সাঁওতাল পল্লীতে আগুন দেওয়া পুলিশের নাম নেই অভিযোগপত্রে, বাদ পড়েছেন সাবেক সংসদ সদস্যও

santal fire
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় সাঁওতাল পল্লীতে আগুন দিচ্ছে পুলিশ। ছবিটি ভিডিওচিত্র থেকে নেওয়া।

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় দরিদ্র সাঁওতালদের ছাপড়াঘরে আগুন দিচ্ছেন কয়েকজন পুলিশ সদস্য। সেই দৃশ্যের একটি ভিডিওচিত্র প্রচারিতও হয়েছে বিভিন্ন প্রচারমাধ্যমে। ঘরে আগুন দেওয়ার সঙ্গে তিন পুলিশ সদস্য ও স্থানীয় দুর্বৃত্তরা জড়িত ছিলো বলে সুপ্রিমকোর্টে জমা দেওয়া এক তদন্ত প্রতিবেদনে জানিয়েছিলেন গাইবান্ধার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শহিদুল্লাহর নেতৃত্বাধীন তদন্ত কমিটি। অথচ, পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্রে নেই কোনো পুলিশ সদস্যের নাম।

এমনকী, ২০১৬ সালের নভেম্বরের সেই ঘটনার প্রেক্ষিতে ২০১৭ সালের মার্চে হাইকোর্টে জমা দেওয়া পুলিশের একটি তদন্ত প্রতিবেদনে সাঁওতালদের ঘরে আগুন দেওয়ার সঙ্গে দুই পুলিশ সদস্যের সম্পৃক্ততার কথা বলা হয়েছিলো।

ঘটনার আড়াই বছরের বেশি সময় পর গতকাল (২৮ জুলাই) পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) যে অভিযোগপত্র দিয়েছে তাতে ৯০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তাতে সাপমারা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শাকিল আকন্দ বুলবুল এবং সদস্য শাহ আলমের নাম উল্লেখ থাকলেও নেই সাঁওতালদের উচ্ছেদের সময় তিন সাঁওতাল হত্যা মামলার প্রধান আসামি গাইবান্ধা-৪ আসনের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালম আজাদের নাম।

পিবিআই-এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল হাই সরকার সেই অভিযোগপত্রটি জমা দেন গোবিন্দগঞ্জ জ্যেষ্ঠ বিচারিত আদালতে।

মূল আসামিদের অভিযোগপত্রে না রাখায় সাঁওতাল জনগোষ্ঠীর প্রায় তিনশতাধিক সদস্য গতকাল বিকালে গোবিন্দগঞ্জ-দিনাজপুর আঞ্চলিক মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ জানান।

সেসময় সাহেবগঞ্জ-বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ফিলিমন বাস্কে বলেন, “প্রধান আসামি সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ ও আরো কয়েকজন যারা আগুন দিয়েছিলেন তাদের নাম নেই অভিযোগপত্রে। আমাদের ওপর তারা যারা হামলা চালিয়েছিলো তাদের ভিডিওচিত্র রয়েছে। তাই আমরা এই অভিযোগপত্র প্রত্যাখ্যান করছি।”

কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাফরুল ইসলাম বলেন, “আমাদের দায়ের করা হত্যা মামলায় প্রধান আসামি হলেন আবুল কালাম আজাদ। সেখানে ৩৩ জনের নাম উল্লেখ করা ছিলো এবং ৫০০ থেকে ৭০০ জন ছিলেন অজ্ঞাতনামা।”

পিবিআইয়ের দাখিল করা অভিযোগপত্রে কোনো আস্থা নেই উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, “তদন্ত চলাকালে আমরা হামলাকারীদের চিহ্নিত করেছিলাম। হামলার সঙ্গে জড়িত ২৫০ জনের একটি তালিকা তৈরি করেছিলাম। সেসময় তিন সাঁওতাল নিহত হন। তাদের ঘরে আগুন দেওয়া হয় এবং আমাদের ঘর লুট করা হয়।”

সংগঠনটির সাংগঠনিক সম্পাদক সুফল হেব্রোম বলেন, “সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদ হলেন মূল আসামি। তিনি তার সন্ত্রাসী বাহিনীকে আমাদের ঘরে আগুন দিতে বলেছিলেন। আমাদের উচ্ছেদ করা হয়েছে এবং আমাদের লোকদের হত্যা করা হয়েছে। তিনি এসবের মূল পরিকল্পনাকারী। কিন্তু, পুলিশ ইচ্ছা করেই তার নাম অভিযোগপত্রে আনেনি।”

সাবেক সংসদ সদস্য আজাদ ও অন্যান্য অভিযুক্তদের নাম অন্তর্ভুক্ত করে নতুন অভিযোগপত্রের দাবিও জানান সাঁওতাল নেতারা।

(সংক্ষেপিত, পুরো প্রতিবেদনটি পড়তে No policemen charge-sheeted লিংকে ক্লিক করুন)

আরো পড়ুন:

গাইবান্ধায় সাঁওতালদের ঘরে আগুনে ৩ পুলিশ ও স্থানীয়রা জড়িত

Comments

The Daily Star  | English

Govt to expedite hiring of 40,000 for public sector

The government has decided to expedite the recruitment of 6,000 doctors, 30,000 assistant primary teachers, and 3,500 nurses to urgently address the rising number of vacancies in key public sector positions.

7h ago