লড়াইও করতে পারল না বাংলাদেশ

ছবি: এএফপি

মাঠ ছোট, উইকেট ছিল ব্যাটিংয়ের জন্য বেশ ভালো। নিজ মাঠে নিউজিল্যান্ডের পেসাররা স্যুয়িংয়ে ভুগাবেন, অনুমিত ছিল তাও। সব জেনেও ব্যাটসম্যানরা পারলেন না নিবেদন দেখাতে। শুরুতে সৌম্য সরকার, পরে দারুণ খেললেন মোহাম্মদ মিঠুন, তাকে সঙ্গ দিলেন মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। কিন্তু ওদের ব্যাটে পাওয়া সংগ্রহ যে খুব ছোট পরে তা বুঝিয়ে দিয়েছেন কিউই ব্যাটসম্যানরা। বিশেষ করে মার্টিন গাপটিল দেখিয়েছেন রান তোলা কত সহজ।

বুধবার নেপিয়ারে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে স্বাগতিকদের কাছে একদমই পাত্তা পায়নি মাশরাফি মর্তুজার দল। আগে ব্যাট করে বাংলাদেশের করা ২৩২ রান অনেকটা হেসেখেলে পেরিয়ে গেছে নিউজিল্যান্ড। ৩৩ বল হাতে রেখে জিতেছে ৮ উইকেটে। চোট সেরে দলে ফিরেই সেঞ্চুরি করে জয়ের নায়ক বনেছেন গাপটিল। ১১৬ বলে ১১৭  করে অপরাজিত ছিলেন গাপটিল। আরেক ওপেনার হেনরি নিকোলাস করেন ৫২ রান। গাপটিলের সঙ্গে খেলা শেষ করে দিয়ে আসা রস টেইলর অপরাজিত ছিলেন ৪৫ রানে।

সহজ জয়ে তিন ম্যাচ সিরিজেও ১-০ তে এগিয়ে গেল কিউইরা।

২৩৩ রানের লক্ষ্য নিউজিল্যান্ডের দুই ওপেনারই তুলে ফেলেন ১০৩ রান। চার বোলার নিয়ে নামা বাংলাদেশ ম্যাচে কখনই ধন্দে ফেলতে পারেনি স্বাগতিকদের।  মেহেদী হাসান মিরাজ আর মাহমুদউল্লাহর বলে দুই উইকেট পড়লেও তাতে তৈরি হয়নি কোন সংশয়। রস টেইলরকে নিয়ে গাপটিলই শেষ করে দেন ম্যাচ।

টস জিতে জুতসই রান পাওয়ার আশায় ব্যাটিং নেওয়া অধিনায়ককে খানিক পরেই ভুল বার্তা দেন তার ব্যাটসম্যানরা। ট্রেন্ট বোল্ট আর ম্যাট হেনরির স্যুয়িং সামলাতে না পেরে ৪২ রানেই ৪ উইকেট খুইয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় বাংলাদেশ।

শুরুর ৪২ রানের মধ্যে দাপুটে ব্যাট করে একাই ৩০ রান করেন সৌম্য। কিউই পেসের সামনে টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের কাঁপাকাঁপির মাঝে তিনি ছিলেন উজ্জ্বল ব্যতিক্রম। দেখার মতো কাভার ড্রাইভ, পুল, ফ্লিকে সৌম্য ছিলেন সাবলীল। তবে অতি উচ্চবিলাস বিপদ ডেকে আনে তার। বিপদ বাড়ে বাংলাদেশেরও।

ভীষণ বিপদে আরেকবার ত্রাতা হতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ। তবে পাঁচে নেমে সবটা আলো পরে কেড়ে নেন মোহাম্মদ মিঠুন। দৃঢ় মনোবল দেখিয়ে দলকে বাঁচান বিব্রতকর পরিস্থিতির হাত থেকে। ছোট ছোট জুটিতে দলকে এগিয়ে নেন। তবু ১৩১ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে বসে বাংলাদেশ। অষ্টম উইকেটে মিঠুন পান যোগ্য সঙ্গত। মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন তার সঙ্গে গড়েন ৮৪ রানের জুটি। অষ্টম উইকেটে বাংলাদেশের হয়ে এটিই সেরা জুটি।  এতে দু’শো পেরিয়ে যায় বাংলাদেশ।

স্লগ ওভারে রান বাড়ানোর তাড়ায় শেষ হয় দুজনেরই লড়াই। ৫৮ বলে ৪১ করে থামেন সাইফুদ্দিন। ৯০ বলে ৬২ করে শেষ হয় মিঠুনের ইনিংস। পঞ্চাশ ওভার খেলার আগেই বাংলাদেশ থেমে যায় ২৩২ রানে।

সহজ লক্ষ্যে যেমন শুরু দরকার ঠিক তেমন শুরুই এনে দেন গাপটিল আর নিকোলাস। সময় নিয়ে, দেখেশুনে শুরু করে পরে দুজনেই মেলেন ডানা। তুলে নেন ফিফটি। নিকোলাস ফিরলেও গাপটিলকে থামাতে পারেনি বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডের অন্যতম সেরা ওপেনার ছিলেন তার চেনা ছন্দে। পুরো ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিজের ইচ্ছামতো খেলা শেষ করেন তিনি।

১৬ ফেব্রুয়ারি ক্রাইশ্চার্চে সিরিজ বাঁচানোর লড়াইয়ে নামবে বাংলাদেশ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ৪৯.৫ ওভারে ২৩২  (তামিম ৫, লিটন ১, সৌম্য ৩০, মুশফিক ৫, মিঠুন ৬২, মাহমুদউল্লাহ ১৩, সাব্বির ১৩, মিরাজ ২৬, সাইফুদ্দিন ৪১, মাশরাফি ৯*, মোস্তাফিজ ০ ; হেনরি ২/৪৮ , বোল্ট ৩/৪০, গ্র্যান্ডহোম ০/১৯, ফার্গুসেন ২/৪৪, স্যান্টনার ৩/৪৮ , নিশাম ০/২৬)

নিউজিল্যান্ড: ৪৪.৩ ওভারে ২৩৩/২ (গাপটিল ১১৭*, নিকোলাস ৫৩, উইলিয়ামসন ১১, টেইলর ৪৫*   ; মাশরাফি ০/৩৩, সাইফুদ্দিন ০/৪৫ , মোস্তাফিজ ০/৩৬, মিরাজ ১/৪২, সাব্বির ০/৪১ , মাহমুদউল্লাহ  ১/২৭, সৌম্য ০/৮ )

ফল: নিউজিল্যান্ড ৮ উইকেটে জয়ী।

ম্যান অব দ্যা ম্যাচ: মার্টিন গাপটিল।

সিরিজ: তিন ম্যাচ সিরিজে নিউজিল্যান্ড ১-০ তে এগিয়ে

 

Comments

The Daily Star  | English

Big relief for BCB as media rights for Ban-Pak T20I series sold

The Bangladesh Cricket Board (BCB) heaved a sigh of relief after managing to sell its worldwide media rights for the national team's upcoming three-match home T20I series against Pakistan.

Now