‘মাঠকর্মীরা ম্যাচটা ধ্বংস করে দেয়’

গত শনিবার বিকেএসপিতে বাংলাদেশ 'এ' ও আফগানিস্তান 'এ' দলের ম্যাচ বৃষ্টিতে পণ্ড হয়ে যায়। ছবি: সংগৃহিত

চারদিনের ম্যাচের সিরিজে বাংলাদেশ ‘এ’ দলকে হারানোর পর ওয়ানডে সিরিজেও এগিয়ে গিয়েছিল আফগানিস্তান ‘এ’ দল। গত শনিবার চতুর্থ ওয়ানডেতেও জেতার পথে ছিল তারা। ওই ম্যাচ জিতলে জিতে যেত সিরিজও। বৃষ্টিতে সে ম্যাচ পণ্ড হয়ে যাওয়ায় বেঁচে যায় বাংলাদেশ। পরের ম্যাচ জিতে ইমরুল কায়েসরা সিরিজ শেষ করতে পারেন ২-২ সমতায়। কিন্তু বৃষ্টিতে পণ্ড ম্যাচ নিয়েই আফগানিস্তানের তরফ থেকে উঠেছে গুরুতর অভিযোগ। মাঠকর্মীদের ‘ইচ্ছাকৃত’ গাফলতিতে আর অপেশাদার আচরণের কারণেই নাকি সেদিন আর খেলা হয়নি।

সোমবার বাংলাদেশ ছাড়ার আগে রাজধানীর এক পাঁচ তারকা হোটেলে আফগান দলটির অধিনায়ক নাসির জামাল দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে একান্ত আলাপে সেই ম্যাচ নিয়ে জানিয়েছেন নিজেদের হতাশার কথা। ম্যাচ রেফারির কাছেও লিখিত অভিযোগ করার কথা জানিয়েছেন তারা।  

সাভারের বিকেএসপিতে সেদিন সকালের বৃষ্টিতে ম্যাচ নেমে আসে ৪৪ ওভারে। বাংলাদেশ ‘এ’ দল ৪০ ওভারে গুটিয়ে যায় মাত্র ১৭৬ রানে। বৃষ্টি আরেকবার বাগড়া ডি/এল মেথডে ৪০ ওভারে আফগানদের নতুন লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৮৭। রান তাড়ায় নেমে দুই আফগান ওপেনার ৮.২ ওভারেই তুলে ফেলেন ৫৭ রান। তখনই নামে বৃষ্টি। সেই বৃষ্টি ১৫-২০ মিনিট পর থেমেও যায়। কিন্তু আর খেলা শুরু হয়নি।

নাসির অভিযোগ করেন মাঠকর্মীদের অপেশাদার আচরণে সেদিন শুরু হয়নি খেলা, হার মানতে হয় তাদের, ‘চতুর্থ ওয়ানডেতে বৃষ্টি আসার আগে সহজ জেতার পথে ছিলাম, তারা আমাদের ১৮৭ রানের লক্ষ্য দিয়েছিল। প্রথম ৮ ওভারে কোন উইকেট না হারিয়ে আমরা ৬০ রান তুলে ফেলি (আসলে ৫৭)।’

‘আমি মাঠকর্মীদের নিয়ে অসন্তুষ্ট। সেদিন বৃষ্টি খুব জোরে ছিল না। যখন বৃষ্টি থামল তারা (মাঠকর্মীরা) পেশাদারি উপায়ে কাভার সরায়নি। আমার মনে হয় তারা জানে কীভাবে সেটা সরাতে হয় কিন্তু তারা তা করেনি।’

বিশ্বস্তসূত্রে জানা গেছে, সেদিন কিউরেটর নুরুজ্জামান নয়নের অধীনে থাকা মাঠকর্মীরা কাভার সরাতে গিয়ে উলটো ৩০ গজ বৃত্তের ভেতর পানি ফেলে দেন। সে ম্যাচে মাঠে থাকা এক প্রত্যক্ষদর্শী ডেইলি স্টারকে বলেন,  ‘মাঠকর্মীরা তো সব পেশাদার। তারা তো সব জানে। কীভাবে কি করতে হয়। কীভাবে মাঠ থেকে পানি সরাতে হয়। কিন্তু সব কিছু জানা সত্ত্বেও কোন এক কোনা দিয়ে পানি পড়ে যায়। নগ্ন চোখে আমিও দেখেছি, তারাও (আফগানিস্তান) দেখেছে।’

‘১৫-২০ মিনিটের একটা বৃষ্টি হয়েছিল, হালকা বৃষ্টি। তাতে কাভারের উপর পানির যে পরিমাণ থাকে। কাভার সরানোর সময় চারপাশ থেকে উঁচু করতে হয়। উঁচু করলে হয় কি পানিটা মাঝখানে চলে যায়। মাঝখানে থেকে আস্তে আস্তে পুশ করলে ওটা মাঠের বাইরে চলে যায়। মাঠে আর পানিটা পড়ে না।’

কিন্তু মাঠকর্মীদের এমন অপেশাদার আচরণে মাঠেই পড়ে যায় কাভারের উপর জমে থাকা পানি। বৃষ্টি না থাকলেও মাঠ ভেজা থাকায় আবার খেলা শুরু করতে পারেননি দায়িত্বে থাকা দুই আম্পায়ার মাসুদুর রহমান  ও তানবির আহমেদ।

মাঠ ভেজা থাকায় বিকেল পর্যন্ত অপেক্ষা করে ম্যাচ পরিত্যক্ত ঘোষণা করেন ম্যাচ রেফারি শওকতুর রহমান। আফগান অধিনায়ক জানান, এভাবে ম্যাচ পরিত্যক্ত ঘোষণার পর তারা ম্যাচ রেফারির কাছে লিখিত অভিযোগও জানিয়েছিলেন,  ‘হ্যাঁ আমরা ম্যাচ রেফারির কাছে অভিযোগ করেছিলাম। যখন ম্যাচ রেফারি খেলা পরিত্যক্ত ঘোষণা করলেন আমি তাকে বলেছি মাঠকর্মীরা এই ম্যাচটা ধ্বংস করে দিয়েছে।’

মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে দায়িত্বে থাকা ম্যাচ রেফারি শওকতুর রহমান এই ব্যাপারে কোন মন্তব্য করতে রাজী হননি। তবে আফগান অধিনায়কের জমা দেওয়া রিপোর্টে মাঠকর্মীদের গাফলতির বিষয়টি উল্লেখ ছিল বলে জানান তিনি।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, মাঠকর্মীদের আচরণ দেখে প্রকাশ্যে নিজেদের ক্ষোভ জানিয়েছিল আফগানিস্তান, ম্যাচ পরিত্যক্ত ঘোষণার পর তাদের প্রতিক্রিয়া ছিল তীব্র। যদিও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে নিজেদের সুসম্পর্কের কথা মাথায় নিয়ে তারা আর বাড়তি উচ্চবাচ্য করেনি।

মাঠকর্মীদের এমন গাফলতি আর সফরকারী দলের অভিযোগ নিয়ে জানতে চাইলে  বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নিজামউদ্দিন চৌধুরী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘এই বিষয়টি আসলে আমার জানা নেই। যদি লিখিত কোন অভিযোগ পাই তাহলে এটি খতিয়ে দেখা হবে।’

 

Comments

The Daily Star  | English

US tariff talks: First day ends without major decision

A high-level meeting between Bangladesh and the Office of the United States Trade Representative (USTR) ended in Washington, DC, yesterday without a major decision, despite the looming expiry of a 90-day negotiation window on July 9.

7h ago