‘ডাকসুর জিএস পদে রাব্বানী, সিনেটে শোভন থাকতে পারেন না’

চাঁদাবাজির মতো নৈতিক স্খলনের অভিযোগে ছাত্রলীগ থেকে অপসারণ করা হয়েছে সংগঠনটির সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন এবং সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীকে। এমন অভিযোগের পরও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে রাব্বানী এবং সিনেট সদস্য পদে শোভন থাকতে পারেন কী না- এ বিষয়ে ডাকসুর সাবেক জিএস ডা. মুশতাক হোসেন দ্য ডেইলি স্টার অনলাইনকে বলেন, “নিশ্চয় না।”
ডাকসুর সাবেক জিএস ডা. মুশতাক হোসেন এবং বর্তমান ভিপি নুরুল হক নুর। ছবি: সংগৃহীত

চাঁদাবাজির মতো নৈতিক স্খলনের অভিযোগে ছাত্রলীগ থেকে অপসারণ করা হয়েছে সংগঠনটির সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন এবং সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীকে। এমন অভিযোগের পরও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে রাব্বানী এবং সিনেট সদস্য পদে শোভন থাকতে পারেন কী না- এ বিষয়ে ডাকসুর সাবেক জিএস ডা. মুশতাক হোসেন দ্য ডেইলি স্টার অনলাইনকে বলেন, “নিশ্চয় না।”

“তারাতো দায় দায়িত্ব স্বীকার করেই পদত্যাগ করেছে। তারাতো এটিকে চ্যালেঞ্জ করার নৈতিক সাহস পায়নি।… নৈতিক দিক থেকে একইভাবে তার (রাব্বানী) ডাকসুর দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়া উচিত।… সে আত্মপক্ষ সমর্থন করতে পারবে না। যদি পারতো তাহলে তাদের সংগঠনেই সেটা পারতো। কাজেই এধরনের একটা কেলেঙ্কারি ঘটনা থেকে ডাকসুকে মুক্ত করা উচিত।”

বিষয়টি যদি একটু ব্যাখ্যা করে বলতেন, “নৈতিক স্খলন হলে তো ছাত্রত্বই চলে যাওয়ার কথা। কোনো ছাত্র যদি পরীক্ষায় নকল করে বা ভর্তির সময় ভুয়া তথ্য দেয়- তাহলে তো ছাত্রত্ব বাতিল হয়ে যাচ্ছে। ছাত্রত্বের ওপরই তো তার ডাকসুর পদ। এই পদ তাকে স্বেচ্ছায় ছেড়ে দেওয়া উচিত। এছাড়াও, ডাকসুর কমিটি বসে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। সিনেট সদস্য শোভনের বেলাতেও একই কথা প্রযোজ্য। … নৈতিকতার স্খলন তো ছাত্র-শিক্ষক সবার জন্যে গুরুতর অপরাধ।”

ডাকসুতে এ ধরনের কোনো নজির কি আছে?- “না, ডাকসুতে এ ধরনের কোনো নজির নেই। আমার জানা মতে, ডাকসুতে কেউ কখনো অভিযুক্ত হননি। ছাত্রত্ব শেষ হওয়ার পর অনেকে অব্যাহতি নিয়েছেন।… এটা নৈতিকভাবে গুরুতর ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এখানে তার (রাব্বানী) স্বেচ্ছায় চলে যাওয়া ভালো, তা না হলে ডাকসু বডি বসে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার। সে যদি মনে করে সিনিয়র নেতারা তাকে বলবে তারপর সে পদত্যাগ করবে তাহলে তা তার জন্যে আরো খারাপ হবে।”

এ বিষয়ে ডাকসুর বর্তমান ভিপি নুরুল হক নুর দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, “দেখুন, ছাত্রলীগ একটি ছাত্র সংগঠন। তার (রাব্বানী) বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট অভিযোগ ছিলো যে চাঁদাবাজি এবং টাকার বিনিময়ে কমিটি দেওয়া- এগুলো অনৈতিক কাজ। এরকম অনৈতিক কাজের সঙ্গে জড়িত একজন ছাত্রনেতা যিনি নিজে একটি ছাত্র সংগঠন থেকে অপসারিত হয়েছেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে সারাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্যে একটি রোল মডেল।… সেখানে এরকম একজন অনৈতিক ব্যক্তি প্রতিনিধিত্ব করলে তা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্যে যেমন অসম্মানজনক, পাশাপাশি সারাদেশে এটি একটি খারাপ দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। সবাই জানবেন যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এরকম অনিয়ম করেও পার পাওয়া যায়।”

“আমার মনে হয়, শোভন যেহেতু সিনেটে রয়েছেন এবং রাব্বানী ডাকসুতে রয়েছেন- তাদের নূন্যতম ব্যক্তিত্ব থেকে থাকলে তাদের উচিত মানুষ প্রশ্ন বা তাদের পদত্যাগের দাবি তোলার আগেই পদত্যাগ করা। যদিও গতকাল কয়েকটি ছাত্র সংগঠন তাদের পদত্যাগ চেয়েছে।”

“এরকম একজন ব্যক্তির সঙ্গে ডাকসুতে কাজ করাটা আমার পক্ষেও সম্ভব নয়। যদি দ্রুত তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া হয় তাহলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রশ্নবিদ্ধ করা হবে।… যেখানে সংগঠন সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে সেখানে আমরা যদি সিদ্ধান্ত না নিতে পারি তাহলে তা খুব লজ্জাজনক-দুঃখজনক হবে।”

এ বিষয়ে ডাকসুতে কোনো কথা হয়েছে কি?- “আমি গতকাল (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বশরীরে উপাচার্য স্যারকে বলেছি এ বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়ার জন্যে। তিনি বলেছেন যে প্রয়োজনে তিনি নিজেও (ডাকসুর) গঠনতন্ত্র দেখবেন। কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া যায়, প্রয়োজনে ডাকসু বডির মিটিং ডেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

আরো পড়ুন:

উপাচার্য-ছাত্রলীগ পাল্টাপাল্টি অভিযোগ ও পক্ষ-বিপক্ষের শিক্ষক ভাবনা

আমরা ‘ন্যায্য পাওনা’ দাবি করেছিলাম: রাব্বানী

মিথ্যা বলেছে ছাত্রলীগ, ‘চ্যালেঞ্জ’ ছুড়লেন জাবি উপাচার্য

শিক্ষা নয়, জাবির আলোচনার বিষয় ‘২ কোটি টাকা’র ভাগ-বাটোয়ারা

‘২ কোটি টাকা ভাগের সংবাদে শিক্ষক হিসেবে খুব বিব্রত বোধ করি’

Comments

The Daily Star  | English
Bangladeshi-Americans eager to help build new Bangladesh

July uprising and some thoughts of Bangladeshi-Americans

NRBs gathered in New Jersey showed eagerness to assist in the journey of the new Bangladesh forward.

7h ago