ৪১ রান করে স্যান্টনারের বলে ফেরেন সাইফুদ্দিন। মিঠুন তবু ছিলেন আস্থার ছবি হয়ে। দেখিয়েছেন নিবেদনের সর্বোচ্চ। পরিস্থিতির দাবি মিটেছে তার ব্যাটে।

তবে স্লগ ওভারে দাবি ছিল দ্রুত রান বাড়ানোর। শেষটায় তা করতে না পেরে থামতে হয় তাকে। ৯০ বলের ইনিংসে এই ডনহাতি ৫ চারে করেন ৬২ রান।

নিউজিল্যান্ডের হয়ে শুরুতে যেমন ঝাঁজ দেখান বোল্ট-হেনরি। মাঝে সেই তাল বজায় রাখেন ফার্গুসেন-স্যান্টনার। ফার্গুসেন দেখিয়েছেন তার পেসের ঝাঁজ। স্যান্টনার স্পিনে কাবু করে দমিয়ে রাখেন বাংলাদেশের যাত্রা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ৪৯.৫ ওভারে ২৩২  (তামিম ৫, লিটন ১, সৌম্য ৩০, মুশফিক ৫, মিঠুন ৬২, মাহমুদউল্লাহ ১৩, সাব্বির ১৩, মিরাজ ২৬, সাইফুদ্দিন ৪১, মাশরাফি ৯*, মোস্তাফিজ ০ ; হেনরি ২/৪৮ , বোল্ট ৩/৪০, গ্র্যান্ডহোম ০/১৯, ফার্গুসেন ২/৪৪, স্যান্টনার ৩/৪৮ , নিশাম ০/২৬)

Comments

The Daily Star  | English

Is the govt backing the wrongdoers?

BNP acting Chairman Tarique Rahman yesterday questioned whether the government is being lenient on the killers of a scrap trader in front of Mitford hospital due to what he said its silent support for such incidents of mob violence.

3h ago