ভারত-বাংলাদেশ ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড
দুই বাংলার তারকাদের মিলনমেলা বসেছিলো গতকাল (২১ অক্টোবর) রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারের নবরাত্রি মিলনায়তনে। এই মিলনায়তনে বাংলাদেশ ও ভারতের তারকাদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো প্রথমবারের মতো ভারত-বাংলাদেশ ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড।
ব্যাপক তারকার উপস্থিতির মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠিত হয় এই অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠান। সঙ্গে ছিলো জমকালো পারফরমেন্স।
বাংলাদেশের গুণী অভিনেত্রী আনোয়ারাকে দেওয়া হয় আজীবন সম্মাননা পুরস্কার। ভারতীয় শিল্পী রণজিৎ মল্লিকও আজীবন সম্মাননা পান।
আনোয়ারা এই পুরস্কার গ্রহণ করার পর বলেন, “এই পুরস্কার বাংলাদেশের সকল চলচ্চিত্রের মানুষদের।”
ফিল্ম ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ার আয়োজনে এই ধরণের উদ্যোগ এবারই প্রথম।
পপুলার, টেকনিক্যাল ও রিজিওনাল- এই তিন ক্যাটাগরিতে বিভিন্ন বিভাগে পুরস্কার দেওয়া হয়।
গতকাল রাতের অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের দেবী এবং ভারতের নগর কীর্তন বেস্ট ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড পায়।
বেস্ট লিড অ্যাকট্রেস পায় বাংলাদেশের জয়া আহসান ও ভারতের পাওলি দাম। বেস্ট অ্যাকটর লিড রোল পুরস্কার জিতে নেন বাংলাদেশের সিয়াম ও ভারতের প্রসেনজিৎ।
পপুলার অ্যাকটর অব দ্য ইয়ার পুরস্কার জিতে নেন বাংলাদেশের শাকিব খান ও ভারতের প্রসেনজিৎ।
বর্ণাঢ্য এই পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, “আমাদের ভাষা, সংস্কৃতি, জলবায়ু কিন্তু একই। আমরা একই ভাষায় কথা বলি। আমাদের মধ্যে এই ধরণের সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান, আমাদের সাংস্কৃতিক বন্ধনকে শক্ত করবে।”
কলকাতার জনপ্রিয় নির্মাতা গৌতম ঘোষ বলেন, “সিনেমা যে কাজটি করতে পারে, তা হলো আমাদের স্মৃতিমালাকে একত্রিত করতে পারে।”
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে জুরি বোর্ডের সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের হয়ে আলমগীর, কবরী, ইমদাদুল হক মিলন, খোরশেদ আলম খসরু, হাসিবুর রেজা কল্লোল। ভারতের হয়ে জুরি বোর্ডের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন গৌতম ঘোষ, গৌতম ভট্টাচার্য, অঞ্জন বোস, তনুশ্রী চক্রবর্তী।
আরও যারা পুরস্কার জিতে নেন তারা হলেন- স্ক্রিপ্ট রাইটার-এ বাংলাদেশের ফেরারী ফরহাদ, ভারতের পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। বেস্ট সিনেমাটোগ্রাফার পুরস্কার পান বাংলাদেশের কামরুল হাসান খসরু, ভারতের সৃজিত মুখার্জি।
বেস্ট ভিডিও এডিটর হিসেবে পুরস্কার পান বাংলাদেশের তৌহিদ হোসেন চৌধুরী ও ভারতের সংলাপ ভৌমিক। বেস্ট মিউজিক ডিরেক্টরের পুরস্কার পান বাংলাদেশের হৃদয় খান এবং ভারতের বিক্রম ঘোষ।
বেস্ট প্লেব্যাক সিঙ্গার পুরস্কার পান (পুরুষ) বাংলাদেশের ইমরান, ভারতের অনির্বাণ ভট্টাচার্য। বেস্ট প্লেব্যাক সিঙ্গার (নারী) পুরস্কার পান যৌথভাবে বাংলাদেশের সোমনুর মনির কোনাল এবং ফাতেমা তুজ জোহরা ঐশী। ভারতের হয়ে পুরস্কার দেওয়া হয় নিকিতা নন্দীকে।
বেস্ট পার্শ্বচরিত্র অভিনেতার পুরস্কার জিতে নেন বাংলাদেশের ইমন এবং ভারতের অর্জুন চক্রবর্তী।
বেস্ট পার্শ্বচরিত্রাভিনেত্রীর পুরস্কার জিতে নেন বাংলাদেশের জাকিয়া বারী মম, ভারতের সুদীপ্তা চক্রবর্তী।
বিশেষ জুরি অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন বাংলাদেশের তাসকিন রহমান, বিদ্যা সিনহা মিম, ভারতের রুদ্র নীল রায় ঘোষ, আবীর চ্যাটার্জি, নবনী। শ্রেষ্ঠ পরিচালক এর পুরস্কার জিতে নেন বাংলাদেশের পক্ষে নাসিরউদ্দিন ইউসুফ ও ভারতের সৃজিত মুখার্জি। জনপ্রিয় চলচ্চিত্রের পুরস্কার জিতে নেয় বাংলাদেশের পাসওয়ার্ড ও ভারতের বোমকেশ গোত্র।
পুরস্কার প্রদানের ফাঁকে ফাঁকে ছিলো নাচ ও গান পরিবেশনা। বাংলাদেশ ও ভারতের শিল্পীরা অনুষ্ঠানে পারফরমেন্স করেন।
অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন ভারতের পক্ষে মীর আফসার আলী এবং বাংলাদেশের পক্ষে শাহরিয়ার নাজিম জয়।
বাংলাদেশ ও ভারতের চলচ্চিত্রের মানুষদের সম্মানিত করতে টিএম ফিল্মস নিবেদিত ভারত বাংলাদেশ ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড প্রদানের মধ্যে দিয়ে ভারত ও বাংলাদেশের সিনেমা জগতের তারকারা উপস্থিত হয়েছিলেন এক মঞ্চে।
Comments