‘জয়া আপার শিডিউল পেলেই সিনেমাটি শুরু করতে চাই’

Humayun Sadhu
অভিনেতা-নির্মাতা হুমায়ূন সাধু। ছবি: সংগৃহীত

অভিনেতা-নির্মাতা হুমায়ূন সাধুকে কাছ থেকে দেখা বেশ আগে। তবে, এবছরের একুশে বই মেলায় তার সঙ্গে বেশ কয়েকদিন দেখা হয় আমার। কথাও হয়। আমাকে তিনি চায়ের দাওয়াত দেন। একেবারেই হাসিখুশি ও প্রাণখোলা একজন মানুষ ছিলেন তিনি।

বই মেলার সময়ে আরেকটি ঘটনা মনে পড়ছে। দ্য ডেইলি স্টার এ তার সাক্ষাৎকার করা হবে। একদিন এলেন। বেশ গল্প হলো। তারপর বই মেলায় যাই দুজনে। ফার্মগেট থেকে রিকশা করে টিএসসি। দীর্ঘ যানজট ঠেলে যাই আমরা। যেতে যেতে সাধু ভাই কতো গল্প করেন!

তার স্বপ্নের কথা শুনি বই মেলায় যেতে যেতে। একটি সিনেমা বানানোর স্বপ্ন ছিলো তার। গল্প করতে করতে বলেছিলেন, “প্রযোজক পেয়েছি, জয়া আপার শিডিউল পেলেই সিনেমাটি শুরু করতে চাই, আমি চাই জয়া আপা সিনেমাটি করুক।”

একেবারেই স্বপ্নবাজ একজন মানুষ ছিলেন হুমায়ুন সাধু। বই মেলায় আরেকদিন দেখা হয়ে যায়। প্রবেশপথ দিয়ে ঢুকতে গিয়ে দেখা হয়। হাসিমুখে বলেন, “ভাই কেমন আছেন?” আমিও বলি, “আপনার বই কেমন চলছে সাধু ভাই?” বললেন, “বেশ ভালোই চলছে।”

আরেকদিন বই মেলায় চা খাওয়ার সময়ে দেখা হয়ে যায়। দূর থেকে হাত নাড়েন। একটু পর কাছে আসেন। আমি বলি, “সিনেমা বানানোর নিউজটি আমাকে দিয়েন, সবার আগে ছাপাতে চাই।”

সাধু ভাই বলেছিলেন, “অবশ্যই জানাবো।”

সাধু ভাই, আপনার সিনেমা বানানো হলো না! আপনি এত দ্রুত চলে গেলেন?

‘উন-মানুষ’ নাটকটি দেখে আপনার অভিনয়ের ভক্ত হয়ে গিয়েছিলাম। আজও আপনার ভক্ত আছি। আপনাকে খুব ভালোবাসি, ভাই। আকাশের ঠিকানায় ভালো থাকুন।

সাধু ভাইকে নিয়ে কতো কথা আজ মনে পড়ছে। বই মেলায় রিকশায় প্রথমদিন দুজনে যাওয়ার সময় তিনি আমাকে তার কষ্টের গল্প বলেছিলেন। চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় এসে কী কষ্টই না করেছেন তিনি। নানা জায়গায় ভবঘুরের জীবনযাপন করেছেন। কখনো না খেয়েও থেকেছেন। তার কষ্টের গল্প শুনতে শুনতে চোখ ভিজে উঠবে যে কারো। আমারও সেদিন চোখ ভিজে উঠেছিলো।

সাধু ভাই, আপনি আর কাউকে গল্প বলবেন না, তাই না! নাটকও বানাবেন না! অভিনয়ও করবেন না! সিনেমা বানানোর জন্য রাত জেগে স্ক্রিপ্টও লিখবেন না!

স্বপ্নরা এভাবেই বুঝি থেমে যায় সাধু ভাই! তবুও তো ‘উন-মানুষ’ নাটকে আপনাকে খোঁজে পাবো, ‘চিকন পিনের চার্জার’ এ আপনাকে খোঁজে পাবো, ‘নোনাই’ উপন্যাসের পাতায় পাতায় আপনাকে খোঁজে নেবো।

আরও পড়ুন:

অভিনেতা-নির্মাতা হুমায়ূন সাধু আর নেই

Comments

The Daily Star  | English

First day of tariff talks ends without major decision

A high-level meeting between Bangladesh and the Office of the United States Trade Representative (USTR) ended in Washington yesterday without a major decision, despite the looming expiry of a 90-day negotiation window on July 9.

14m ago